বিজয়ী হওয়ার ১০ দিনের মধ্যেই সভায় বসছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নির্বাহী কমিটি। আজ বেলা আড়াইটায় নতুন কমিটির প্রথম সভা আহ্বান করেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন।
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচনের পর এত দ্রুত নির্বাচিত কমিটির সভা এই প্রথম। ৩ অক্টোবর ভোটাভুটি শেষে ২০ পদের প্রার্থী নির্বাচিত। বাকি একটি সহসভাপতি পদের জন্য পুনঃনির্বাচন ৩০ অক্টোবর। এই পুনঃনির্বাচনের বিষয়ই আজ আলোচ্য বাফুফের নতুন কমিটির প্রথম সভায়। দুপুরের এই সভায় প্রথমে থাকবে নির্বাচিতদের পরিচয় পর্ব। এরপর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসন্ন ফুটবল মওসুমের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ নিয়ে হবে আলোচনা। কবে শুরু হবে ফেডারেশন কাপ, কবে মাঠে গড়াবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ, কোন কোন ভেনুতে খেলা হবে সে সব নিয়েই আলোচনা আজকের এই সভায়।
বাফুফের সাধারণ সম্পাদক মো. আবু নাঈম সোহাগ জানিয়েছেন, ‘নির্বাচনের ফলাফল, এজিএম পর্যালোচনা, নির্বাচিতদের পরস্পরের সঙ্গে পরিচিত হওয়া- এসব আছে এজেন্ডায়।’ প্রথম সভায় বিভিন্ন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যানও ঠিক করা হতে পারে। বাফুফের স্ট্যান্ডিং কমিটিগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ও আলোচিত হচ্ছে- প্রফেশনাল লীগ কমিটি, ন্যাশনাল টিমস কমিটি ও ডেভেলপমেন্ট কমিটি। দীর্ঘদিন ধরে প্রফেশনাল লীগ কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছেন সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী এবং ন্যাশনাল টিমস কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ। নাটকীয় কিছু না হলে এই দুটি স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান পদে পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। বিদায়ী কমিটির সহ-সভাপতি বাদল রায় প্রথমে ছিলেন ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান। তিনি অসুস্থ হওয়ার পর এ কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েছিলেন স্বয়ং সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন। এবার তিনি এ দায়িত্ব পালন করছেন না।
টানা দুই বছর লিগ করতে না পারলে বাতিল হয়ে যাবে ওই জেলার কাউন্সিলরশিপ। জেলা পর্যায়ে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া হলেও এটাকে নিয়মে রূপ দিতে গেলে বিশেষ সাধারণ সভার অনুমোদন লাগবে। আজ প্রথম সভায় এ নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এবার জেলা ফুটবল যে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। গুরুত্বহীন থাকার কারণেই জেলার প্রায় ৮০ শতাংশ কাউন্সিলর বাফুফের বাইরের সংগঠক তরফদার মোহাম্মদ রুহুল আমিনের অনুসারী হয়ে গিয়েছিলেন। তাইতো নির্বাচনকে ঘিরে এত চাপ-তাপের গল্প রচিত হয়েছিল।
আলোচনা হতে পারে জেলা ফুটবল লিগ নিয়েও। এ জন্য চার সহসভাপতিকে জেলা ফুটবলের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার কথা ভাবছে বাফুফে। দুই দিন আগে সংবাদমাধ্যমে সিনিয়র সহসভাপতি সালাম মুর্শেদী বলেছেন, ‘জেলাগুলোকে চার সহসভাপতির মধ্যে ভাগ করে দিলে জেলা ফুটবলের প্রতি আমাদের সরাসরি নজর থাকবে এবং ওখানকার ফুটবল সচল থাকবে।’ আগে ছিল বাফুফের জেলা ফুটবল মনিটরিং কমিটি; যদিও এর কোনো কর্মকাণ্ড দেখা যায়নি। তাই এবার সহসভাপতিদের সম্পৃক্ত করার নতুন উদ্যোগ প্রথম সভায় অনুমোদন পেতে পারে। বাফুফের নতুন সহসভাপতি ইমরুল হাসানও এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন, ‘চার সহসভাপতিকে আট বিভাগ ভাগ করে দেওয়া হতে পারে। তাঁদের কাজ কী হবে, সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে এটা সহসভাপতিদের মধ্যেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা তৈরি করবে। কার বিভাগ ভালো কাজ করেছে, কোনগুলো করেনি।’ তা ছাড়া প্রতিটি জেলাকে বাফুফে থেকে বার্ষিক পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার ঘোষণা সভাপতি এরই মধ্যে দিয়েছেন।
তবে ফুটবলাররা তাদের পারিশ্রমিক বাড়ানোর যে দাবি করেছিল তা বাফুফে আমলে নেবে কি না সেটাও একটি বিষয়। ২৫ শতাংশ পারিশ্রমিকের বেশি কি তারা পাবে নাকি ক্লাব আগের চুক্তির আলোকে ২৫ শতাংশ পারিশ্রমিকই দেবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে এই সভায়।