মোংলা বন্দরে জাহাজে ডাকাতির ঘটনায় মালামালসহ তিন জনকে আটক করেছে কোস্ট গার্ড। এর আগে সোমবার রাত সাড়ে তিনটার দিকে মোংলা পোর্ট সংলগ্ন বেইস ক্রিক এলাকায় নোঙররত এমভি সেজুতি নামক জাহাজে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
কোস্টগার্ড জানায়, মঙ্গলবার ১২ জন ডাকাত ধারালো অস্ত্রসহ জাহাজের ক্রুদের জিম্মি করে মেশিনারিজ ও মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। মঙ্গলবার কোস্ট গার্ড মোংলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতির সাথে জড়িত জাহাজের স্টাফসহ ৩ জনকে আটক করে। এসময় লুট হওয়া জাহাজের মালামাল উদ্ধার করা হয়।
বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ঘটনার সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে একটি অনুসন্ধানী দল পাঠায় ঘটনাস্থলে এবং প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে। এরপর কোস্ট গার্ড জাহাজের নাবিকদের সাথে আলাপ করে এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মোংলা এলাকায় একাধিক অভিযান পরিচালনা করে ২৭ মে ডাকাতি হওয়া মালামাল উদ্ধার এবং ডাকাতির সাথে সংশ্লিষ্ট জাহাজের স্টাফসহ ৩ জন ব্যক্তিকে আটক করে।
কোস্টগার্ডের লেফটেন্যান্ট কমান্ডার অপারেশন কর্মকর্তা আবরার হাসান প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উদ্ধারকৃত মালামাল এর মধ্যে রয়েছে ইঞ্জিনের বিভিন্ন ধরণের স্পেয়ার পার্টস, ইঞ্জিনের বিভিন্ন সাইজের বিয়ারিং, ব্যাটারি + ব্যাটারি চার্জার ও অন্যান্য জাহাজের গুরূত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ।
প্রাথমিকভাবে এটি একটি ডাকাতির ঘটনা মনে হলেও, জাহাজের কর্তৃপক্ষ, অফিসার, ক্রু ও আটককৃত ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত সাজানো ডাকাতির ঘটনা। যেখানে জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ অন্যান্য নাবিক বৃন্দ ও স্থানীয় দুষ্কৃতকারীরা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন বলে জানা যায়।
জাহাজের অধিকাংশ নাবিক গত ৬/৭মাস ধরে সঠিকভাবে বেতন পায় না। এতে করে নাবিকদের মধ্যে মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছিল। একারণে আর্থিক ব্যবস্থার উদ্দেশ্যে ইতিপূর্বেও জাহাজ হতে বিভিন্ন গ্রুপ বা দুষ্কৃতকারীদের কাছে মেশিনারিজ পার্টস বিক্রি করা হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা জাহাজের চীফ ইঞ্জিনিয়ার এর তত্ত্বাবধানে স্থানীয় দুষ্কৃতকারীদের সঙ্গে মিলে এই ডাকাতির নাটক সাজিয়ে লুটকৃত মালামাল বিক্রির মাধ্যমে অর্থ ভাগাভাগির পরিকল্পনা করে।
দূর্ভাগ্যজনাক হলেও এতো বড় ঘটনা সম্পর্কে সহায়তা চেয়ে জাহাজের মালিক পক্ষ ক্যাপ্টেন সাহিকুল সাহেবকে ঘটনাস্থলে আসার অনুরোধ করা হলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।
বর্তমানে উদ্ধারকৃত মালামাল জাহাজ কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং আটককৃত ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
খুলনা গেজেট/এএজে