খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৪৫৮

বাজারে হঠাৎ পেঁয়াজের ঝাঁজ, বিপাকে ভোক্তা

সাগর জাহিদুল

খুলনায় হঠাৎ পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। তিন দিনের ব্যবধানে এ পণ্যটি মূল্য মানভেদে বেড়েছে ১০-১২। বর্তমানে বাজরে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যটি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা। থেমে নেই আলুর দাম।  তবে বড় ধরণের দামের উর্দ্ধগতির পর সয়াবিন তেল ও চিনির দাম  স্থিতিশীল রয়েছে। সাধারণ ক্রেতারা এ দাম বৃদ্ধির জন্য বরাবরের মতো ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটকে দায়ী করেছেন।

নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পেঁয়াজ মানভেদে ব্যবসায়ীরা ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি করছেন। অথচ গত তিনদিন আগেও এ পণ্যটি বাজারে ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আলু বর্তমানে ৪০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। গত ৫ দিন আগে এ পণ্য টি বাজারে বিক্রি হয়েছে ২৫-২৮ টাকায় বিক্রি করেছেন ব্যবসায়ীরা। ভোজ্য সয়াবিন তেল কেউ কেউ আগের দরে বিক্রি করলেও সরকার নির্ধারিত মূল্য ১৯৯ টাকার বেশীও নিচ্ছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। অপরদিকে চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। তবে এ পণ্যটির দাম আরও বেড়ে যাবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

খুলনা সোনাডাঙ্গাস্থ ট্রাক টার্মিনালের ব্যবসায়ী আর আর বাণিজ্য ভান্ডারের মো: রাসেল মিয়া বলেন, প্রতিকেজি পেঁয়াজ তিনি ৪৮-৫০ টাকায় বিক্রি করছেন। দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, বৃষ্টির কারণে ক্ষেতে কৃষকের পেঁয়াজ পচে গেছে। হাটগুলোতে পেঁয়াজের আমদানি খুবই কম। যা আসছে তা ভাগভাটার করে ব্যবসায়ীরা নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, যখন থেকে সরকার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে। তখন থেকে ধাপে ধাপে এ পণ্যটির দাম বাড়তে থাকে। পেঁয়াজের দাম হাতের নাগালে আনতে হলে সরকারিভাবে পেঁয়াজ আমদানি করতে হবে। না হলে এ পণ্যটির দাম বেড়ে যাবে।

মেসার্স বাণিজ্য ভান্ডারের ব্যবসায়ী আ: মালেক বলেন, দেশের কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের এবার মূল্যায়ন করেনি। ভারতের পচা বীজ অর্থের লোভে কৃষকদের হাতে তুলে দিয়েছেন। আর এ বীজ বপন করে কৃষকরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। বর্তমানে বাজারে যে পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে তা হল ভারতীয় বীজের। পেঁয়াজটি দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়না। করতে গেলে তা পচে যাচ্ছে। আর এ কারণে বাজারে এ পণ্যটির সংকট দেখা দিয়েছে। যার ফলে ধাপে ধাপে দাম বাড়ছে পণ্যটির।

একই বাজারে আলুর পাইকারী বিক্রেতা মো: আলমগীর বলেন, ঈদের আগে এ পণ্যটির দাম প্রতিকেজি ২৪ টাকা ছিল। ঈদের আগের দিন রাত থেকে আলুর দাম ধাপে ধাপে বাড়তে থাকে। পাইকারী বাজারে তিনি প্রতিকেজি আলু ৩০ টাকায় বিক্রি করছেন। দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে তিনি বলেন, গেল বছর কৃষরা আলুর দাম তেমন পাননি। আলুও তেমন স্টোরেজ করেনি। যে যেমন পারছে সে তেমন ব্যবসা করছেন।

তবে সরেজমিনে এ বাজারে প্রতিটি ঘরে আলু ও পেঁয়াজের মজুদ বেশ দেখা গেছে।

খুলনা বড় বাজারে চিনির ব্যবসায়ী রেজা এন্ড ব্রাদার্সের মালিক শাহ আলম মৃধা বলেন, দেশের মিল মালিকদের কারণে গত ২ মাস ধরে চিনির বাজার উর্ধমুখী হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে প্রতিকেজি চিনির দাম ৪৭টাকা। একই পণ্য একই পরিমাণে আমাদের দেশে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা। এটা একটি দু:খ জনক ঘটনা।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বাজারের চিনির ব্যবসায়ী বলেন, রোজার পর ৫০ কেজির প্রতি বস্তায় ৬০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষের ব্যবসায়ী মনোভাবের কারণে চিনির দাম বেড়ে চলেছে। তিনি সরকারকে ভারত থেকে চিনি আমদানির অনুরোধ করেছেন।

ইসলামপুর রোড হক স্টোরের ব্যবসায়ী বলেন, গত ২ দিন আগে তেলের নতুন দর নির্ধারণ করেছে সরকার। নতুন রেটের মাল না পাওয়ায় তিনি পূর্বের দরে বিক্রি করছেন সয়াবিন তেল। বর্তমানে প্রতি ১ লিটার এবং ৫ লিটারের তেল যথাক্রমে ১৮৭ টাকা ও ৯০০ টাকায় বিক্রি করছেন।

এদিকে পেঁয়াজ ও আলুর দাম বৃদ্ধি সংক্ষুব্ধ হয়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। একাধিক ক্রেতারা এ দু’টি পণ্যের দাম বৃদ্ধিকে ঘর পোড়ার মধ্যে আলু পোড়ার সাথে তুলনা করেছেন। কেননা মানুষের আয় কমে গেছে কিন্তু ব্যয় বাড়ছে। তারা বলছেন এ বছরে একই মাসে ২ বার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছেন সরকার। আবারও বাড়ানোর চিন্তা করছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের কপালে নতুন করে চিন্তার ভাঁজ পড়ছে।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!