বাগেরহাটে মিধিলি‘র প্রভাবে সৃষ্ট ঝড়ো বাতাস ও টানা বৃষ্টিতে ১৫ হাজার ২৫৪ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে আমন ধানের। ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার জন্য নতুন ফসল চাষের পরিকল্পনা করছেন কৃষকরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় ১০ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমির আমন ধান, ৩ হাজার ২০৫ হেক্টর জমির খেসারী ডাল, ৯১০ হেক্টর জমির শীতকালীন সবজিসহ বিভিন্ন পরিমানের জমির গম, সরিষা, মরিচ, পেপে, কলা, পান, ধনীয়া, বীজতলা, কালোজিরা, মশুর, মটর ডাল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে টাকার অংকে কি পরিমান ক্ষতি হয়েছে জানাতে পারেনি সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি। অন্যান্য সময় ঘূর্নিঝড়ে মাচ চাষীদের ব্যাপক ক্ষতি হলেও, এবার মাছ চাষীদের কোন ক্ষতি হয়নি।
চাষীরা বলছেন, মিধিলার প্রভাবে হঠাৎ বৃষ্টি ও ঝড় এসে আমাদের সবজি, আমন ধান ও বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হয়েছে। এই ক্ষতি পুষিয়ে আনতে অনেক কষ্ট হবে।
মোল্লাহাট উপজেলার কৃষক ফয়সাল আহমেদ বলেন, বৃষ্টির সাথে ঝড়ো বাতাসে আমার শতাধিক পেপে গাছ পড়ে গেছে। প্রতিটি গাছে দুই মনের উপর পেপে ছিল। এখন অনেক কম দামে কাচা পেপে বিক্রি করতে হবে।
ফকিরহাট উপজেলার বেতাগা গ্রামের আমন চাষী তারক দাস বলেন, বৃষ্টিতে যা ক্ষতি করেছে, তা বলে বোঝানো যাবে না। মনে হচ্ছে কেউ পাকা ধানে মই দিয়ে গেছে।
একই এলাকার বৃদ্ধ বাসুদেব রায় বলেন, তিন বিঘা জমিতে আমন ধান লাগিয়ে ছিলাম। মোটামুটি ভালই ফলন হয়েছিল। কিন্তু একদিনের মধ্যে সব ধান নুয়ে পড়েছে। আর বৃষ্টি না হলেও, ধানের ফলন অর্ধেকে নেমে আসবে। শেষ মুহুর্তের দূর্যোগের ক্ষতি কোনভাবে পোষানো যায় না।
বোরো ধান চাষী ইউনুস শেখ বলেন, প্রায় ১০ কেজি ধানের বীজ তলা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আবার ধান কিনে নতুন করে বীজতলা প্রস্তুত করে বুনতে হবে। আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি ধান রোপনের ক্ষেত্রেও পিছিয়ে গেলাম।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাগেরহাটের উপ-পরিচালক শঙ্কর কুমার মজুমদার বলেন, ঘূর্নিঝড় মিধিলার প্রভাবে সৃষ্ঠ ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টিতে আমাদের ১৫ হাজার ২৫৪ হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হয়েছে। সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে আমন ধান। আমরা টাকা অংকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান জানার চেষ্টা করছি। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/এমএম