দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সবথেকে বড় আর রোমাঞ্চকর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ বিপিএল আয়োজনে আপাতত পরিকল্পনা নেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের। অন্যান্য ঘরোয়া আয়োজন নিয়েও খুব আগ্রহ নেই ক্রিকেট বোর্ডের। আপাতত ক্রিকেট বোর্ড ব্যস্ত ক্রিকেটের বিভিন্ন পর্যায়ের দলগুলোর বিদেশ সফর নিয়ে। ফলে এ মৌসুমে বাতিল হতে পারে বিপিএল। বিসিবির একাধিক কর্তাও তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন।
শ্রীলঙ্কায়ও দুই মাস ধরে ঘরোয়া ক্রিকেট চলছে। পাকিস্তানে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে ঘরোয়া ক্রিকেট। স্থগিত হওয়া পিএসএলের সেমিফাইনাল এবং ফাইনালও হয়ে যাবে এর মধ্যে। আফগানিস্তানও তাদের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি লিগ চালু করে দিয়েছে। এ মাসেই ভারতের আইপিএল শুরু হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। অথচ বাংলাদেশের অবস্থা সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। ঘরোয়া ক্রিকেট মাঠে ফেরানোর কোনো তোড়জোড়ই নেই বিসিবির।
আপাতত বিসিবির লক্ষ্য-বয়সভিত্তিক ক্রিকেট, হাই পারফরম্যান্স দল, বাংলাদেশ ‘এ’ দল ও জাতীয় দলকে বিদেশ সফরে ব্যস্ত রাখা। প্রাধান্যের ক্ষেত্রে ঘরোয়া ক্রিকেট পেছনের আসনে। অন্যান্য বছর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর থেকেই শুরু হয় ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ বিপিএলের কার্যক্রম। কিন্তু এ বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে বিসিবি বিপিএল আয়োজনের সাহস পাচ্ছে না। গত মার্চে স্থগিত হয়ে যাওয়া ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ঠিকমতো হলেই নাকি বিপিএল আয়োজনের কথা ভাববে বিসিবি। কিন্তু সেই ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেরও এখন পর্যন্ত কোনো খবর নেই।
বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্যসচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিক বলেছেন, ‘বোর্ডের ইচ্ছা প্রিমিয়ার লিগ দিয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট আবার শুরু করা। প্রিমিয়ার লিগ যদি সফলভাবে করতে পারি, তাহলে বিপিএল করার চিন্তা করা যাবে।’ কিন্তু প্রিমিয়ার লিগ আয়োজনের দায়িত্বে থাকা সিসিডিএম এ বছর লিগ আয়োজনের কোনো সম্ভাবনা দেখছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিসিডিএমের এক কর্মকর্তা কাল জানালেন, ‘এ বছর আর লিগ হচ্ছে না। সব আলোচনা বন্ধ।’ আর প্রিমিয়ার লিগ না হওয়ার অর্থ-এ বছর হবে না বিপিএলও। অক্টোবর-নভেম্বরে জাতীয় লিগ আয়োজনের চেষ্টার কথা শোনা যাচ্ছিল। সেই প্রক্রিয়াও থেমে গেছে করোনা পরিস্থিতিতে ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়ে বিসিবির অনীহায়।
পরিস্থিতির উন্নতি হলে প্রিমিয়ার লিগই আগে শুরু হবে, এরপর বিপিএল। বিপিএল হওয়ার অর্থ বিদেশি ক্রিকেটার, কোচ ও সাপোর্ট স্টাফের সঙ্গে বাংলাদেশে আসবেন বিদেশি সম্প্রচারকর্মীরাও। সঙ্গে স্থানীয় খেলোয়াড় এবং টুর্নামেন্ট-সংশ্লিষ্টরা তো আছেই। একসঙ্গে এত মানুষের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করাটা অসম্ভবই মনে করে বিসিবি। জৈব সুরক্ষাবলয় তৈরি করা যে বিশাল ব্যয়সাপেক্ষ ব্যাপার, সেটিও বিসিবির পক্ষে করা সম্ভব নয় বলে আগেই জানিয়েছেন বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান। ইসমাইল হায়দার অবশ্য মনে করেন, ‘বিপিএলে অনেক বিদেশি লোকের এখানে আসার ব্যাপার আছে। কিন্তু অনেকেই হয়তো এখন বাংলাদেশে আসতে চাইবেন না।’
খুলনা গেজেট/এএমআর