বাগেরহাটের কচুয়ায় তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া ও আকারে বড় হওয়ায় তরমুজ বিক্রি করে চাষিরাও ভালো দাম পাচ্ছেন।
কচুয়া উপজেলার মঘিয়া ইউনিয়নের চর সোনাকুড় মাঠের তরমুজখেতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গাছ থেকে পাকা তরমুজ ছিঁড়ে বস্তায় ভরে নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন শ্রমিকরা। তরমুজ ছেঁড়া, বাছাই ও পরিবহনের কাজ করছেন প্রায় চার শতাধিক শ্রমিক।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, প্রতি একর জমিতে ১৫শ থেকে ১৮শ পিস তরমুজ রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং কৃষি বিভাগের পরামর্শে চাষ করায় তরমুজের আকারও হয়েছে অনেক বড়। এবার প্রতিটি তরমুজের আকার হয়েছে ৫ কেজি থেকে ২০ কেজি পর্যন্ত। প্রতি একর জমিতে তরমুজ চাষে ব্যয় হয়েছে ২৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা। আর বিক্রি হয়েছে দেড় থেকে আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত। কৃষকদের এই উৎপাদিত তরমুজ ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
তরমুজচাষি মিজানুর খান বলেন, সাত-আট বছর ধরে তরমুজ চাষ করছি। মাশাল্লাহ এ বছর ফলনও ভালো হয়েছে। গত বছর তরমুজ চাষ করে লোকসানে পড়তে হয়েছিল। এ বছর ছয় একর জমিতে তরমুজের আবাদ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন হয়েছে। এ বছর বেশ লাভ হবে। ছয় একর জমিতে সাত লাখ টাকা খরচ হয়েছে। সার, কীটনাশকের দাম বেশি হওয়ায় খরচ একটু বেশি হয়েছে।
ইব্রাহিম ফকির বলেন, এ বছর পাঁচ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। ইতোমধ্যে পাইকারদের কাছে দুই একর জমির তরমুজ বিক্রি করেছি সাড়ে চার লাখ টাকায়। খেতে যে তরমুজ অবশিষ্ট আছে, আবহাওয়া ঠিক থাকলে সেগুলো আরও বেশি দামে বিক্রি হবে।
আবদুল মান্নান নামে আরেক চাষি বলেন, প্রতি হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষে খরচ পড়ে প্রায় দুই লাখ টাকা। ফলন ভালো হলে তরমুজ বিক্রি করে এক লাখ টাকার বেশি লাভ হয়। প্রতি সপ্তাহে একবার তরমুজ তোলা যায়। অনেক পাইকাররা খেত থেকেই তরমুজ কিনে নিয়ে যান।
তরমুজখেতের শ্রমিকদের প্রধান কাদের মুন্সি বলেন, প্রতি বছর এই সিজনে মাঠে প্রায় চার থেকে পাঁচশ শ্রমিক কাজ করে। তরমুজ গাছ থেকে কেটে আনা থেকে গাড়িতে ওঠানো পর্যন্ত সব আমাদের করতে হয়। সারাদিন কাজ করে প্রায় হাজার টাকা করে পেয়ে থাকি।
পাইকারি ব্যবসায়ী নজরুল শেখ বলেন, এই মাঠ থেকে আমি প্রায় ১ কোটি টাকার তরমুজ কিনেছি। এগুলো আমরা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন মোকামে বিক্রি করে থাকি। যে মোকামে দাম ভালো থাকে সেখানে যোগাযোগ করে পাঠিয়ে দেই।
কচুয়া উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জিব কুমার মল্লিক বলেন, উপজেলার মঘিয়া ইউনিয়নে এবার ১৫০ একর জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে। শুরু থেকে কৃষি বিভাগ চাষিদের পাশে ছিল। আগামীতে তরমুজের চাষ বৃদ্ধি করতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছি। আশা করছি আগামী বছর তরমুজের চাষ আরো বৃদ্ধি পাবে।
খুলনা গেজেট/এএজে