যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিএনপির চিঠি লেখা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল বলে মন্তব্য করছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সরকারের বিভিন্ন সংস্থা এসব বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সচিবালয়ে বুধবার(২ ফেব্রুয়ারি) এক ব্রিফিংয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি যে কাজগুলো করেছে এবং করছে, এগুলো রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক কাজ। সরকারের বিভিন্ন সংস্থা যেগুলো এ বিষয়ে তদন্ত করে, তারা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশকে সাহায্য বন্ধ করার জন্য, দেশের রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ করার জন্য এবং দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য তারা বিদেশিদের কাছে যে চিঠি লিখেছে, দেশকে বিব্রত করার জন্য তারা যে লবিস্ট নিয়োগ করেছে, তা নিয়ে দেশব্যাপী সমালোচনার মুখে মঙ্গলবার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছেন। তবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি যে চিঠি লিখেছেন, বিদেশিদের কাছে এটি স্বীকার করেছেন। তিনি যেটা অস্বীকার করেছেন, সেটা হচ্ছে সাহায্য বন্ধের কথা।
২০১৯ সালের ১৭ ও ২৪ এপ্রিল মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের লেখা দুটি চিঠি পড়ে শোনান তথ্যমন্ত্রী। এসব চিঠিতে বাংলাদেশকে সাহায্য বন্ধ করার অনুরোধ করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষে বিভিন্ন লবিস্ট ফার্মের সঙ্গে দলটির নেতারা যেসব চুক্তি করেছেন, সেসবের নথিও সাংবাদিকদের দেখান তথ্যমন্ত্রী।
বিএনপির মহাসচিব এসব নথি কীভাবে অস্বীকার করবেন, সেই প্রশ্ন রাখেন মন্ত্রী।
হাছান মাহমুদ বলেন, মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির নেতারা যে প্রচণ্ড মিথ্যাচার করেন, এটির প্রমাণ হলো এই নথিগুলো। তারা সবাই মিথ্যাবাদী। তারা দেশের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র করছে, তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ এই নথিগুলো। শুধু তা নয়, তারা দেশের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র করছে, তারা যে বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে মিথ্যাচার করেছে ক্রমাগতভাবে, সেটি বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরায় প্রমাণিত হয়েছে। অর্থাৎ তাদের পুরো রাজনীতিটাই মিথ্যার ওপর প্রতিষ্ঠিত। খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরায় নেতাকর্মীরা হতাশ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বেশি মিথ্যাচার করতে পারায় তাকে মহাসচিবের দায়িত্বে রাখা হয়েছে উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, উনি একটাই ভালো করে পারেন, সুন্দর করে মিথ্যা কথা বলতে পারেন। জ্বলন্ত প্রমাণ থাকার পরেও কীভাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি মিথ্যাচার করেছেন সেই প্রশ্ন আমার। পুরো জাতি যখন তাদের ধিক্কার দিচ্ছে, সিভিল সোসাইটি যারা সরকারের সমালোচনা করে, তারাও যখন সমালোচনায় মুখর, তখন তিনি আত্মরক্ষার্থে সংবাদ সম্মেলন করে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সেটি করা যাচ্ছে না। আসলে যারা এভাবে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এবং দেশের বিরুদ্ধে লবিস্ট নিয়োগ করে দেশকে বিব্রত করার জন্য এবং রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ করার জন্য, তাদের আসলে বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার থাকা উচিত নয়।
হাছান মাহমুদ বলেন, পৃথিবীর প্রায় সব উন্নয়নশীল দেশ রপ্তানি বাড়ানোর জন্য, দেশের ভাবমূর্তি বাড়ানোর জন্য এবং পর্যটনের বিকাশের জন্য লবিস্ট নিয়োগ করে। বাংলাদেশ সরকারও পিআর ফার্ম নিয়োগ করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের রপ্তানি বাণিজ্য বিদেশে বৃদ্ধি পেয়েছে, ভাবমূর্তি আগের তুলনায় আরও ভালো হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ এস আই