বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী শুক্রবার (০১ সেপ্টেম্বর) । ১৯৭৮ সালের এই দিনে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাত ধরে জন্ম হয় দেশের অন্যতম বৃহৎ এই রাজনৈতিক দলটির। প্রতিষ্ঠার পটভূমি: শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল প্রতিষ্ঠার আগে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়ে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট গঠন করেছিলেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচন এগিয়ে এলে তিনি বিএনপি গঠন করেন। রাষ্ট্রপতি জিয়া এই দলের প্রথম চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ছিলেন প্রথম মহাসচিব। অর্থনৈতিক উন্নয়ন, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে জাতীয় ঐক্য এবং জনগণের মধ্যে স্বনির্ভরতার স্বপ্ন জাগিয়ে তোলাই ছিল জিয়াউর রহমানের মূলমন্ত্র। এর ফলে দলটি প্রতিষ্ঠার অল্প সময়ের মধ্যেই অভূতপূর্ব সাফল্য পায়।
জিয়াউর রহমান স্বল্প সময়ের অক্লান্ত কর্মের মধ্য দিয়ে ছড়িয়ে পড়েন পুরো বাংলাদেশে। জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সাথে ইসলামী মূল্যবোধের মিশ্রণ তার দলকে আরো জনপ্রিয় করে তোলে। তার ঘোষিত ১৯দফাকে দল ও সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে ‘রাজনৈতিক দর্শন’ হিসেবেই আখ্যায়িত করা হয়। ১৯৮১ সালের ৩০ মে বিপথগামী কিছু সেনাসদস্যের হাতে জিয়াউর রহমান শাহাদতবরণের কিছু পর বিএনপির রাজনীতিতে উত্থান ঘটে বেগম খালেদা জিয়ার। ১৯৮৩ সালের ১ এপ্রিল বিএনপির বর্ধিত সাধারণ সভা থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে দলের ভাইস চেয়ারম্যান মনোনীত করা হয়। এরপর ১৯৮৪ বেগম খালেদা জিয়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন এবং বিএনপিতে নতুন প্রাণের সৃষ্টি হয়। নেতাকর্মীরা নতুন আশার আলোয় আবারো রাজপথে নেমে আসেন। এরপর খালেদা জিয়ার ওপর নানাবিধ হুমকি আসতে থাকে, চক্রান্ত চলতে থাকে তাকে ব্যর্থ করে দেওয়ার। কিন্তু অকুতোভয়, সাহসী, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ও গণতন্ত্রের পথে পথ চলতে আপসহীন ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে একলা এগিয়ে চলেন খালেদা জিয়া। এ সময় আন্দোলন করে অসহনীয় জুলুম নির্যাতন সহ্য করেন এবং ‘গণআন্দোলন’ সংগঠিত করেন।
১৯৯০ সালে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতনের একদফা আন্দোলনের ডাকে দেশের মানুষ রাজপথে নেমে আসে। ফলে এরশাদ ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন। খালেদা জিয়ার গণআন্দোলন সফল হয়, দেশে ফিরে আসে গণতন্ত্র। সে সময় খালেদা জিয়ার আপসহীন নেতৃত্বের কারণে দেশবাসীর মাঝে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা তৈরি হয় এবং তিনি ‘দেশনেত্রী’ আখ্যায়িত হন। ১৯৯১ সাধারণ নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়ার আপসহীন নেতৃত্বে গণতন্ত্রের বিজয়ের ফলে ১৯৯১ সালের সাধারণ নির্বাচনে বিএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন লাভ করে এককভাবে সরকার গঠন করে। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
দুই দিনের কর্মসূচি: বিএনপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি দুইদিনের কর্মসুচি গ্রহন করেছে। প্রথম দিনের কর্মসুচিতে আজ ১ সেপ্টেম্বর সুর্যোদয়ের সাথে সাথে মহানগর বিএনপি কার্যালয়সহ জেলা ও মহানগরীর সকল দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, আলোকসজ্জা, সকাল সাড়ে দশটায় দলীয় কার্যালয়ে শহীদ জিয়া, আরাফাত রহমান কোকো সহ বিএনপি প্রতিষ্ঠা থেকে এখন পর্যন্ত যে সমস্ত নেতাকর্মী শাহাদাৎ ও মৃত্যুবরন করেছেন তাদের স্মরনে এবং দেশনেন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সুস্থতা ও দীর্ঘায়ূ কামনায় বিশেষ দোয়া মাহফিল।
বিকাল ৩টায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র্যালি অনুষ্ঠিত হবে। র্যালীর উদ্বোধন ও র্যালীতে অংশগ্রহণ করবেন সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। বিশেষ অতিথি থাকবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল। সভাপত্বি করবেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. শফিকুল আলম মনা।
দ্বিতীয় দিনের কর্মসুচি: ৩ সেপ্টেম্বর রবিবার বিকাল ৩টায় খুলনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষকী উপলক্ষ্যে আলোচনাা সভা ও খুলনা মহানগর বিএনপির উদ্যোগে বিশেষ ক্রোড়পত্র “প্রথম বাংলাদেশ” এর মোড়ক উম্মোচন। – খবর বিজ্ঞপ্তির ।
খুলনা গেজেট/কেডি