খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  রাজধানীর উত্তরা থেকে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম গ্রেপ্তার
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৮৩
  ১৬ ডিসেম্বর ঘিরে কোনো ধরণের হামলার শঙ্কা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

‘বাঙালির অর্থনৈতিক মুক্তিতে পাটের ভূমিকা একটি স্বীকৃত ইতিহাস’

গে‌জেট ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এক সময়ের প্রধান অর্থকরী ফসল পাট এখনও দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত। শুধু তাই নয়, বাঙালির অর্থনৈতিক মুক্তির হাতিয়ার হিসেবে পাটের ভূমিকা একটি স্বীকৃত ইতিহাস।

আজ রবিবার (৬ মার্চ) জাতীয় পাট দিবস উপলক্ষে গতকাল শনিবার দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। তিনি বলেন, অন্যান্য বছরের মতো এবারও ৬ মার্চ ‘জাতীয় পাট দিবস’ পালিত হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। এ উপলক্ষে পাট চাষিসহ এ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে শুভেচ্ছা জানান তিনি। এবারের প্রতিপাদ্য ‘সোনালি আঁশের সোনার দেশ-পরিবেশবান্ধব বাংলাদেশ’ প্রাসঙ্গিক ও সময়োপযোগী হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী মনে করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, পাটের সঙ্গে রয়েছে এদেশের মানুষ আর আমাদের মহান স্বাধীনতার এক নিবিড় যোগসূত্র। দেশ বিভাগের পর থেকেই তৎকালীন পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠী দেশের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হতে অর্জিত মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রার ন্যায্য হিসাব থেকে বঞ্চিত করে।

তিনি বলেন, এ অন্যায়, অবিচার ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালের ৬ দফা কর্মসূচির ৫ম দফায় বৈদেশিক মুদ্রার ওপর প্রদেশ বা অঙ্গরাজ্যগুলোর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দাবি করেন। পাটকে জাতীয় সম্পদ হিসেবে বিকাশের পরিকল্পনা করেন তিনি। এ কারণে দেশ স্বাধীনের পরে ১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্টারপ্রাইজ (ন্যাশনালাইজেশন) অর্ডার ১৯৭২ এর আওতায় সব পাটকল জাতীয়করণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একই বছর বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন (বিজেএমসি) প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি পাট শিল্পের উন্নয়নে পঞ্চবার্ষিক (১৯৭৩-৭৮) পরিকল্পনার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরই) প্রতিষ্ঠা করেন। পাটখাত নিয়ে তার গঠনমূলক উদ্যোগের ফলে পাট মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে স্বপরিবারে হত্যার পর পাটখাতে নেমে আসে ভয়াবহ বিপর্যয়। লোকসানের কারণ দেখিয়ে নামমাত্র মূল্যে ব্যক্তিমালিকানায় ছেড়ে দেওয়ার নামে পাটশিল্পকে ধ্বংসের মুখে ফেলে দেওয়া হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ সরকারের ধারাবাহিক পৃষ্ঠপোষকতা পাটের হারানো ঐতিহ্যকে পুনরুদ্ধার এবং অধিক সমৃদ্ধশালী করতে সক্ষম হয়েছে। বিশ্বব্যাপী পরিবেশের ওপর প্লাস্টিক ও পলিথিনের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টি হওয়ায় বিকল্প হিসেবে প্রাকৃতিক তন্তু ব্যবহারের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে পরিবেশবান্ধব সোনালি আঁশ-পাটের বহুমুখী ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০’ এবং এ সংক্রান্ত বিধিমালা দেশের পরিবেশ রক্ষায় ও জনস্বার্থ সুরক্ষায় ইতিবাচক ধারা সৃষ্টি করেছে। ‘পাট আইন-২০১৭’ ও ‘জাতীয় পাটনীতি-২০১৮’ পাটখাতের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক হিসেবে কাজ করছে। পাট পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকার বহুমুখী পাটজাত পণ্যের উদ্ভাবন, ব্যবহার সম্প্রসারণে গুরুত্বারোপ করেছে। বহুমুখী পাট পণ্যের এ সম্প্রসারণ একদিন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে যাবে বলে আশা করে তিনি বলেন, যা বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকাকে আরও গতিশীল করতে ভূমিকা রাখবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বিশ্বসভায় প্রতিষ্ঠিত করা। এই সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠায় পাট ও পাটজাত পণ্য আমাদের অন্যতম হাতিয়ার হবে বলে আমার বিশ্বাস। জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ায় সোনালি আঁশ পাটের সোনালি অধ্যায় আজ আর স্বপ্ন নয়। আমাদের সরকারের সময়োপযোগী ও ইতিবাচক পদক্ষেপের কারণে পাটখাত আজ দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় এক অন্যতম অনুষঙ্গ। পাট বিষয়ে আমাদের আছে দক্ষ পাট চাষি, আছে আধুনিক উপযোগী জাত, উন্নত উৎপাদন প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনা, আর আছে বহুমুখী ব্যবহারের বিভিন্ন পাট পণ্য এবং ব্যবহারের বিভিন্ন উপযোগী ক্ষেত্র।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি মনে করেন, সরকারি-বেসরকারি সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় পাট চাষ ও পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধির মাধ্যম দেশের গ্রামীণ অর্থনীতি, দারিদ্র্য বিমোচন এবং সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে আরও বহুদূর। তিনি ‘জাতীয় পাট দিবস-২০২২’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন। (খবর বাসস)




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!