বাগেরহাটে প্রথমবারের মত প্রকাশ্যে বিক্ষোভ করেছে কোটা আন্দোলনকারীরা। রোববার (৪ আগষ্ট) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে আদালত চত্তরের সামনে মিছিল শুরু করে ভৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে খুলনা-বাগেরহাট মহাসড়কের বিক্ষোভ করেন অসহযোগ আন্দোলনকারীরা। তারা সড়কের পাশে থাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কার্যালয়ে ভাংচুর চালায় এবং সরকার বিরোধী স্লোগান দেয়।
কিছুক্ষনের মধ্যেই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও সহযোগী সংগঠনের সদস্যদের সাথে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এতে ৩ সংবাদকর্মী, স্বেচ্ছাসেবকলীগের তিন নেতাসহ অন্তত ১০জন আহত হয়েছেন। এতে প্রায় ঘন্টা দুয়েক যান চলাচল বন্ধ থাকে খুলনা-বাগেরহাট মহাসড়কে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
আহত সংবাদকর্মীরা হলেন, বাংলা টিভির বাগেরহাট প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল ইমরান, প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকার শেখ সোহেল এবং ঢাকা পোস্টের আবু তালেব।
ভিডিও চিত্র ধারণ করায় বাংলা টিভির বাগেরহাট প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল ইমরানের মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙ্গে ফেলেন।
পরে বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে মিছিল করতে দেখা যায়। মিছিল থেকে জামাত-শিবিরকে প্রতিহতের স্লোগান দেওয়া হয়।
এদিকে মংলা-খুলনা মহাসড়কের ফয়লা এলাকায় মিছিল করেছে কোটা আন্দোলনকারীরা। এসময় সহস্রাধিক আন্দোলনকারীরা পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। আন্দোলনকারীদের হামলায় দুই পুলিশ সদস্য ও দুই সংবাদকর্মী আহত হয়। স্থানীয় আওয়ামী লীগের ২টি অফিসও ভাংচুর করেন আন্দোলনকারীরা।
রামপালে আহত সংবাদকর্মীরা হলেন, প্রেসক্লাব রামপালের সভাপতি সবুর রানা ও সাধারণ সম্পাদক সুজন মজুমদার।
প্রেসক্লাব রামপালের সভাপতি সবুর রানা বলেন, পুলিশের গাড়িতে আগুন দেওয়া ছবি তুলতে গেলে আন্দোলকারীরা আমার ক্যামেরা কেড়ে নেয়। সুজন মজুমদার ও আমাকে মারপিট করে তারা। তাদের হামলায় রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোমেন দাশ ও ওসি তদন্ত বিধান বিশ্বাস আহত হয়।
ওসি সোমেন দাশ বলেন, আন্দোলনকারীরা পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল ছোড়ে। তাদের ছোড়া ইট আমার হাত ও পায়ে লেগেছে।
এছাড়া বিকালে খুলনা-ঢাকা মহাসড়কের ফকিরহাটের কাটাখালি মোড় এলাকায় অবস্থান নিয়ে সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় অসহযোগ আন্দোলনকারীরা। কাটাখালি এলাকা থেকে দুটি এ্যাম্বুলেন্সসহ কয়েকটি যানবাহন ভাংচুরের খবর পাওয়া গেছে।
বাগেরহাট জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ন আহবায়ক সরদার আব্দুল কাদের বলেন, জামাত-শিবিরের লোকজন দলীয় অফিস ভাংচুর করেছে। তাদের হামলায় পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ন আহবায়ক শঙ্কর কুমার সাহা, বারুইপারা ইউনিয়নের যুগ্ন আহবায়ক জিলানী আহমেদ ও সদস্য মো. হাসান শেখ আহত হয়।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আছাদুজ্জামান বলেন, মহাসড়কের উপরে আন্দোলনকারীরা সমবেত হয়। এখানে আমাদের জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও আদালত ভবন রয়েছে। আমাদের পুলিশ সদস্যরা আগে থেকেই ছিলেন। পুলিশ তাৎক্ষনিকভাবেই তাদেরকে সরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
খুলনা গেজেট/এএজে