করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বাগেরহাটে চলছে লকডাউনের তৃতীয় দিন। শুরু হওয়া এই লকডাউন ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে। লকডাউনের ফলে বাগেরহাটে দূরপাল্লার পরিবহনসহ সব গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলায় লোকজনের চলাচল বন্ধ আছে।
জেলার প্রবেশদ্বারসহ শহরের গুরুত্বপূর্ন পয়েন্টে চেকপোষ্ট বসানো হয়েছে। আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে টহল দিচ্ছে। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হলেই আইনশৃংখলা বাহিনীর জেরার মুখে পরতে হচ্ছে জনসাধারণদের। বাগেরহাট পৌর এলাকাসহ জেলায় টহল দিচ্ছে
ভ্রাম্যমাণ আদালতের ৮টিম। জরুরি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো গুলো ছাড়া লকডাউন এর প্রথম দিনে জেলায় অভ্যন্তরীণ ১৬টি রুটে সব ধরনের যাত্রীবাহী গণপরিবহন ও দোকানপাট বন্ধ রয়েছে।
বাগেরহাট শহর ও উপজেলা সদরে অধিকাংশ চায়ের দোকানসহ মাঝেমধ্যে দুই একটি খোলা দেখা গেছে। আজ ছুটির দিন শনিবার থাকার কারণে জনসাধারণের উপস্থিতি অনেক কম। লোকজন মাস্ক ছাড়াই ঘোরা ফেরা ও বেচাকেনা করছে। এই অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি না মানায় ৮টি ভ্রাম্যমাণ আদালত গত ২৪ ঘন্টায় মোট ৪১ জনের কাছ থেকে ৪১ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা আদায় করেছে।
দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে বিষয়টি প্রাধ্যান্য দিয়ে মোংলা বন্দর এই লকডা্উনের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে। মোংলা বন্দর জেটি ও পশুর চ্যানেলে নোঙ্গর করা জাহাজের নাবিকরা মোংলা বন্দরে নামতে দেয়া হচ্ছে না।
এদিকে কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েও সংক্রমণের লাগাম টেনে রাখা যাচ্ছে না। সরকারি ছুটি থাকায় রেপিট এন্টিজে টেষ্ট না হওয়ায় শনিবার বাগেরহাটে কমেছে করোনা সংক্রমণ হার। খুলনার পিসিআর ল্যাবে আরও ৭৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে ১৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের।
আক্রান্তদের মধ্যে ফকিরহাট উপজেলায় ১১ জন, মোল্লাহাটে ২ জন, রামপালে ১ জন ও চিতলমারীতে ১ জন। আক্রান্তের হার ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলায় করোনা সংক্রমণের হার প্রায় ৩০ শতাংশ কমে ২০.৫৪ শতাংশে দাড়িয়েছে। এই নিয়ে বাগেরহাট জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাড়াল ২ হাজার ৮৮২ জনে। এ পর্যন্ত মারা গেছে ৭৭ জন। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৩৪ জন। বাগেরহাট স্বাস্থ্য বিভাগ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কে এম হুমায়ুন কবির বলেন, বাগেরহাট জেলায় গত দুই সপ্তাহ ধরে সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলায় প্রথমে মোংলাতে সংক্রমণ বাড়তে থাকে। পরে তা আশেপাশের উপজেলাগুলোতেও ছড়াচ্ছে। হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ছে। সংক্রমণ রোধের একটাই উপায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চললে লকডাউন দিয়ে কোন উপকারে আসবে না। সংক্রমণরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন, নিজে সুস্থ থাকুন অপরকে সুস্থ রাখতে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
খুলনা গেজেট/এনএম