খুলনা, বাংলাদেশ | ২৫ পৌষ, ১৪৩১ | ৯ জানুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  শরীয়তপুরের জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)’র ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
  রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদা ক্রম ঠিক করতে আপিল বিভাগে আবেদন, শুনানি ১৬ জানুয়ারি
  ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে মোটরসাইকেলের ধাক্কা, নিহত ২
  মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা আজহারের রিভিউ শুনানি ২৩ জানুয়ারি
  যাত্রীবাহী বাসের অ্যাম্বুলেন্সের সংঘর্ষে দুটোতেই আগুন, পুড়ে নিহত ৪

বাগেরহাটে আধিপত্যের জেরে বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ, হামলায় আহত ২৫

বাগেরহাটে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নিজ দলের সদস্যের বাড়িতে আগুন দিয়েছে প্রতিপক্ষরা। হামলা-পাল্টা হামলায় নারী-শিশুসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন।

বুধবার (০৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বাগেরহাট সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের কুলিয়াদাইড় গ্রামে বাড়ি-ঘরে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ওই ঘটনা ঘটে। এর আগে বিকেলে উভয় পক্ষের মধ্যে একাধিকবার হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ৫ আগস্টের পর থেকে বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ন আহবায়ক রুহুল আমিন ওরফে রুহুল মেম্বর ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের মধ্যে প্রকাশ্যে বিরোধ দেখা যায়। এনিয়ে উভয় পক্ষের লোকজনের মাঝে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। সম্প্রতি ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠন নিয়ে এই বিরোধ চরমে পৌছায়। সব শেষ সোমবার রাতে উভয় পক্ষের মধ্যে মারপিট ও মোটরসাইকেল ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ৫জন আহত হয়।

ওই ঘটনার জেরে আজ বুধবার দুপুরে ও বিকেলে উভয় পক্ষের লোকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে সন্ধ্যার দিকে শতাধিক লোকজন রুহুল মেম্বর ও তার ৭ ভাইয়ের বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। আগুনে পুড়ে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয় রুহুল মেম্বরসহ তার ৮ ভাইয়ের বাড়ি-ঘর।

রাত ৮টায় সরেজমিন ঘুরে, কয়েকটি ঘর ও কুটোর পালায় আগুন দেখা যায়। রুহুল মেম্বরসহ তার ৮ ভাইয়ের বসত ঘরের সব মালামাল সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। ৬টি মোটরসাইকেল, কয়েকটি ফ্রিজসহ মূল্যবান মাল জিনিস পুড়ে গেছে। আগুন নেভানোর জন্য স্থানীয়দের দেওয়া পানি রয়েছে ঘরের মেঝেতে। পুরুষ শূন্য বাড়িগুলোতে নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা বিলাপ করছেন। বসত ঘরের বাইরেও হামলা ও ভাংচুরের ক্ষত চিহ্ন, আগুন দেওয়া হয়েছে গোয়াল ঘর, হাস-মুরগির খোপ ও খড়ের গাঁদায়। বাড়ি থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে চিরুলিয়া স্কুল এ্যান্ড কলেজের সামনের ব্রিজের উপর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর উপস্থিতি দেখা যায়।

পুড়ে যাওয়া রুহুলের পরিবারের সদস্যদের দাবি, কয়েকদিন ধরে প্রতিপক্ষের লোকজন আমাদেরকে মারধরের চেষ্টা করছিল। এর জন্য আমাদের পুরুষরা গা ঢাকা দিয়েছিল। আর আজকে বাড়ির মধ্যে এসে আমাদের সবশেষ করে দিয়ে গেল।

রুহুল মেম্বর স্ত্রী রজিনা বেগম বলেন, আমার স্বামী রুহুল আমিন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হতে চায়। প্রতিপক্ষ আমাদের উপর হামলা করে, বাড়িতে থাকা টাকা পয়সা, স্বর্নালংকারসহ মূল্যবান মালামাল নিয়ে যায়। এক স্বৈরাচার খেদায়ে দেশে এ কোন স্বৈরাচার আনিছে। সাধারণ মানুষজন নিরিবিলি থাকতি পারতিছে না।

তিনি অভিযোগ করেন, প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের বাড়ি ঘরে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে।

রুহুল মেম্বরের ছোট বোন ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, আমার ভাই তালিম ভাইয়ের গ্রুপ করিছিল। প্রতিপক্ষরা বাড়িতে হামলা করে নারী, শিশু ও বৃদ্ধদেরও রক্তাক্ত জখম করেছে।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানকে ফোন করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

আগের দিনের ঘটনা নিয়ে গতকাল তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, রুহুল মেম্বরের ভাই আওয়ামী লীগের ক্যাডার শেখ রেজাউল করিম রেজার নেতৃত্বে সোমবার রাতে ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী ঢাল শড়কি ও ধারালো দা লাঠি নিয়ে হামলা চালিয় আমাদের ৫ নেতা কর্মীকে আহত করে। এসময় তারা আমাদের ৫টি মটর সাইকেল ও একটি অটো গাড়িসহ একটি দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করে।

বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মাসুম মোল্লা বলেন, সোমবার রাতে ভাংচুর করা মোটরসাইকেল নিয়ে আজ দুপুরে থানায় যাচ্ছিল আমার ভাই মামুন মোল্লা। তখন প্রতিপক্ষের লোকজন তার উপর হামলা করে। আমরা তার চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ছিলাম। এরই মধ্যে বিকেলে আমার আরেক ভাই মাহমুদ মোল্লাকে কুপিয়ে রাস্তার উপর ফেলে রেখে যায় প্রতিপক্ষরা। সন্ধ্যার দিকে তারা ঢাল শরকি নিয়ে আবারও বের হয়, তখন পুলিশও ছিল। এসময় আমাদের লোকজন তাদেরকে ধাওয়া করে, পরে তারা নিজেরা বাড়িতে আগুন দেয়।

বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মোঃ তৌহিদুল আরিফ বলেন, বিএনপির কাউন্সিল নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। গেল পরশুও মারামারি হয়েছে। এর জেরেই আজ দুইপক্ষে আবার মারামারি করেছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!