খুলনা, বাংলাদেশ | ২৬ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১১ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  পিরোজপুরে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে শিশুসহ ৮ জন নিহত

বাগেরহাটে আবারও সয়াবিন তেলের সংকট

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট

বাগেরহাটের বিভিন্ন খুচরা বাজারে সয়াবিন তেলের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। ঈদের আগে এমন সংকটের খবরে বিভিন্ন দোকানে তেল কিনতে ভীড় জমাচ্ছেন ভোক্তারা। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তেল না পেয়ে একের পর এক দোকান ঘুরতে হচ্ছে ক্রেতাদের।

অন্যদিকে যেসব দোকানে তেল রয়েছে, তারা গায়ের মূল্যের থেকে লিটার প্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি দামে বিক্রি করছেন। খোলা তেলও বিক্রি হচ্ছে বোতল জাত তেলের থেকে বেশি দামে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, অগ্রিম টাকা দিয়েও কোম্পানি থেকে তেল পাচ্ছেন না।

বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে বাগেরহাট শহরের প্রধান বাজারসহ বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টাল স্টোর ঘুরে দেখা যায় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানে বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই। যেসব দোকানে বোতলজাত সয়াবিন তেল রয়েছে তারা ১৬০ টাকা বোতলের গায়ের রেটে ১৭০ টাকা লিটার বিক্রি করছেন। এছাড়া খোলা তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। অনেক অসাধু ব্যবসায়ী আবার বোতলজাত তেল টিনের পাত্র্রে ঢেলে বেশি দামে বিক্রি করছেন। ভোক্তারাও বাধ্য হয়ে কিনছেন অতিরিক্ত দামে।

বাজার থেকে তেল কেনা আশিক আরমান বলেন, সেমাই, চিনি ও সয়াবিন তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় কিছু পণ্য কিনতে বাজারে আসছিলাম। অন্যান্য সব পণ্য কিনে তিন দোকান ঘুরে এক দোকানে সয়াবিন তেল পেয়েছি। ১৬০ টাকা গায়ের দাম থাকলেও ১৭০ টাকায় রুপচাঁদা কোম্পানির এক লিটার তেল কিনেছি।

বোতল জাত তেল না পেয়ে ২০০ টাকা লিটারে তেল কিনে বাড়ি ফিরছেন আলমগীর হোসেন নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, রোজার সময় বিভিন্ন রান্নার জন্য তেল একটু বেশি লাগে। কয়েক দোকান ঘুরলাম বোতলজাত তেল পেলাম না, তাই বাধ্য হয়ে দুই লিটার খোলা তেল কিনেছি। জীবনে এই প্রথম ২০০ টাকা লিটার দিয়ে সয়াবিন তেল কিনলাম।

বাগেরহাট ছোটকবর খানা মোড়স্থ রিমা ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের স্বত্বাধিকারী কিশোর বলেন, এক সপ্তাহ ধরে কোম্পানি থেকে কোন তেল দিচ্ছে না আমাদের। গ্রাহকদের চাহিদা থাকা স্বত্তেও আমরা তেল বিক্রি করতে পারছি না।

বাগেরহাট বাজারের মুদি দোকানী বাবলু হাওলাদার বলেন, ২২ দিন ধরে ডিলাররা আমাদের তেল দেয় না। যা ছিল বিক্রি হয়ে গেছে। অনেক ক্ষেত্রে তেল দিতে না পারার কারণে কিছু কিছু ক্রেতা ফিরেও যাচ্ছে। তেল বিক্রি করতে না পারায় আমরা যেমন ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি, তেমন ক্রেতাও হাড়াচ্ছি।

রুপচাঁদা সয়াবিন তেলের বাগেরহাটের ডিলার তপন সাহা বলেন, ২ সপ্তাহ হল কোম্পানি থেকে আমাদের তেল দেয় না। তেলের জন্য টাকা পাঠাতে চাইলে তারা নিচ্ছেন না। যার ফলে খুচরা পর্যায়ে আমরা তেল দিতে পারছি না। কোম্পানি তেল না দিলে আমাদের কি করার আছে।

এসি আই তেলের ডিলার বিশ্বজিত পাল বলেন, দুই মাস আগে তেলের জন্য টিটি করে রেখেছি কিন্তু কোম্পানি এখনও তেল দিচ্ছে না। তাই বিক্রিও বন্ধ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাগেরহাট শহরের তেলপট্টি এলাকার এক ব্যবসায়ী বলেন, প্রতিটি কোম্পানিতে তেল রয়েছে। কোন কোম্পানিতে তেলের সংকট নেই। আরও এক দফা তেলের দাম বৃদ্ধির পায়তারা হিসেবে এই সংকটের নাটক চলছে। এছাড়া কিছু ডিলারের কাছে তেল রয়েছে। কিন্তু এসআরদের কাছে তেলের অর্ডার দিলে তারা তেলের সাথে আটাসহ বিভিন্ন পণ্য নিতে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ রয়েছে অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বাগেরহাটের সহকারি পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ইমরান বলেন, বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট রয়েছে। তাই বলে কেউ ইচ্ছেমত দাম বেশি নিতে পারবেন না। দাম বেশি নেওয়ার অপরাধে আমরা বিভিন্ন সময় ব্যবসায়ীদের জরিমানাও করেছি। বর্তমানে যদি কোন ব্যবসায়ী এ ধরণের কাজ করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।

বাগেরহাট জেলা বাজার কর্মকর্তা সুজিত খান বলেন, শুধু বাগেরহাট নয় সারা দেশেই সয়াবিন তেলের সংকট রয়েছে। আমরা ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলেছি। যেকোন মূল্য তেলের ব্যবস্থা করে ভোক্তা পর্যায়ে পৌছে দেওয়ার অনুরোধ করেছি।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!