আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে কোরবানির জন্য বাগেরহাটে ৩৭ হাজার পশু প্রস্তুত রয়েছে। শেষ মুহুর্তে পশুর যত্নে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন খামারীরা। তবে করোনা পরিস্থিতিতে নায্য মূল্য নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন খামারীরা। প্রাণি সম্পদ বিভাগ বলছে শঙ্কার কিছু নেই গতানুগতিক হাটের পাশাপাশি অনলাইনেও পশু বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বাগেরহাট জেলা প্রাণি সম্পদ সূত্রে জানা যায়, আসন্ন কোরবানি উপলক্ষে বাগেরহাট জেলায় ৩৬ হাজার্ ৯৮৫টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে ২৫ হাজার ৮৩১টি গরু, ৯ হাজার ৪৮৩ ছাগল, এক হাজার ৬২৩ ভেড়া, মহিষ ও অন্যান্য ৪৮টি। তবে প্রাণি সম্পদের পরিসংখ্যানের চেয়ে কোরবানির জন্য মোটাতাজাকরণ পশুর পরিমান বেশি বলে দাবি করেছেন খামারীরা।
বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার শুকদেব মজুমদার বলেন, প্রতিবছরই কোরবানির জন্য দু একটি ষাড় লালন-পালন করি। একটি বড় গরু পালন করেছি তিন বছর ধরে, যার ওজন এখন ১২০০ কেজি। করোনা পরিস্থিতিতে বিক্রি করতে পারব কিনা জানিনা।
বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের সোহেল শেখ বলেন, কোরবানির জন্য প্রতিবছরই আমরা গরু পালন করি। এবারও আমার একটি গরু রয়েছে। অন্যান্য বছর কোরবানির একমাস আগে থেকে ব্যাপারী ও ক্রেতারা দাম বলা শুরু করে। কিন্তু এবছর এখনও কেউ দামও বলেনি।
বাগেরহাট সদর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের ফতেপুর এ্যাগ্রো ফার্মের মালিক ইলিয়াছ মোল্লা বলেন, আমার ফার্মে ৫ থেকে ৮ মন ওজনের ১৫টি গরু রয়েছে। এখনও একটিও বিক্রি করতে পারিনি। ব্যাপারিও আসেন না। অনলাইনে মোবাইল নাম্বার দিয়ে ছবি পোস্ট করেছি, কিন্তু কেউ ফোনও করে না। এই পরিস্থিতি থাকলে উপযুক্ত দামে গরু বিক্রি করতে পারব কিনা তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।
বাগেরহাট সদর উপজেলার গোটাপাড়া এলাকার খামারী রুহুল আমিন গাজী বলেন, গরু লালন পালনই আমার পেশা। প্রতিবছর ৪-৫টি গরু বিক্রি করি। এবছর বিক্রির উপযোগী ৬টি গরু রয়েছে। দুই একজন ক্রেতা আসেন, তা যে দাম বলে তাতে খাবারের ব্যয়ও উঠবে না। উপযুক্ত দামে বিক্রি করতে না পাড়লে আমাদের পথে বসতে হবে।
শুধু ইলিয়াছ মোল্লা, রুহুল আমিন গাজী নয়, বাগেরহাট জেলার বেশিরভাগ পশুর খামারী একই রকম শঙ্কায় রয়েছেন।
বাগেরহাট জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. লুৎফার রহমান বলেন, বাগেরহাটে ৩০ থেকে ৩২ হাজার কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে। চাহিদার থেকে প্রায় ৫ হাজার বেশি পশু প্রস্তুত রয়েছে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্যান্য জেলা ও বড়বড় শহরে বাগেরহাটের পশু বিক্রি হবে। খামারীদের সুবিধার জন্য প্রতি উপজেলায় আমরা অনলাইনে পশু বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছি। সরকারের ঘোষনা অনুযায়ী হাট বসানোর জন্যও আমাদের প্রস্তুতি চলছে। বাগেরহাট জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে স্বাস্থ্য বিধি মেনে যত দ্রুত সম্ভব কোথায় কোথায় হাট হবে বিষয়টি খামারীদের জানিয়ে দেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/ টি আই