জিয়াউর রহমান তার ‘পাপের কারণে’ হত্যার শিকার হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আবার বলেছেন, চন্দ্রিমা উদ্যানে যেটি প্রয়াত রাষ্ট্রপতির সমাধি হিসেবে পরিচিত, সেখানে তার মরদেহ নেই। ‘ধূর্ত’ এরশাদ লোক দেখাতে একটি বাক্স এনে সেখানে সমাহিত করেন।
১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস স্মরণে বুধবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের এক আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
জাতির পিতার কন্যার দীর্ঘ বক্তব্যে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতের হত্যাযজ্ঞের ধারাবাহিকতায় ইতিহাসের নানা ঘটনাপ্রবাহ উঠে আসে। সেনা শাসক জিয়াউর রহমানকে হত্যা, এরপর আরেক সেনা শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর নানা ঘটনাপ্রবাহে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় উঠে আসা জিয়াউর রহমান নিজেও হত্যার শিকার হন। ১৯৮১ সালের ৩০ মে রাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে একদল সেনা সদস্য হত্যা করে তাকে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পাপ বাপকেও ছাড়ে না। যেভাবে জিয়া বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে সেও কিন্তু খুন হয়।”
জিয়াকে হত্যার পর তার মরদেহ চট্টগ্রামের পাহাড়ে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছিল। পরে সেখান থেকে তুলে এনে জাতীয় সংসদভবন এলাকার চন্দ্রিমা উদ্যানে সমাহিত করার কথা জানানো হয় সে সময়ের সরকারের পক্ষ থেকে। তখন সেনাবাহিনীর প্রধান ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, যিনি পরে বিএনপির নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি আবদুস সাত্তারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করে ক্ষমতা দখল করেন।
শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা এর আগেও বলেছেন, এই সমাধিকে জিয়াউর রহমানের মরদেহ নেই। যে কফিন সেদিন সমাহিত করা হয়, সেটি ছিল ফাঁকা। এর ভেতরে কী ছিল, তা কেউ দেখেনি।
পুরনো কথার পুনরাবৃত্তি করে শেখ হাসিনা বলেন, “তার (জিয়া) লাশের কিন্তু কোনো খবর নাই। সংসদ ভবনে যে কবর দেওয়া হয়েছে, সেখানে জিয়ার কোনো লাশ নেই। জেনারেল এরশাদ সেই কথা কিন্তু বলে গেছে। সে বলেছে, জিয়ার লাশ পাওয়া যায়নি। জিয়ার লাশ খালেদা বা তারেক বা কোকো বা পরিবার পরিজন কেউ দেখে নাই। তাহলে লাশ গেল কোথায়?”
পরে তিনি বলেন, “এরশাদ ধূর্ত লোক ছিল বলে একটি বাক্স এনে লোক দেখানোর জন্য সংসদ ভবনে একটি অবৈধ স্থাপনায় কবর দিছে। সেখানে বিএনপি নেতাকর্মী ফুল দেয়। কিন্তু কাকে ফুল দিচ্ছে সেটা কি তারা জানে? জানে না।”
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ন কবিরও বক্তব্য রাখেন।
খুলনা গেজেট/এইচ