একতরফা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে ও সরকার পতনের দাবিতে বিরোধী জোটের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল শুরু হয়েছে। রোবারর (১৯ নভেম্বর) সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) ভোর ৬টা পর্যন্ত সারাদেশে সর্বাত্মক এই হরতাল কর্মসূচি চলবে।
বিএনপির এই কর্মসূচিতে সমর্থন জানিয়ে পৃথকভাবে হরতাল পালনের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ যুগপৎ আন্দোলনের শরিক গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদ, লেবার পার্টি, এলডিপি।
এদিকে বিএনপির ডাকা দুই দিনের হরতালের আগের রাতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আটটি গাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, শনিবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে ঢাকার কাফরুলে বিহঙ্গ পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এ সময় এক কিশোরকে আটক করার কথা জানিয়েছে পুলিশ। রাত পৌনে আটটার দিকে গুলিস্তান টোলপ্লাজার সামনে কমল পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, রাত ৯টায় চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে একটি বাসে, পৌনে ১০টায় জয়পুরহাটে একটি পিকআপ ভ্যানে, রাত সাড়ে ১০টার দিকে নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় আরেকটি পিকআপ ভ্যানে, রাত সাড়ে ১১টায় কুমিল্লায় একটি বাসে, রাত পৌনে ১২টার দিকে ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে আরেকটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। এ ছাড়া গত রাত ১২টার দিকে মিরপুরের কালশীতে আরেকটি বাসে দুর্বৃত্তরা আগুন দেয় বলে ফায়ার সার্ভিস জানায়।
হরতালকে কেন্দ্র করে শনিবার (১৮ নভেম্বর) রাতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাত্রীবাহী বাস, ট্রেন ও পিকআপ ভ্যানে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। হরতালের সমর্থনে বিভিন্ন স্থানে মশাল মিছিল করেছেন বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি।
গত ২৮ অক্টোবর ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ পুলিশ পণ্ড করে দেওয়ার পর সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবিতে বিএনপিসহ সমমনা জোটগুলো ২৯ অক্টোবর সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করে। এরপর পাঁচ দফায় ১১ দিন পর্যায়ক্রমে সারা দেশে অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। যা শেষ হয় গত শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) ভোরে।