সরকারের অনুগত লোক দিয়েই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে বলে দাবি বিএনপির। দলটির নেতারা বলছেন, এটা আরেকটি হুদা কমিশন। এসব নিয়ে তাদের কোনো আগ্ৰহ নেই। শেখ হাসিনার সরকার বা তাদের করা কমিশনের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। ওই সরকার নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। তার অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হলে তাতে বিএনপিসহ সব দল অংশগ্রহণ করবে।
শনিবার(২৬ ফেব্রুয়ারি) নতুন ইসি গঠনের পর সাংবাদিকদের কাছে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় দলটির দুজন নীতিনির্ধারক এসব কথা বলেন।
এর আগে বিকালে নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব কাজী হাবিবুল আউয়ালকে নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তার নেতৃত্বাধীন ইসির নতুন ৪ কমিশনার হলেন- বেগম রাশিদা সুলতানা (জেলা ও দায়রা জজ, অবসরপ্রাপ্ত), আহসান হাবীব খান (ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, অবসরপ্রাপ্ত), মো. আলমগীর (সিনিয়র সচিব, অবসরপ্রাপ্ত) ও আনিছুর রহমান (সিনিয়র সচিব, অবসরপ্রাপ্ত)।
এই কমিশন নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নতুন নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা সরকারের পছন্দের লোক। তারা সবাই সরকারের অনুগত, সুবিধাভোগী ও তোষামোদকারী। এদের অধীনে নির্বাচনে যাবেন না তারা।
নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে তার দলের কোনো আগ্রহ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের কাছে এটি কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো কমিশন কাজ করতে পারবে না। এটা জাতীয় ও স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে। আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, সরকাররকে পদত্যাগ করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। ওই সরকার নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। তার অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হলে তাতে আমরাসহ সব দল অংশগ্রহণ করবে।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে সরকার যে নাটক করেছে যার শেষ ধাপ ছিল আজ (শনিবার)। ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিদের দিয়ে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। সার্চ কমিটি সরকারের তালিকা অনুযায়ী লোকদের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতিও সরকারের দেওয়া পাঁচজনের তালিকা প্রকাশ করেছেন। এটা পুরোটাই নাটক।
নতুন নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা এ সরকারের আমলে গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন দাবি করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সর্বক্ষেত্রে দলীয়করণ হয়েছে। প্রশাসনের সর্বত্র সরকারের লোকজন। যারা নিয়োগ পেয়েছেন তারা সরকারের সুবিধাভোগী। সরকার তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিয়েছিলেন। অনুগত বলেই তাদের নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, এ কমিশন নিয়ে আমাদের কোনো আগ্ৰহ ছিল না। এখনো নেই। নতুন ইসিতে যাদের নাম দেখলাম এটা আরেকটি হুদা কমিশন হয়েছে। এদের প্রত্যেকেই শেখ হাসিনা সরকারের সুবিধাভোগী।
খুলনা গেজেট/ এস আই