ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) নতুন নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি দলের জন্যই প্রত্যেকটি দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজ গুরুত্ব। পরবর্তী ওয়ানডে বিশ্বকাপের প্রায় আড়াই বছর বাকি থাকলেও এখনই বিশ্বকাপের হাওয়া লেগেছে দলগুলোর মাঝে। প্রতিটি সিরিজ আইসিসির ওয়ানডে সুপার লিগের অংশ হওয়ায় বাড়তি গুরুত্ব বহন করছে।
২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে পয়েন্ট অর্জন করার পাশাপাশি নিজের দল গোছাতে ব্যস্ত দলগুলো। ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে বাংলাদেশ দল গোছানোর কাজ শুরু করলেও শ্রীলঙ্কার শুরু বাংলাদেশ সফর দিয়ে। নিজেদের দল গোছাতে একগাদা সিনিয়র ক্রিকেটারকে বাইরে রেখে বাংলাদেশ সফরে দল পাঠিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
যেখানে জায়গা হয়নি শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটে পরীক্ষিত পারফর্মার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ও দীনেশ চান্দিমালের মতো ক্রিকেটারদের। বাংলাদেশ সফরে তারুণ্য নির্ভর দল পাঠিয়ে অনেকটা বাজি ধরেছে শ্রীলঙ্কা। বিপরীতে ঘরের মাঠে কুশল পেরেরার নেতৃত্বাধীন তারুণ্য নির্ভর শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ জিতলেই আইসিসির ওয়ানডে সুপার লিগের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ওঠে যাবে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে খেলা হওয়ায় সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে কিছুটা এগিয়ে থাকবে তামিম ইকবালেরর দল। যদিও সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বাংলাদেশের বিপক্ষে কথা বলছে।
এখন পর্যন্ত ওয়ানডে সুপার লিগে দুটি সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। যেখানে ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পূর্ণ ৩০ পয়েন্ট পেলেও নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে খালি হাতে ফিরে এসেছে টাইগাররা। সব ফরম্যাট মিলিয়ে সর্বশেষ ১০ ম্যাচে জয়হীন বাংলাদেশ। যদিও এসব ভুলে গিয়ে নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলে জয় পাওয়ার আশার কথা শুনিয়েছেন প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো।
২৩ মে দুপুরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে খেলতে নামার আগের দিন ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ডমিঙ্গো বলেন, ‘এটা ঠিক, ফলাফলের দিক থেকে আমরা খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। তবে গত দুই মাসের ভুলগুলি থেকে শিখতে হবে আমাদের। অতীতে পড়ে থেকে লাভ নেই। সামনে তাকাতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কালকের ম্যাচে আমরা যদি নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারি, তাহলে জয়ের ভালো সুযোগ তৈরি হবে। ফলাফল সবসময় আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। তবে আমাদের প্রস্তুতি, মানসিকতা, ভাবনা, এসব আমাদের হাতেই। আমরা এসবই ঠিকঠাক করতে পারি।’
টপ অর্ডারে তেমন কোনো পরিবর্তন না হলেও একাদশে সুযোগ পেতে লড়াই করতে হবে পারে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও আফিফ হোসেন ধ্রুবকে। দুজনই স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার হওয়ায় সুযোগ পেতে পারেন তাঁদের যে কোন একজন। মূলত সাত নম্বরের বিবেচনায় রয়েছেন আফিফ ও মোসাদ্দেক।
এ প্রসঙ্গে ডমিঙ্গো বলেন, ‘আমরা সাত নম্বরের জন্য এমন কাউকে চাচ্ছিলাম যে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি স্পিন পারবে। আফিফ, মোসাদ্দেক এই ভাবনা থেকেই। সৌম্য পেস বোলিং পারে, সে টপ অর্ডারেও আসতে পারে। মোসাদ্দেক লোয়ার মিডল অর্ডারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। সে এমন কেউ যে ম্যাচ শেষ করে আসতে পারবে, ভালো ফিল্ডার, বোলিং-ব্যাটিং পারে, ভালো প্যাকেজ।’
পেস বোলিংয়ে মুস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদ অনুমেয়ভাবেই একাদশে থাকছেন। এদিকে তরুণ পেসার শরিফুল ইসলামের একাদশে সুযোগ পাওয়া নির্ভর করবে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের খেলার ওপর। কারণ পেস বোলিং এই অলরাউন্ডারকে সুযোগ দেয়া হলে একাদশে জায়গা পাওয়া হবে না শরিফুলের।
নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা সফরে ছুটি কাটানো সাকিব থাকবেন স্পট লাইটে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পারফরম্যান্সও সেই কথাই বলছে। লঙ্কানদের জন্য বড় চিন্তার কারণ হতে পারেন মুস্তাফিজ। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে দারুণ বোলিং করায় তাকে নিয়ে বাড়তি পরিকল্পনা সাজাতে হচ্ছে লঙ্কানদের। আর বাংলাদেশের জন্য হুমকির কারণ হতে পারেন কুশল মেন্ডিস, নিরোশান ডিকওয়েলা ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা।
বাংলাদেশ (সম্ভাব্য একাদশ): তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মোহাম্মদ মিঠুন, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদি হাসান মিরাজ, শেখ মেহেদী হাসান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, তাসকিন আহমেদ এবং মুস্তাফিজুর রহমান।
শ্রীলঙ্কা (সম্ভাব্য একাদশ): পাথুম নিশানকা, দানুশকা গুনাথিলাকা, কুশল পেরেরা, কুশল মেন্ডিস, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, আসেন বান্দারা, দাসুন শানাকা/ চামিকা করুনারত্নে, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, ইসুরু উদানা, লাকশান সান্দাকান এবং দুশমন্থ চামিরা।