খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

বিধ্বংসী সেঞ্চুরিতে রেকর্ডবুকে তানজিদ তামিম

ক্রীড়া প্রতিবেদক

৯৯ রানের পর জেসন হোল্ডারের বলটা একটু সাবধানী হয়েই খেলেন তানজিদ তামিম। রান নিতে গিয়েও থমকে যান। পরের বলে আর আটকাতে হলো না। পেয়েই গেলেন বিপিএলে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এটিই এই তরুণের প্রথম শতক। সবমিলিয়ে বিপিএলের ইতিহাসে বাংলাদেশিদের মাঝে তৃতীয় সর্বোচ্চ স্কোর এটি। তার বিস্ফোরক সেঞ্চুরিতে চট্টগ্রাম পেয়েছে ১৯২ রানের বড় স্কোর।

ইনিংসের শুরু থেকেই আজ বিধ্বংসী ছিলেন চট্টগ্রামের ওপেনার। ৭ চার আর ৭ ছয়ে ৫৮ বলে পেলেন সেঞ্চুরি। চলতি বিপিএলে এটি তৃতীয় শতক। দেশীয়দের মধ্যে এটি দ্বিতীয়। সেঞ্চুরি করেই অবশ্য থামেননি তামিম। নিজের ইনিংসকে টেনে নিয়েছেন ১১৬ পর্যন্ত। এবারের বিপিএলে এটি ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস।

তানজিদ তামিমের এই সেঞ্চুরি গড়েছে বেশকিছু রেকর্ড

সামগ্রিকভাবে বিপিএলে এটি ৫ম সর্বোচ্চ স্কোর। সমান ১১৬ রানের ইনিংস খেলেছেন আরও দুজন। ক্রিস গেইল ও লেন্ডন সিমন্সের আছে ১১৬ রানের ইনিংস।

সামগ্রিকভাবে বিপিএলে এটি দেশীয়দের মাঝে তৃতীয় সর্বোচ্চ স্কোর। সবার ওপরে আছে তামিম ইকবালের অপরাজিত ১৪১ রানের ইনিংস। এরপরে আছে সাব্বির রহমানের ১২২ রান।

চলতি বিপিএলে এটি সর্বোচ্চ স্কোর। ছাড়িয়ে গিয়েছেন উইল জ্যাকস ও তাওহিদ হৃদয়ের ১০৮ রানের ইনিংস।
বিপিএলে চট্টগ্রামের মাঠে এটিই ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোর।

ডু অর ডাই ম্যাচে চট্টগ্রামের অধিনায়ক শুভাগত হোম টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন। চট্টগ্রামের জার্সিতে ডেব্যু হয় মোহাম্মদ ওয়াসিমের। তবে তিনি দ্রুত আউট হয়ে যান। এরপর ইনিংস গড়ার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন তানজিদ তামিম। ৬৫ বলে ১১৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে গড়েছেন বিশাল স্কোর। তার নিজের ক্যারিয়ারের অসাধারণ এ ইনিংস সাজিয়েছেন ৮ ছয় আর ৮ চারে।

তানজিদ যখন আউট হন, ততক্ষণে চট্টগ্রামের স্কোরবোর্ডে জমা হয়ে গেছে ১৭০ রান।

তামিম আজ চড়াও হন প্রায় সবার ওপরেই। কোনোভাবেই তাকে আটকানোর রাস্তা পাননি খুলনার বোলাররা। প্রথম ১০ বলে ১০ রান করা তামিম সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধ্বংসাত্মক হয়ে ওঠেন। ঝড়টা বেশি দেখেছেন মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ ও আরিফ আহমেদ। তৃতীয় উইকেট জুটিতে টম ব্রুসের সঙ্গে ৬১ বলে করেন ১১০ রানের পার্টনারশিপ। শেষ পর্যন্ত তাকে থামিয়েছেন ওয়েইন পার্নেল।

ইয়র্কার লেন্থের বলটা স্ট্যাম্পে আঘাত করার পর স্বয়ং পার্নেলই তামিমকে অভিবাদন জানান।

সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল, মুস্তাফিজুর রহমানও টি-টোয়েন্টির নতুন ধারণা ‘ইম্প্যাক্ট’ শব্দের কাছাকাছি পারফর্ম করার চেষ্টায় ছিলেন। যদিও ঠিক ফিজসুলভ বোলিং ফিগারের দেখা মিলছিল না। তবে পুরোপুরি সুস্থ ও ফিট অবস্থায় তার বোলিং দেখাও কম কিছু নয়। ঠিক এরই মাঝে অনুশীলনে ফিজ মাথায় বলের আঘাত পেয়ে সেই ছন্দে ব্যাঘাত ঘটে। চোটগ্রস্ত এই পেসারের সুস্থতা কামনায় বার্তা পাঠিয়েছে আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি চেন্নাই সুপার কিংস।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পেজে আজ (মঙ্গলবার) দলটি টাইগার পেসারের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছে। মুস্তাফিজের ছবি দিয়ে তারা ক্যাপশনে লিখেছে, ‘স্পিডি রিকভারি ফিজ, দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠো।’

এর আগে ১৯ ডিসেম্বর দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত আইপিএলের মিনি নিলামে ২ কোটি রুপিতে ২৮ বছর বয়সী পেসারকে কিনে নেয় চেন্নাই। এরপর তাকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বেশ সরব ছিল দলটি। সর্বশেষ তার চোট নিয়ে তারা বার্তা পাঠিয়েছে। ফিজকে দলে নেওয়ার কারণ নিয়ে এর আগে চেন্নাইয়ের নির্বাহী কেএস বিশ্বনাথন জানিয়েছিলেন, ‘আমি বলব যে যাদেরকে নেওয়ার লক্ষ্য আমাদের ছিল, তাদের প্রায় সবাইকেই পেয়েছি। সত্যি বলতে, মিচেলকে (নিউজিল্যান্ডের ড্যারিল মিচেল) নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা ছিল। আমাদের আরও মনে হয়েছে, মাঠের দুই পাশের সীমানা বিবেচনায় নিয়ে চিপকের উইকেটে মুস্তাফিজ ভালো একটি পছন্দ হতে পারে।’

এদিকে, দুদিন চট্টগ্রামের ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ ছাড়পত্র পেয়ে ঢাকায় কুমিল্লার টিম হোটেলে যোগ দিয়েছেন মুস্তাফিজ। এ নিয়ে কুমিল্লার ফিজিও এসএম জাহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, গতকাল (সোমবার) রাতে মুস্তাফিজের সিটি স্ক্যান করার পর নিউরো সার্জন ও বিসিবি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে। এরপর তাকে হাসপাতাল ছেড়ে ঢাকার টিম হোটেলে যোগদানের ছাড়পত্র দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে তিনি সেখানে পৌঁছেও গেছেন। মুস্তাফিজের চোটের জায়গা পরিস্কার ও পুনর্বাসনে রয়েছে। আগামী ৩ দিন তার মাথায় ড্রেসিং করানো হবে। এরপর পুনরায় ২৩ ফেব্রুয়ারি নিউরো সার্জনরা তার চোট পর্যবেক্ষণ করবেন।

এর আগে রোববার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুশীলন করার সময় ওই ঘটনা ঘটে। মূলত মাথার পেছনের সাইডে বল লেগেছে মুস্তাফিজের। বিদেশি সতীর্থ ম্যাথু ফোর্ড যখন ব্যাট করছিলেন, তখন তিনি বোলিং সাইডে ছিলেন। হঠাৎই বল উড়ে গিয়ে ফিজের মাথায় আঘাত করে। রক্তাক্ত অবস্থায় মুস্তাফিজকে স্ট্রেচারে শুইয়ে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয়। পরে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয় চট্টগ্রামের ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে।

সেখানে দু’দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর মুস্তাফিজকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি ঠিক কবে নাগাদ পুনরায় মাঠে ফিরবেন সেটি এখনই বলা যাচ্ছে না। এর আগে প্লে-অফে মুস্তাফিজ খেলতে পারবেন কি না এ নিয়ে বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী জানিয়েছিলেন, ‘আমরা ছাড়পত্রটা আগে পাই, যদি দেয় তাহলে তো মাথায় আর সমস্যা নেই। সমস্যা হচ্ছে সেলাই সেটা শুকাতে তো কয়েকদিন সময় লাগবে। সব মিলিয়ে ৪/৫ দিন লাগতে পারে।’

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!