করোনা মহামারি মানুষের জীবন অনেকটাই স্থবির করে দিয়েছে; কিন্তু বায়ুদূষণের প্রভাব তো আর কমেনি। সেই দূষণের তীব্রতায় বিশ্বজুড়ে মানুষের আয়ু কমেছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণের কবলে আছে ঢাকা ও খুলনা। আর এ কারণে এই দুই শহরের বাসিন্দাদের আয়ু সাত বছর কমে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বায়ুমানের সঙ্গে মানুষের স্বাস্থ্য ও আয়ুর সম্পর্ক দেখানো হয়েছে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর বায়ুমান দ্রুতগতিতে কমছে। বাংলাদেশ এর মধ্যে শীর্ষে। আর বাংলাদেশের মধ্যে ঢাকা ও খুলনার বায়ুমান সবচেয়ে খারাপ, স্বাভাবিকের চেয়ে আট গুণ দূষিত। এ কারণে এই দুই শহরের মানুষ গড়ে সাত বছর কম বাঁচে। চট্টগ্রাম হচ্ছে তৃতীয় দূষিত শহর। সেখানকার মানুষের আয়ু স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় সাড়ে চার বছর কম।
মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায় যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহর থেকে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ওই গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউটের দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক অনন্ত সুদর্শন। ২০ বছরের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন দেশ থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও নেপালের বায়ুমান দ্রুতগতিতে কমছে। ১৯৯৮ সাল থেকে বাংলাদেশের বায়ুমান কমছে। এ সময়ে দূষণ বেড়েছে ৮৯ শতাংশ। প্রতিটি জেলার বাতাস স্বাভাবিকের চেয়ে চার গুণ দূষিত। সবচেয়ে দূষিত শহর রাজধানী ঢাকা এবং বিভাগীয় শহর খুলনা। এর পরে রয়েছে দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর চট্টগ্রাম। গবেষণায় বলা হয়, প্রধানত বায়ুদূষণের কারণে ফুসফুস বা শ্বাসকষ্টজনিত রোগের প্রকোপ বাড়ে। গর্ভবতী মায়েদের ওপরও ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে, যা মৃত্যু ত্বরান্বিত করে। বাংলাদেশের জন্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা এবং বায়ুদূষণ কমানো রীতিমতো একটি চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করা হয় গবেষণা প্রতিবেদনে। ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, চীন বায়দূষণ কমাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। তারা ২০১৪ সাল থেকে ‘দূষণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ কর্মসূচির মাধ্যমে দূষণের মাত্রা ৪০ শতাংশ কমাতে পেরেছে, পাশাপাশি চীনবাসীর গড় আয়ু দুই বছর বেড়েছে। (সূত্র : কালের কন্ঠ)
খুলনা গেজেট/এআইএন