প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপির দুটি গুণ আছে। একটি হলো ভোট চুরি, অপরটি মানুষ খুন। ২০১৪ সালে বিএনপি ক্ষমতায় না যেতে পেরে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে। তিন হাজারের বেশি মানুষ তখন আহত হয়েছে। ৫০০ এর বেশি মানুষ মারা গেছে। অনেক গাড়িতে আগুন দিয়েছে তারা।’
আজ রোববার বিকেলে পলোগ্রাউন্ড মাঠে চট্টগ্রাম মহানগর এবং উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।
১০ ডিসেম্বর বিএনপির খুব প্রিয় তারিখ, এজন্যই তারা ওইদিন ঢাকায় সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, ১০ ডিসেম্বর নাকি তারা ঢাকা অচল করে দেবে। ১০ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে এ দেশে বুদ্ধিজীবীদের হত্যার মিশন শুরু হয়েছিল। ১০ ডিসেম্বর সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেনসহ বেশ কয়েকজন বুদ্ধিজীবীকে পাকিস্তানিরা ধরে নিয়ে যায়। পরে তাদের হত্যা করা হয়। অর্থাৎ এই দিনে বুদ্ধিজীবী হত্যার মিশন শুরু হয়। এ কারণেই এই তারিখ বিএনপির এত প্রিয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৯৬ সালে খালেদা জিয়া ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছিল, ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছিল বলেই জনগণ তাকে মেনে নেয়নি। ভোট চুরি করলে জনগণ মেনে নেয় না। ওরা ভোট চুরি করেই ক্ষমতায় আসতে চায়। গণতান্ত্রিক ধারা তারা পছন্দ করে না। গণতন্ত্র আছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বিজয়ের মাসে আমি আপনাদের জন্য উপহার নিয়ে এসেছি। ২৯টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বিজয়ের মাসে এগুলো চট্টগ্রামবাসীর জন্য আমার উপহার।
এ সময় চট্টগ্রামে প্রয়াত আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের স্মরণ করে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২১ আগস্ট আমাদের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। হামলায় আইভি রহমানসহ আমাদের ২২ জন নেতাকর্মী মারা যান। আমাকে আমার নেতাকর্মীরা মানবঢাল তৈরি করে রক্ষা করেন। আমিও সেদিন মারা যেতে পারতাম। নেতকর্মীরা আমাকে বাঁচিয়েছেন।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ারা পারে মানুষ হত্যা করতে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানিরা মানুষ হত্যা করেছিল, এজন্যই পাকিস্তানি দোসর বিএনপি-জামায়াত মিলে মানুষ হত্যা করেছে। বাসে আগুন, লঞ্চে আগুন দিয়ে তারা মানুষ হত্যা করেছে। চারিদিকে অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়েছে তারা, তিন হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন, অনেকে আহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে এতটুকু মনুষ্যত্ব আছে, তারে এভাবে মানুষ হত্যা করতে পারে? বিএনপির দুটি গুণ, মানুষ হত্যা আর ভোট চুরি। এজন্য তারা ভোট চায় না। আওয়ামী লীগ জনগণের জন্য কাজ করে। আওয়ামী লীগ আসলে দেশে উন্নতি হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসেই কীভাবে মানুষ খুন করেছে আপনারা দেখেছেন। চট্টগ্রামে এমন নেতাকর্মী নেই যাদের ওপর হামলা করেনি। তাদের হাত থেকে কেউ রেহাই পায়নি।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভাকে ঘিরে মিছিলের নগরীতে রূপ নেয় চট্টগ্রাম। স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে বন্দরনগরী। নেতাকর্মীদের গায়ে ছবি সম্বলিত নানা রঙয়ের গেঞ্জিতে পুরো জনসভাস্থল রঙিন হয়ে ওঠে। এছাড়া পলোগ্রাউন্ড মাঠের আশপাশ ছেয়ে যায় ব্যানার আর পোস্টারে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রামের ভাটিয়ারীর বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে (বিএমএ) পৌঁছান। সেখানে ৮৩তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ পরিদর্শনের জন্য মিলিটারি একাডেমিতে যান তিনি। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। এরপর তিনি চট্টগ্রাম নগরের পলোগ্রাউন্ড মাঠে দুপুর ৩টার দিকে জনসভায় যোগ দেন।