খুলনা, বাংলাদেশ | ১৯শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২রা এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়ায় বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে নিহত ১০
  চট্টগ্রামে জোড়া খুনের ঘটনায় ছোট সাজ্জাদ ও তার স্ত্রীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

বাংলাদেশে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ আরএসএফ-এর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বাংলাদেশে সাংবাদিকদের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যম কর্মীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ)। বাংলাদেশে সম্প্রতি সংবাদমাধ্যম কর্মীদের ওপর হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফেব্রুয়ারি মাসের শুরু থেকে সাংবাদিকদের ওপর লাঠি এবং হাতুড়ি দিয়ে আঘাতসহ গুরুতর হামলা বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিউজরুমে আক্রমণ চালানো হচ্ছে। এ খবর দিয়েছে ভয়েস অফ আমেরিকা।

গত শুক্রবার আরএসএফ-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পুলিশ অফিসার এবং রাজনৈতিক কর্মীরা মূলত এই হামলাগুলো চালাচ্ছে। প্রতিটি অপরাধীর বিচার এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা।

আরএসএফ-এর দক্ষিণ এশিয়া ডেস্ক প্রধান সিলিয়া মেরসিয়ের বলেন, ২০২৪ সালের অগাস্টে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেয়ার পর গণমাধ্যম পরিবেশে উন্নতির আশা সৃষ্টি হলেও, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা অনিশ্চিয়তার মধ্যেই রয়ে গেছে। তিনি বলেন, গত কয়েক দিনে সাংবাদিকদের ওপর একের পর এক হামলা মিডিয়ার বিরুদ্ধে সহিংসতা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে। পেশাগত দায়িত্বপালনকালে হামলার শিকার হচ্ছেন গণমাধ্যমকর্মীরা। সংবাদ প্রকাশের জন্য সাংবাদিকদের ওপর শারীরিকভাবে প্রতিশোধ নেয়া হচ্ছে। এছাড়া বিক্ষোভকারীদের দ্বারা নিউজরুমে হামলার ঘটনাও ঘটছে।

আরএসএফ-এর রিপোর্টে বেশ কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরা হয়, যাদের মধ্যে ছিল প্রকাশিত প্রতিবেদন মুছে ফেলার দাবিতে হামলা থেকে শুরু করে রাজনৈতিক কারণে হামলা এবং সাংবাদিকদের কাজে বাধা দিতে পুলিশের আক্রমণ।

ওই রিপোর্টে বলা হয়, মাঠ পর্যায়ে প্রতিবেদন করার সময় সাংবাদিকরা বাধার মুখে পড়ছে। যেমন, ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র আনুমানিক ২০জন সমর্থক সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে এটিএন নিউজ-এর জাভেদ আক্তারকে আক্রমণ করে। এনটিভির হাসান জাবেদ এবং দীপ্ত টিভির আজিজুল ইসলাম পান্নু আক্তারকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এলেও তাদেরও আক্রমণ করা হয়। সাংবাদিকরা ঐ সময়ে ১৯৯৪ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে আক্রমণ সংক্রান্ত মামলায় রায় এর সংবাদ কাভার করতে গিয়েছিলেন। এর একদিন পরেই, ইন্ডিপেন্ডেন্ট২৪ টিভি’র মোহাম্মাদ ওমর ফারুক, একাত্তর টিভি’র সাইয়েদ মাইনুল আহাসান মারুফ এবং অন্যান্য সাংবাদিকদের ওপর বিক্ষোভকারীরা হামলা করে। তখন তারা ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ও স্মৃতি জাদুঘর ভাঙার ঘটনা কাভার করছিলেন। পুলিশ হামলাকারীদের বাধা দেয়নি।

ফেব্রুয়ারি মাসের ৯ তারিখে ছয়জন সাংবাদিক পুলিশের হাতে আক্রান্ত হয় বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। দ্য রিপোর্ট লাইভ-এর কাওসার আহমেদ রিপন, কালের কণ্ঠ থেকে আসিফ-উজ জামান এবং মুহাম্মাদ মাহাদি, বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর আজহার রাকিব, জাগো নিউজ-এর মোহাম্মাদ রাদওয়ান এবং ব্রেকিং নিউজ-এর শিমুল খানকে পুলিশ লাঠি দিয়ে পিটায়, ঘুষি এবং লাথি দেয়। আহত সাংবাদিকরা জানায়, তাদের প্রেস কার্ড দেখানো সত্ত্বেও পুলিশ তাদের ইচ্ছা করে হামলা করে।

ঢাকার বাইরে শরিয়তপুরে কয়েকজন সাংবাদিক তাদের কাজের জন্য নৃশংস প্রতিশোধের মুখে পড়েন। গত ৩ ফেব্রুয়ারি, সমকাল-এর প্রতিনিধি সোহাগ খানের উপর হাতুড়ি এবং ছুঁড়ি দিয়ে হামলা চালানো হয়। একটি ক্লিনিকের অবহেলা নিয়ে প্রতিবেদন করায় ক্লিনিকের মালিকের ভাই এবং তার সাঙ্গপাঙ্গরা আক্রমণ করে। অন্য তিনজন সাংবাদিক- নিউজ২৪ টিভি’র বিধান মজুমদার ওনি, বাংলা টিভি’র নয়ন দাস এবং দেশ টিভি’র শফিউল ইসলাম আকাশ সহকর্মীর সাহায্যে এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা তাদের ওপরও হামলা চালায়। সহিংসতার এই অগ্রহণযোগ্য চক্র বন্ধ করে মিডিয়া পেশাজীবীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, হামলার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওাতায় নিয়ে আসার জন্য আরএসএফ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে, বলেন সিলিয়া মেরসিয়ের।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!