ফোটে যে ফুল আঁধার রাতে/ঝরে ধুলায় ভোর বেলাতে/আমায় তারা ডাকে সাথে-আয় রে আয়/সজল করুণ নয়ন তোলো, দাও বিদায়…। গানে গানে কথাগুলো বলেছিলেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। সব বিদায়ের সঙ্গেই লুকিয়ে আছে এমন আনন্দ-বেদনার কাব্য। সেটা বর্ষ বিদায়ের বেলায়ও।
মহাকালে বিলীন আরও একটি বছর। বিদায় ঘটনাবহুল ২০২০। ঘড়ির কাঁটা রাত ১২টার ঘর স্পর্শ করতেই শুরু হবে যথারীতি নতুন বছর। স্বাগতম ২০২১। ২০২১ সালে বাংলাদেশ যেনো করোনা মুক্ত হয় এই প্রত্যাশা সকলেরই। নতুন বছরে নতুন স্বপ্ন বুকে নিয়ে এগিয়ে যাবে বিশ্বের অন্যান্য জাতির মতো বাঙালিরাও। রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, খেলাধুলা নানা ক্ষেত্রে দেশ এগিয়ে যাবে-এমন প্রত্যাশা দেশের সব মানুষের।
আমাদের জীবনের সব কর্মকাণ্ড ইংরেজি সালের গণনায় হয় বিধায় খ্রিস্টীয় বছর অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রভাব, রাজনৈতিক কর্মকান্ড, সড়ক দুর্ঘটনা, ধর্ষণের প্রতিবাদে সরব ছিল সারাদেশ, আগুনের বিভীষিকা, মাদক-দুর্নীতিবিরোধী অভিযান, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বাজার সিণ্ডিকেট, মশার উৎপাত, বায়ু ও পরিবেশ দূষণসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ২০২০ সাল ছিল ঘটনাবহুল।
বছরটি যেমন বেদনার ছিল, তেমনই প্রাপ্তিরও। বছরটি মুজিব শতবর্ষের নানা আয়োজন থাকলেও করোনা মহামারীর প্রভাবে সামাজিক দূরত্ব মেনে সীমিত কর্মসূচি পালন করা হয়। বিদায়ী বছরের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তিটা হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সবগুলো স্প্যান বসানো এবং পূরো সেতুটি দৃশ্যমান হওয়া। এ বছরে তেমনই করোনা মহামারির প্রভাব আনন্দময় বছরটিকে মানুষের মাঝে বেদনা এনে দিয়েছে।এই মহামারীর কবলে প্রতিদিনই কারো না কারো আত্মীয়-স্বজনকে হারাতে হয়েছে।
নতুন বছর ২০২১ বাংলাদেশের মানুষের জন্য নতুন স্বপ্ন বয়ে নিয়ে এসেছে। সবাই আশা করছেন, প্রার্থনা করছেন যেনো করোনা মহামারীর বিদায় হয়। বছরের শুরুতেই করোনার টিকা আসছে দেশে এমন সুখবর আগে-ভাগেই্ জানানো হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। যে কারণে নতুন বছরে করোনামুক্ত দেশ হবে এমন স্বপ্ন সকলের মধ্য বইছে। পেছনে ফেলে আসা দুঃখ-কষ্ট ভুলে নতুন করে এগিয়ে যেতে চান সব শ্রেণী-পেশার মানুষ। চান সাফল্য, স্বস্তি। শুভ নববর্ষ। স্বাগতম ২০২১ খ্রিস্টাব্দ।
খুলনা গেজেট/এমএম