খুলনা, বাংলাদেশ | ২৯ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১৪ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  বাড্ডা থানার আলামিন হত্যা : আনিসুল হকের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
  ইসরায়েলি সেনা ক্যাম্পে হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলা, নিহত ৪

বাগেরহাটে কৃষকলীগ নেতা হত্যার বিচারের দাবিতে বৃদ্ধ মায়ের সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক,বাগেরহাট

বাগেরহাটের মোংলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে কৃষক লীগ নেতা অনিরুদ্ধ মন্ডল ছুটি (৩৭)‘র হত্যাকারীদের বিচার চেয়েছেন স্বজনরা। উপরন্তু হত্যার অভিযোগে করা মামলার বাদীকে হুমকি-ধামকী দিচ্ছেন আসামীরা। বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন নিহত অনিরুদ্ধের বৃদ্ধ মা ব্রজরানী মন্ডল। এসময়, হত্যার শিকার অনিরুদ্ধ মন্ডলের ভাই অনিন্দ মন্ডল, অনুপম মন্ডল, অলোক মন্ডল, ভাইয়ের স্ত্রী মুক্তা মন্ডল, স্থানীয় ডা. বিদ্যুৎ বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন।

অনিরুদ্ধ মন্ডল বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার সানবান্ধা গ্রামের অখিল মন্ডলের ছেলে। সে মোংলা উপজেলা কৃষকলীগের নেতা ছিলেন। এ ঘটনায় গেল ১৭ আগস্ট অনিরুদ্ধের ভাই অনুপম মন্ডল বাদী হয়ে বাগেরহাট আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তের জন্য মোংলা থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

সন্তান হারা মা ব্রজরানী মন্ডল বলেন, আমার ছেলে অনুরুদ্ধ মন্ডল ছুটি (৩৭) ও অনিন্দ সুন্দর মন্ডল (৪০) সানবান্ধা গ্রামে ৭ একর ৬৯ শতক জমিতে মৎস্য ঘের করত। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের প্রতিবেশী অংশপতি মন্ডল (৪৭), নৃপতি মন্ডল (৫০), রনি মন্ডল (২৩) ও হুড়কা এলাকার অনিমেশ মন্ডল (৪৭) আমাদের ওই জমি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করে আসছে। ঘের ছেড়ে দিতে আমার ছেলেদের হত্যারও হুমকি দিয়েছিল তারা। তাদের হাত থেকে রক্ষা পেতে বিভিন্ন সময় মোংলা থানা এবং পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে দরখাস্তও দিয়েছি। এরপরেও তারা থামেনি।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ২৮ জুলাই রাতে রামপাল উপজেলার গোনার বাজার আব্দুল্লার চায়ের দোকান থেকে অনিমেশ মন্ডল আমার ছেলে অনিরুদ্ধকে জোরপূর্বক মোংলা বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে যায়। এরপর থেকে আর আমার ছেলেকে খুজে পাইনি। ওই রাতেই আমার ছেলেকে হত্যা করে তারা। পরে এক্সিডেন্টে মারা গেছে বলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। এবং ওই রাতে আমাদের জানানো হয়, অনুরুদ্ধ মন্ডল ছুটি দূর্ঘটনায় আহত হয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আছে। সাইমুম রশিদ অনিক নামের এক ব্যক্তির সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে আমার অন্য ছেলেদের নিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাই। সেখানে আমার সন্তানের মরদেহ পাই। সেখানে সাইমুম রশিদ অনিক ও শেখ মুকিত হাসান নামের দুইজন আমাদেরকে জানায় অনিরুদ্ধ মন্ডল মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় মারা গেছে। কিন্তু আমার ছেলের শরীরে দূর্ঘটনার কোন চিহ্ন ছিল না। তার পেটের বামপাশে দুটো ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। মাথায় এবং ঘাড়ে রডের আঘাতের চিহ্ন ছিল। ডান হাত ভাঙ্গা ছিল। আমার ছেলের পরিহিত লুঙ্গিটিও অখ্যাত অবস্থায় ছিল। তারপরও আমাদের বলা হচ্ছিল অনিরুদ্ধ এক্সিডেন্টে মারা গেছে।

পরে খুলনার বাসিন্দা সাইমুম রশিদ অনিক ও শেখ মুকিত হাসানের কাছ থেকে অনিরুদ্ধের এফজেড মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে পুলিশ। মোটরসাইকেল চুরির মামলা দিয়ে ওই দুইজনকে পুলিশ কারাগারে পাঠায়। মূলত এই দুই ব্যক্তিকে দিয়ে অংশপতি মন্ডল ও তার লোকজন আমার ছেলেকে হত্যা করিয়েছে। ছেলের হত্যাকারীদের বিচার দেখে মরতে চাই বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি।

মামলার বাদী অনুপম মন্ডল বলেন, মোংলা পৌরসভার আবহওয়া অফিসের পূর্বপাশে মোংলা বাস স্ট্যান্ড থেকে ইপিজেডগামী পাকা রাস্তার উপর আমার ভাই অনিরুদ্ধ মন্ডলকে হত্যা করেছে অংশপতির লোকজন। হত্যার বিষয়টি মোংলা থানায় বিষয়টি অবহিত করলে, পুলিশ আমাদের কাছ থেকে একটি দূর্ঘটনার অভিযোগ নেয়। ন্যায় বিচারের স্বার্থে আমরা আদালতে অংশপতি মন্ডলসহ ৬জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করি। মামলার পরে অংশপতি মন্ডল ও তার লোকজন আরও বেপরোয়া হয়ে যায়। মামলা উঠিয়ে নিতে আমাদের হুমকি-ধামকী দিতে থাকে। আমাদের ঘেরের মাছ লুট করে নিয়েছে তারা। আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের কঠিন বিচার চাই।

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!