বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের প্রায় অর্ধ-শত পরিবারের বাড়ি পানিতে নিমজ্জিত। বর্ষা মৌসুমে পানি নিস্কাশন না হওয়ার কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় এদের। পরিবারগুলির বাড়ির আঙিনা, চলাচলের রাস্তা, এমনকি বাড়ির রান্নাঘরও পানিতে নিমজ্জিত থাকে। বাড়ির বৃদ্ধ ও শিশুদের নিয়ে পরিবারগুলি পড়ে বিপাকে।
জানা যায়, খানপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড দক্ষিণ খানপুর গ্রামের ৫০ থেকে ৮০ টি পরিবারের এ দুর্দশা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পরিবারগুলির বাড়ির আঙিনা ৬ ইঞ্চির উপরে পানি। অনেকের রান্না ঘরে পানি উঠেছে। তাদের বাড়ি থেকে বের হবার পথটিও পানিতে নিমজ্জিত। একই গ্রামের সরোবর এর বাড়ি হতে মোশাররফ এর বাড়ি পর্যন্ত গ্রামবাসীর চলাচলের একমাত্র এক কিলোমিটার দুরত্বের কাঁচা রাস্তাটিও পানিতে নিমজ্জিত। এলাকার বাড়ি-ঘর, যাতায়াতের রাস্তা, কবরস্থান, ফসলি জমিসহ সব স্থানে পানি ও কাদা। এলাকায় অবস্থিত মহিলা মাদ্রাসাটির আঙিনাও পানির নিচেই।
মো: মজিবর মল্লিক, আলম শেখসহ স্থানীয় কয়েকজন তাদের দুর্ভোগের কথা ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে সার্বক্ষণিক তাদের পানি বন্দী হয়ে থাকতে হয়। যাতায়াত করতে অসুবিধা হয়। চিকিৎসা সহ অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনে যাতায়াতের জন্য অনেক সময় ব্যয় হয়। ভ্যান বা অন্যান্য যানবাহন এলাকায় ঢোকে না।’ চারিপাশে পানি থাকায় তাদের ছোট ছোট শিশু সন্তান নিয়ে অভিভাবকদের সব সময় উদ্বিগ্ন থাকতে হয়। সাপ, পোকা আর অন্যান্য অসুবিধার চিন্তাতো রয়েছে। অনেকের রান্নাঘরে পানি উঠে আসে, তখন ওই পরিবারটির রান্না-বান্নাসহ খাবার তৈরির অনেক অসুবিধায় পড়তে হয়।
এলাকার সমাজ সেবক ফজলুর রহমান জানান, বছরের প্রায় ৬ মাস তাদের এ রকম জীবন-যাপন করতে হয়। বর্ষা মৌসুমে কেহ মারা গেলে তাকে দাফন করাও কঠিন হয়ে পড়ে।
কথা হয় সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো: ইলিয়াজ হোসেনের সাথে। স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের মতো তিনিও একই সমস্যার কথা বলেন। এই জলাবদ্ধতার কারণ হিসাবে জানা যায়, “ যার যার মৎস্য জমির পানি আটকিয়ে মাছের চাষ করছেন চাষীরা, ফলে গ্রামে পানি খালে প্রবাহিত হবার সুযোগ নেই।
খোঁজ-খবর নিয়ে দেখা যায়, সরকারি খালের পানি সরবরাহ সঠিকভাবে চলছে। কিন্তু খালের উপরের জমিগুলো থেকে পানি খালে নিস্কাশন হচ্ছে না। ফলে এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।
এলাকার সচেতন মহল মনে করেন, সুষ্ঠু পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা থাকলে এ জলাবদ্ধতার সমাধান হতো। আর এতোগুলি পরিবারের লোকজন জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পেতেন।
এ ব্যাপারে খানপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফকির ফহম উদ্দিন জানান, “ বর্ষা মৌসুমে এই গ্রামে লোকজনদের এই অসুবিধায় পড়তে হয়। প্রয়োজনীয় বরাদ্ধ পেলে রাস্তা-ঘাটের মাটি ভরাট সহ পানি নিস্কাশনের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম