বাগেরহাটে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে বিকাশ এজেন্ট মো. রমজানের ৭ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগে দুই কারারক্ষীকে আটক করেছে পুলিশ। এদের কাছ থেকে টাকা বহনের ব্যাগ ও ৬টি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার (০৪ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাগেরহাট সদর উপজেলার বাদেকাড়াপাড়া গ্রামে এই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।
ছিনতাইয়ের সময় প্রসাদ সরদার নামের এক কারারক্ষীকে আটক করেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশ মনিরুল ইসলাম নামের আরও এক ছিনতাইকারীকে আটক করে। তবে টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়া অপর ছিনতাইকারীর পরিচয় শনাক্ত হলেও, আটক করতে পারেনি পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন, যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার আছির সরদার ছেলে প্রসাদ সরদার (৩২) এবং চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার ফকিরপাড়া গ্রামের হেলালের ছেলে মনিরুল ইসলাম (৩০)। আটককৃত দুইজনই বাগেরহাট জেলা কারাগারের কারারক্ষী। আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ছিনতাইয়ের কবলে পড়া বিকাশ এজেন্ট মো. রমজান (২৫) বলেন, শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে দশানী মোড়ের দোকান বন্ধ করে মোটরসাইকেল চালিয়ে বাড়িতে রওনা দেই। বাড়ির গেটে পৌছানোর সাথে সাথে আমাকে গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে বলে হ্যান্ডকাপ লাগানোর চেষ্টা করে এবং আমার কাছে থাকা টাকা ও মুঠোফোনের ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। এক পর্যায়ে আমি ডাক চিৎকার দিলে, তারা মোবাইল ও টাকা ভর্তি ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমি দৌড়ে মোটরসাইকেলসহ প্রসাদ সরদারকে ধরতে সক্ষম হই। এরে মধ্যে ডাক চিৎকারে এলাকার লোকজনও চলে আসে। তবে ওরা আমার ব্যাগে থাকা প্রায় ৭ লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নেয়। আমি যেকোন মূল্যে আমার টাকা ফেরত চাই।
রমজানের প্রতিবেশী শেখ বোরহান উদ্দিন বলেন, রমজান চিৎকার দিলে আমরা সবাই বের হয়ে আসি। মনিরুল ইসলাম নামের ওই ছিনতাইকারীকে বেঁধে ফেলি। পরবর্তীতে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ মনিরুল ইসলামকে নিয়ে যায়। আমরা এই ছিনতাইকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এদিকে স্থানীয় নারী ইউপি সদস্য আবিদা সুলতানা বলেন, এর আগে বাদেকাড়াপাড়া এলাকালায় এক নারীর ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল মোটরসাইকেলে এসে। মাঝে মাঝে মোটরসাইকেলে অপরিচিত যুবকরা এলাকায় টহল দেয়। রমজান একজন সৎ ব্যবসায়ী। তার ছিনতাই হওয়া টাকা উদ্ধার করে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করেন তিনি।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মাসুদ রানা বলেন, ছিনতাইয়ের সময় স্থানীয়দের হাতে আটক মনিরুলের তথ্য অনুযায়ী প্রসাদ সরদারকে আটক করেছি। পরে দুইজনকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে একটি সুপারি বাগান থেকে টাকা ও মুঠোফোন রাখার ব্যাগ এবং ৬টি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের সাথে থাকা অপর ছিনতাইকারীকেও শনাক্ত করা হয়েছে। তাকে আটক ও টাকা উদ্ধারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের পূর্বক আদালতে সোপর্দের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
জেল সুপার শংকর কুমার মজুমদার বলেন, মনিরুল ও প্রসাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ রয়েছে। আটকের বিষয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
খুলনা গেজেট/ টিএ