রাজধানীর বাড্ডা থানাধীন এলাকায় দিনের বেলায় দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, ৬-৭ জন ডাকাত বাসায় ঢুকে সবার হাত-পা বেঁধে ৩০ ভরি স্বর্ণালংকার ও ১১ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। মঙ্গলবার (২৭ জুন) বিকেলে বাড্ডা লিংক রোডের একটি বাসার তৃতীয় তলায় এই ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
বাসাটির মালিকের নাম ইশতিয়াক। বাড্ডা লিংক রোডে ‘শাহী মুড়ি’ নামে একটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে তার। ঘটনার সময় ইশতিয়াক দোকানে ছিলেন বলে জানা গেছে। বাসাটির নিচেই ইশতিয়াকের রেস্টুরেন্টটি।
ডাকাতির ঘটনার বিষয়ে ইশতিয়াক গণমাধ্যমকে বলেন, আজ বিকেলে ৪টার দিকে আমার বাসায় ডাকাতি হয়েছে। ৬-৭ জন ডাকাত বাসায় ঢুকে আমার মা, বাবা বোন ও বোনের তিন বছরের ছেলের হাত পা বেঁধে বাসা থেকে ৩০ ভরি স্বর্ণালংকার ও ১১ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে।
ডাকতরা বাসায় কীভাবে প্রবেশ করেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাসার প্রধান দরজায় পুশ লক ছিল। তবে ঐ সময় লক লাগানো ছিল না। ডাকাতরা পুশ লক মুচড়ে দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে সবার হাত-পা বেঁধে ফেলে। এই সময় তারা দেশি অস্ত্র দিয়ে বাসার সবাইকে ভয় দেখায়।
তিনি বলেন, ঘটনার সময় আমি বাসায় ছিলাম না। তখন আমি বাসার নিচে আমার রেস্টুরেন্টে ছিলাম। বাসায় যে ডাকাতি হচ্ছে আমি তখন জানতাম না। ডাকাতি শেষে যখন বাসা থেকে বের হয়ে যায় তারা, তখন আমার পরিবারের লোকজন নিজেদের হাত-পায়ের বাঁধ খুলে আমাকে ডাক দেয়। তখন আমি বাসার ভেতরে গিয়ে আর মা,বাবা ও বোনের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার বিস্তারিত জানতে পারি।
ইশতিয়াক বলেন, ডাকাতরা আমার বাসায় ২০-৩০ মিনিট ধরে ডাকাতি করেছে। ডাকাত দলটির ৬-৭ জনের মধ্যে ২ জন মাস্ক পরিহিত অবস্থায় ছিল বলে আমার বাসার লোকজন জানিয়েছে। আর বাকিদের মুখে কোনো মাস্ক ছিল না। ডাকাতদের বয়স আনুমানিক ২৫-৩০ বছর হবে। তাদের হাতে ছিল ছুরি ও চাপাতি। তারা আমার মাকে একটি কোপ দিয়েছিল চাপাতি দিয়ে, কিন্তু সেটা তার গায়ে লাগেনি। তিনি অল্পের জন্য বেঁচে যান।
দিনের বেলায় ডাকাতি হলেও ভবনের অন্য কোনো ফ্লোরের বাসিন্দারা কোনোভাবে টের পায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভবনের তিন তলায় আমার বাসা। তিন তলায় আর কোনো বাসা নেই। তবে ভবনের অন্য ফ্লোরে আরও বাসা আছে। কিন্তু সেই সব বাসার কেউই ডাকাতি হচ্ছে বুঝতে পারেনি।
ডাকাতির ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না এখনও মামলায় করা হয়নি। তবে ঘটনার পর বাসায় থানা পুলিশ, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সদস্যরা ও সিআইডির ফরেনসিক টিম এসেছিল। আগামীকাল সকালে বাড্ডা থানায় গিয়ে মামলা করব।
এ বিষয়ে বাড্ডা থানার ডিইউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাকিবুল আলম বলেন, আজ বাড্ডা এলাকায় একটি ডাকাতি হয়েছে শুনেছি। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন। এ বিষয়ে আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
অন্যদিকে এ বিষয়ে বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ডাকাতির ঘটনায় বুধবার মামলা হবে। তবে আমাদের আইনি কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
খুলনা গেজট/এসজেড