খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বাস-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে দুইজন নিহত
  মিরপুরে গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ, নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৭
  সাবেক প্রধান বিচারপতির মৃত্যুতে আজ সুপ্রিম কোর্টের বিচারকাজ বন্ধ
  সিইসিসহ নতুন নির্বাচন কমিশনারদের শপথ আজ

বাগেরহাটে মৃত সন্তান প্রসবের অপরাধে গৃহবধুকে মারধর

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট

বাগেরহাটের রামপালে মৃত সন্তান প্রসবের অপরাধে ঝর্ণা বেগম (৩৭) নামের এক গৃহবধুকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী ও বড় সতীনের বিরুদ্ধে। চার দিন ধরে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন স্বামী-সতীনের মারধরে আহত ওই গৃহবধু। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন রামপাল থানা পুলিশ।

ঝর্ণার পরিবার সূত্রে জানাযায়, বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ঝর্ণা বেগম রামপাল উপজেলার কুমলাই গ্রামের গোলাম মোস্তফার মেয়ে। প্রথম বউয়ের কোন সন্তান না হওয়ায় ২০২০ সালের ৩ জুলাই পারিবারিকভাবে ঝর্ণাকে বিয়ে করেন একই গ্রামের তৈয়ব ফকিরের ছেলে ব্যবসায়ী হান্নান ফকির। বিয়ের কিছুদিন পরে ঝর্ণার গর্ভে সন্তান আসে। কিন্তু ঝর্ণার সন্তান গর্ভে-ই মারা যায়। ২০২১ সালের ৭ মার্চ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সিজার করে মৃত সন্তান অপসারণ করা হয়। মৃত সন্তানের শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই স্ত্রীকে দেন মোহরের টাকা দিয়ে তালাকের ঘোষণা দেন হান্নান ফকির। মারধর, লাঞ্চতা ও শত অবহেলা সহ্য করে শুধু সংসারের আশায় পড়ে থাকেন স্বামীর বাড়িতে। কিন্তু হান্নান ও তার বড় বউয়ের অত্যাচার থামে না। সর্বশেষ ১০ আগস্ট সকালে বড় বউকে সাথে নিয়ে হান্নান ফকির ঝর্ণাকে বেদম মারধর করেন। এতে গুরুত্বর আহত হন ঝর্ণা বেগম। এর কয়েকদিন আগেও একই ভাবে ঝর্ণাকে মারধরকে হান্নান ও তার বড় স্ত্রী। তখন রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছিলেন ঝর্ণা বেগম।

আহত ঝর্ণা বেগম বলেন, আমার কোন অপরাধ নেই, গর্ভের সন্তান মরে যাওয়াটাই আমার অপরাধ। সন্তান মারা যাওয়ার আগে সে আমার সাথে ভাল ব্যবহার করত। সন্তান মারা যওয়ার পর প্রায় সময় আমার স্বামী আমাকে বলে “তোকে আমি রাখব না, তুই চলে যা। তোকে আমার আর দরকার নেই। আমি আবার বিয়ে করব। কাবিনের ৫০ হাজার টাকা নিয়ে তুই আমার বাড়ি থেকে বিদায় হ। ” যেভাবে হোক আমি আমার স্বামীর সংসারে টিকে থাকতে চাই এই বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন ঝর্ণা বেগম।

ঝর্ণার ভাই রাসেল গোলদার বলেন, সতীনের সংসার হলেও বিয়ের পরে ভালই ছিল আমার বোন। বোন জামাইয়ের ব্যবসার জন্য আমরা বিভিন্ন সময় লক্ষাধিক টাকাও দিয়েছি। কিন্তু বোনের গর্ভে সন্তান মারা যাওয়ার পরেই বোন জামাই হান্নান আমার বোনের উপর অত্যাচার শুরু করে। আমরা এর বিচার চাই।

একটা মেয়ের সন্তান মারা যেতেই পারে। এখানেতো মানুষের কোন হাত নেই। এ জন্য আমার মেয়ের উপর অমানুষিক অত্যাচার চালাতে হবে। এটা কোন ধরণের কাজ। এই বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন ঝর্ণার বৃদ্ধ বাবা গোলাম মোস্তফা।

হান্নান ফকির বলেন, প্রথম স্ত্রীর সন্তান না হওয়ায় আমি ঝর্ণাকে বিয়ে করি। কিন্তু ঝর্ণা যেসব অভিযোগ করেছে তা সব মিথ্যা।

রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ সামছউদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে এখনও থানায় কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করব।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!