মৌলভীবাজারের বড়লেখা সীমান্তে বিজিবির সতর্কাবস্থান ও টহল জোরদারের মধ্যেও বিএসএফের অবৈধ বাংলাদেশি নাগরিকদের পুশইন থেমে নেই। শুক্রবার রাত থেকে বিজিবি সীমান্তে টহল জোরদার করে। বিভিন্ন সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহনে তল্লাশি চালায়।
নিরাপত্তা জোরদারের মাত্র চার দিন কোনো নাগরিককে পুশইন না করলেও বুধবার (১৪ মে) ভোর রাতে ৪৪ জনকে পুশইন করেছে বিএসএফ। সকাল ৬টার দিকে উপজেলার উত্তর শাহবাজপুরের পাল্লাথল সীমান্ত অতিক্রম করে শাহবাজপুর বাজারে প্রবেশের প্রাক্কালে স্থানীয় জনতা ও ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় বিজিবি ৪৪ জন বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করেছে।
স্থানীয় শাহবাজপুর আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে আটক রেখে তাদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ ও তা যাচাই-বাছাই করছে বিজিবি।
এর আগে গত ৬ ও ৭ মে শতাধিক মানুষকে বিএসএফ ঠেলে পাঠালেও বিজিবি ৫৯ জনকে আটক করে। বিজিবি তাদের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে থানায় সোপর্দ করে। পরে বড়লেখা থানা পুলিশ তাদের পরিবারের জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেয়। এরপর পুশইন ঠেকাতে বড়লেখা সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে বিজিবি; কিন্তু বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে ফের অবৈধভাবে ৪৪ জনকে সীমান্ত রেখা অতিক্রম করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরে পাঠিয়ে দিয়েছে বিএসএফ।
জানা গেছে, বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর সীমান্ত এলাকা দিয়ে বুধবার ভোর রাতে বিএসএফ ৪৪ জন অবৈধ বাংলাদেশি নাগরিককে পুশইন করেছে। এদের মধ্যে ১৩ জন পুরুষ, ১৮ জন মহিলা, ৭ জন ছেলে শিশু ও ৬ জন মেয়ে শিশু। এরা সীমান্ত অতিক্রম করে নিজের এলাকায় যেতে শাহবাজপুর-পাল্লাথল চা বাগান রাস্তা হয়ে শাহবাজপুর বাজারের উদ্দেশে রওনা দেয়।
সকাল ৬টার দিকে বাজারে প্রবেশের সময় স্থানীয় জনতা ও ইউপি চেয়ারম্যানের সহায়তায় বিজিবি তাদের আটক করে শাহবাজপুর আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়ে যায়।
আটককৃতরা জানিয়েছেন, তারা কাজের জন্য অবৈধভাবে ভারতে গিয়েছিলেন। সম্প্রতি ভারতীয় পুলিশ তাদের আটক করে বিএসএফের হাতে তুলে দেয়। বিএসএফ সীমানা পার করে বাংলাদেশ অংশে পাঠিয়ে দিয়েছে। সীমান্তের ওপারে বিএসএফ আরও মানুষকে আটক করে রেখেছে। তাদেরও অবৈধভাবে পাঠানোর প্রক্রিয়া চালাচ্ছে।
বড়লেখার উত্তর শাহবাজপুর ইউপির চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন আহমদ জানান, বুধবার ভোরে আরও ৪৪ জনকে বিএসএফ বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। স্থানীয়ভাবে খবর পেয়ে বিজিবি তাদের আটক করেছে। আটককৃতরা বাংলাদেশি নাগরিক।
বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মেহেদী হাসান জানান, আটককৃতরা বাংলাদেশি নাগরিক তা নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের নাম-ঠিকানা যাচাই-বাছাই শেষে পরবর্তী আইনি কার্যক্রমের জন্য থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
খুলনা গেজেট/এমএনএস