বাগেরহাটের চিতলমারীতে সমীর সমাদ্দার (৫২) নামের এক কৃষককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে নির্মম ভাবে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। হামলাকারীরা সুদের টাকার জন্য মারপিটের কথা বললেও আহত কৃষক সুদে লেনদেনের কথা অস্বীকার করেছেন।
কৃষককের অভিযোগ চাঁদা না দেওয়ায় তাঁকে লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। আহত কৃষক চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আহত সমীর উপজেলার হিজলা ইউনিয়নের শিবপুর কাটাখালী গ্রামের সুধীর চন্দ্র সমাদ্দারের ছেলে।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আহত সমীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘১০ সেপ্টেম্বর রাত ৮ টার দিকে পাশের শান্তিখালী গ্রামের ফরিদ শেখের ছেলে বাচ্চু শেখ আমাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এ সময় গোলক কিত্তুর্নীয়ার দোকানের পাশে পৌঁছালে ফিরোজ ও আলামিনের নেতৃত্বে ৫ থেকে ৬ জন লোক আমার কাছে মোটা অংকের টাকা চাঁদা দাবী করে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাঁরা লোহার রড ও হাতুড়ী আমাকে নির্মম ভাবে নির্যাতন এবং পিটিয়ে আহত করে। আমার চিৎকারে লোকজন ছুটে এলে হামলাকারীরা আমাকে ফেলে রেখে চলে যায়।
খবর পেয়ে আত্মীয়-স্বজনরা আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করে। এদিন রাতেই অসুস্থ্য অবস্থায় আমি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছি।’
সমীর সমাদ্দারের স্ত্রী বিভা রাণী সমাদ্দার বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক ছেলে ও দশম শ্রেণীতে পড়ুয়া একটি মেয়ে রয়েছে। ঘটনার পর থেকে আমরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছি। ওরা মহড়া দিয়ে বেড়াচ্ছে।’
নির্যাতনের কথা অস্বীকার করে শেখ ফিরোজ আহম্মেদ নুর জানান, সমীরের এক ভগ্নিপতি আলামিন ও তার মার কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা সুদে নিয়েছিল। সময়মত টাকা না দেওয়ায় সুদাসলে ৮৫ হাজার টাকা হয়। সেই টাকার জামিনদার ছিল সমীর সমাদ্দার। এ নিয়ে ১০ তারিখ রাতে তাঁকে ডেকে শোনামেলার সময় হাত ধরে টানাটানির এক পর্যায়ে সমীর পড়ে গিয়ে আহত হয়।
এ ব্যাপারে চিতলমারী থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ জাহাঙ্গীর বলেন, ‘সমীর সমাদ্দার যে অভিযোগ দিয়েছেন পুলিশ তা আমলে নিয়েছে। আমরা তদন্ত করেছি। প্রাথমিক তদন্তে মারধরের সত্যতা পাওয়া গেলেও চাঁদাবাজির সত্যতা পাওয়া যায়নি। সুদের টাকার লেনদেন নিয়ে তাদের মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি হয়েছে।
চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক মোঃ মামুন হাসান জানান, আহত কৃষক সমীর সমাদ্দার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁর মাথায় সেলাই দেওয়া হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ টিএ