কিংস্টন টেস্টে আজ তৃতীয় দিনটা দারুণ কাটল বাংলাদেশের। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাঁদের প্রথম ইনিংসে ১৪৬ রানে অলআউট করে প্রথম ইনিংসেই ১৮ রানের লিড পেয়েছিল মেহেদী হাসান মিরাজের দল। এরপর নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় সেশনে মিরাজ ও সাদমান ইসলামের আক্রমণাত্বক ব্যাটিংয়ে সেই লিড বেড়ে দাঁড়ায় ১২৮।
তৃতীয় সেশনে ২১.৪ ওভার ব্যাট করে ৩ উইকেট হারিয়ে লিডে আরও ৮৩ রান যোগ করেছে বাংলাদেশ। এর আগে দ্বিতীয় সেশনে ২০ ওভারে পড়েছে ২ উইকেট, রান উঠেছে ১১০।
সব মিলিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪১.৪ ওভারে ৫ উইকেটে ১৯৩ রানে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের লিড ২১১ রানের। ২৯ রানে ক্রিজে অপরাজিত জাকের আলী। ৯ রানে অন্য প্রান্ত আগলে রেখেছেন তাইজুল ইসলাম। ষষ্ঠ উইকেটে দুজনে ৪৭ বলে ২০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে মাঠ ছাড়েন। অসুস্থতার জন্য মুমিনুল হক আজ ব্যাটিংয়ে নামেননি। প্যাড পরে ড্রেসিংরুমে বসে থাকতে দেখা গেছে মুমিনুলকে।
দ্বিতীয় সেশনে দারুণ ব্যাট করা সাদমানকে শেষ সেশনে খেলা শুরুর দ্বিতীয় ওভারে হারায় বাংলাদেশ। শামার জোসেফের করা স্টাম্পের বাইরের বলে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে উইকেটকিপার জশুয়া দা সিলভাকে ক্যাচ দেন ৮২ বলে ৪৬ রান করা সাদমান। এর মধ্য দিয়ে ভেঙেছে মিরাজের সঙ্গে তাঁর তৃতীয় উইকেটে ৭৪ বলে ৭০ রানের দারুণ এক জুটি।
দ্বিতীয় সেশনে দারুণ ব্যাট করা মিরাজ্ও ফিরেছেন কিছুক্ষণ পরই। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে ২৬তম এবং শেষ সেশনের ষষ্ঠ ওভারে আউট হন ৩৯ বলে ৪২ রান করা মিরাজ। এবারও শিকারি সেই শামার জোসেফ। লেগ স্টাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে উইকেটকিপার সিলভাকে ক্যাচ দেন মিরাজ। মাঠের আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ নিয়ে তাঁকে ড্রেসিংরুমে ফেরত পাঠায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
পাঁচে নামা লিটন দাসের সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে খুব প্রয়োজনীয় এবং কার্যকর এক জুটি গড়েন জাকের আলী। তাঁদের ৫২ বলে ৪১ রানের জুটি ভেঙেছে ৩৪তম ওভারে জাস্টিন গ্রিভসের দারুণ এক অফ কাটারে। ১২ রানে শামারের বলে ‘জীবন’ পাওয়া লিটন গ্রিভসের অফ কাটার বুঝতেই পারেননি। ৩৪ বলে ২৫ রানে বোল্ড হন। এরপর সাতে নামা তাইজুল ও জাকের মিলে দিনের বাকিটা সময় পার করেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ইনিংসে নাহিদ রানার বলে কাঁধে চোট পাওয়া পেসার কেমার রোচকে দ্বিতীয় সেশনে মাঠে ফিল্ডিংয়ে দেখা যায়নি। তৃতীয় সেশনে বাংলাদেশের ইনিংসে ২৮তম ওভার শেষে মাঠে ফেরেন রোচ। ৫ ওভার বোলিং করলেও বিপদ তৈরি করতে পারেননি।
জাকেরের ব্যাটিংয়ের প্রশংসা আলাদা করে করতেই হয়। লিটন ও তাইজুলের সঙ্গে খুব গুরুত্বপূর্ণ দুটি জুটিতে দারুণ ভূমিকা ছিল তাঁর। লিটনের সঙ্গে জুটিতে তাঁর অবদান ২৪ বলে ১৮। তাইজুলের সঙ্গে জুটিতে ২৫ বলে ১১।
স্যাবাইনা পার্কে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ ২১২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে জয়ের নজির আছে। ২০০৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এই লক্ষ্য তাড়া করে ৭ উইকেটে জিতেছিল ক্যারিবিয়ানরা। তবে আগামীকাল চতুর্থ দিনে বাংলাদেশের লিড স্বাভাবিকভাবেই আরও বাড়বে। মুমিনুল এখনো ব্যাটিংয়ে নামেননি। বিশ্রামে থাকায় আগামীকাল নিশ্চয়ই তাঁকে আরও সুস্থ অবস্থায় পাবে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ১৬৪ ও ১৯৩/৫ (সাদমান ৪৬, মিরাজ ৪২, শাহাদাত ২৮, লিটন ২৫, জাকের ২৯*, তাইজুল ৯*; শামার ২/৭০, আলজারি ১/৩৯, সিলস ১/৪৩, গ্রিভস ১/২০)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৪৬ (কার্টি ৪০, ব্রাফেট ৩৯, লুই ১২, রোচ ৮; রানা ৫/৬১, হাসান ২/১৯, তাসকিন ১/২০, তাইজুল ১/২৪, মিরাজ ১/১৫)।—তৃতীয় দিন শেষে।
খুলনা গেজেট/এইচ