বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার কালিখোলা বলভদ্রপুর কালিমন্দির-বালিয়াডাঙ্গা সড়ক নির্মান কাজে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করেছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ডিজি বাংলা।নিম্নমানের খোয়া দিয়ে কাজ করার প্রতিবাদ করায় স্থানীয়দের মারপিট করার অভিযোগ উঠেছে খোয়া সরবরাহকারীর বিরুদ্ধে।
সড়ক নির্মানে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহারের বিষয়টি জানাজানি হলে বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের বলভদ্রপুর এলাকায় নির্মানাধীন সড়ক পরিদর্শন করে কাজ বন্ধ ও সড়কে ব্যবহৃত নিম্নমানের খোয়া অপসারণের আদেশ দেন মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম।ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দাবি, বিএনপি নেতা সাবেক ইউপি সদস্য বাবুল শেখ এই খোয়া সরবরাহ করছেন। সঠিক মানের খোয়া দিয়ে সড়ক নির্মানের দাবি স্থানীয়দের।
স্থানীয় জায়েদ শেখ নামের এক ব্যক্তি বলেন, খোয়া এত পচাঁ যে চাপ দিলেই ভেঙ্গে যায়। রাবিশ খোয়া দিয়ে রাস্তা করা যাবে না এটা বললে, খোয়া সরবরাহকারী মাহবুবুল হক বাবুল ওরফে বাবুল মেম্বর আমাকে ও আমার ছোট ভাইকে মারধর করে। আমরা তার বিচার চাই।
স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য হেমায়েত শেখ বলেন, সড়কটি নির্মানের শুরু থেকেই মাহবুবুল হক বাবুল শেখ নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি নানা জটিলতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছে। এখন নিম্ন মানের খোয়া দিয়ে রাস্তা করার চেষ্টা করছে। লোকজন বাঁধা দিলে বিএনপি নেতা পরিচয় দিয়ে তাদের মারধর করে এবং ভয় ভীতি দেখায়। বিএনপি-আওয়ামী লীগ বুঝিনা আমাদের দাবি একটাই রাস্তা নির্মান হবে ভাল খোয়া দিয়ে।
স্থানীয় পাপিয়া বেগম নামের এক নারী বলেন, খোয়া এত খারাপ যে মাটির সাথে মিশে যাচ্ছে। পানি লাগলে গলে যাচ্ছে। এই রাস্তায় তো আমরাই হাটব। এভাবে দিলেতো কয়েক দিনের মধ্যে নষ্ট হয়ে যাবে। শক্ত খোয়া ও ভাল মানের পন্য দিয়ে সড়ক নির্মানের দাবি জানান এই নারী।
নিম্নমানের খোয়া ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সড়কের দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলী মো. মোরশেদ বলেন, সরবরাহকারী ভাল খোয়া দেখিয়ে আমাদের নিম্নমানের খোয়া দিয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলীর নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা খোয়া অপসারণ শুরু করেছি। ভাল মানের নির্মান সামগ্রী দিয়েই কাজ করা হবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য খোয়া সরবরাহকারী মাহবুবুল হক বাবুল ওরফে বাবুলকে মুঠোফোনে কল করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেই সাথে ঠিকাদারকে সড়কে ব্যবহার করা নিম্নমানের খোয়া অপসারণ করতে বলা হয়েছে। ঠিকাদার নিম্নমানের খোয়া অপসারণ শুরু হয়েছে। ভালমানের নির্মান সামগ্রী দিয়েই কাজ করতে হবে। সড়কের কাজে কোনভাবে নিম্নমানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহার করতে পারবে না বলেও জানান এই প্রকৌশলী।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলীল দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)‘র কালিখোলা বলভদ্রপুর কালিমন্দির-বালিয়াডাঙ্গা পর্যন্ত ২কিলোমিটার পিচের সড়ক ও একটি কালভার্ট নির্মান হচ্ছে। ২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ডিজি বাংলা নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি করছে। চলতি বছরের ৩০ জুন কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও, সময় বৃদ্ধি করেছে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ।
খুলনা গেজেট/এএজে