বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ আগামী ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বিএনপির এই সমাবেশকে রাজনৈতিক ও নৈতিক সমর্থন দিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ। জোটের নেতারা বলছেন, বিএনপির সমাবেশ ঘিরে সরকার যেভাবে উস্কানি দিচ্ছে, তাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে ক্ষমতাসীন দল ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এর দায় নিতে হবে।
বুধবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় নাগরিক ঐক্যের অফিসে বিএনপির প্রতিনিধিদের সঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা এসব কথা বলেন।
গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক দল বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সরকার পতন ও বর্তমান অগণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য যুগপৎ আন্দোলন করতে বিএনপি এবং গণতন্ত্র মঞ্চ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে একটি লিয়াজো কমিটি গঠন করা হবে। আগামী ১০ তারিখে আগে কমিটি গঠন করা হবে।
তিনি বলেন, আজকের বৈঠক থেকে বিএনপির ১০ তারিখের সমাবেশকে রাজনৈতিক ও নৈতিক সমর্থন দিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আজকে এখানে উপস্থিত সবাই গত ১৩-১৪ বছর ধরে শুরু থেকে লড়াইয়ে আছি। পরস্পরের মধ্যে একটা সর্ববৃহৎ ঐক্য গড়ে তুলে যে যার জায়গা থেকে এই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার কথা ভাবছিলাম। বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে হয়তো কেবল একটি মঞ্চ যথেষ্ট হবে না। তাই আমরা যুগপৎ প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।
যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তোলার সময় এসে গেছে উল্লেখ করে মান্না বলেন, বড় দল হিসেবে অন্যান্য দলের সঙ্গে আলোচনা করতে বিএনপির পক্ষ থেকে যেমন উদ্যোগ ছিল, তেমনি আমাদের জোটের পক্ষ থেকেও সবার সঙ্গে কথাবার্তা বলেছি। সেই ধারাবাহিকতায় আজকে বিএনপি নেতারা আমাদের অফিসে এসেছেন।
বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের যুগপৎ আন্দোলনের সূচনা হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, এই সরকারের পতন ঘটানোর পাশাপাশি যেটা আমরা বলতে পছন্দ করি, সেটা হলো সরকার ও শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন করব। এই ক্ষেত্রে বিএনপির সঙ্গে আমাদের বহু ক্ষেত্রে মতের মিল দেখতে পাচ্ছি। তারা বেশ কিছু প্রস্তাবনা আমাদেরকে কাছে পাঠিয়েছে, আমরাও কিছু প্রস্তাবনা তাদের কাছে পাঠিয়েছি। সেখানেও আলোচনা অব্যাহত আছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি বিএনপির সমাবেশের মধ্য দিয়ে ধারাবাহিকভাবে অগ্রসর হব। অগ্রসর হওয়ার জন্য যে দুইটি ভিত্তি সেটা নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাব। লিয়াজো কমিটি নিজেদের মধ্যে আরও ঘনঘন কথা বলে আন্দোলনকে এগিয়ে নেবে। আশা করি আগামীতে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চকে যুগপৎ আন্দোলনে দেখতে পাবেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মনিরুল হক চৌধুরী, ভাইস-চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, শামসুজ্জামান দুদু ও সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন।
বৈঠকে গণতন্ত্র মঞ্চের শরিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন স্বপন, ভাষানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম ও গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান।
খুলনা গেজেট/ এমএম