খুলনা, বাংলাদেশ | ২৮ পৌষ, ১৪৩১ | ১২ জানুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  আরও ৬০ দিন বাড়ল সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা
  রমজান ও ঈদের সম্ভাব্য তারিখ জানাল আরব আমিরাত
  দেশে একজনের শরীরে এইচএমপিভি ভাইরাস শনাক্ত : আইইডিসিআর

বাংলাদেশের রেকর্ড গড়া সিরিজ জয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সৌম্য, সাকিব, মাহমুদুল্লাহ ও শামীমের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে রেকর্ড গড়া সিরিজ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ১৯৪ রানে টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৫ উইকেটে জয় পেয়েছে। ফলে ৩ ম্যাচের টিটোয়েন্টি সিরিজে ২-১ ম্যাচ জয়ের মাধ্যমে সিরিজ নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ।

শুরুতে ঝড় তোলেন সৌম্য সরকার। চার-ছক্কার ফুলঝুড়িতে ফিফটি তুলে নেন তিনি। পরে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও শামীম পাটোয়ারী ঝড়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে রেকর্ড গড়া জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে এত রান তাড়া করে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জেতেনি বাংলাদেশ।

প্রায় ৮ বছর পর পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে জিম্বাবুয়ে গেছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। শেষবার যখন জিম্বাবুয়ে সফরে গিয়েছিল টাইগাররা, তখন অর্জনের থেকে বিসর্জনের পাল্লাই ছিল ভারি। এবার আক্ষেপ কিছুটা ঘুচল। মিললো অনেক হিসাব। একে একে টেস্ট, ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজও নিজেদের দখলে নিয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। সফরে সর্বসাকুল্য ৭ ম্যাচের ছয়টিতেই জয় বাংলাদেশের।

 

হারারের স্পোর্টস ক্লাব মাঠে আজ (রোববার) আগে ব্যাট করে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের সামনে ১৯৪ রানের বিশাল টার্গেট দেয় স্বাগতিকরা। এর আগে একবারই এতোবড় লক্ষ্য তাড়া করে জয়ের রেকর্ড ছিল বাংলাদেশের। ২০১৮ সালে নিদাহাস ট্রফিতে শ্রীলঙ্কার দেওয়া ২১৫ রানের টার্গেট টপকে ৫ উইকেট জিতেছিল টাইগাররা। রান তাড় করে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জয় ছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ১৬৪ রান টপকিয়ে জিতেছিল ২০১৬ সালে, খুলনায়। এবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সে রেকর্ড পাড়ি দিয়ে নতুন রেকর্ড বাংলাদেশের।

সফরের শুরুটা জয় দিয়েই হয়েছিল বাংলাদেশের। একমাত্র টেস্টে ব্রেন্ডন টেলরের দলকে ২২০ রানের বড় ব্যবধানে হারায় মুমিনুল হকের দল। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজেও জয় পায় সফরকারীরা। ৩-০ ব্যবধানে হারায় জিম্বাবুয়েকে। টি-টোয়েন্টি সিরিজের শুরুটাও হয়েছিল জয় দিয়ে। তবে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি হারে ২৩ রানে।

আজ ১৯৪ রানের বিশাল লক্ষ্য টপকিয়ে ৪ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ দল। এতে ম্যাচ জয়ের পাশাপাশি টেস্ট, ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজও নিজেদের করে নিল সফরকারীরা।

লক্ষ্য তাড়ায় নেমে অবশ্য শুরুটা সুখকর হয়নি বাংলাদেশের। ওপেনার নাঈম শেখ আউট হন ৩ রান করে। সাকিবকে নিয়ে রান তোলার গতি ধরে রাখেন সৌম্য সরকার। দ্বিতীয় উইকেটে দুজনে পঞ্চাশ রানের পার্টনারশিপে ম্যাচ বাঁচিয়ে রাখে বাংলাদেশ। সাকিব অবশ্য ইনিংস বড় করতে পারেননি, ফেরেন ১৩ বলে ২৫ রানের ইনিংস খেলে। যেখানে ২টি ছয়ের সঙ্গে ১টি চার মারেন।

এমন বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে সৌম্যর ব্যাটিংটিও স্বস্তি দিচ্ছিল না। ৪০ বলের তার ব্যক্তিগত অর্ধশতক ম্যাচ রেখেছিল বাংলাদেশকে। পর ৪৯ বলে ৯টি ও ১টি ছয়ের মারে ৬৮ রান করে আউট হন তিনি। ম্যাচ জয়ের বাকি আনুষ্ঠানিকতা সারেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (২৮ বলে ৩৪) আফিফ হোসেন (৫ বলে ১৪) ও শামীম পাটোয়ারি।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলা শামীম ব্যাট হাতে রীতিমত ঝড় তোলেন। খেলেন ১৫ বলে অপরাজিত ৩@ রানের ইনিংস। এতে ৪ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখে জয় পায় বাংলাদেশ দল। এতে টেস্ট, ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজও নিজেদের করে নিল সফরকারীরা।

এর আগে টস নিতে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের ইঙ্গিত দেয় স্বাগতিকরা। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে বাংলাদেশি পেসার তাসকিন আহমেদেরর উপর চড়াও হন জিম্বাবুইয়ান ওপেনার মেধেভেরে। তাকে যেন বল ফেলার জায়গা পাচ্ছিলেন না তাসকিন। সে ওভারে একে একে তাসকিন হজম করলেন ৫টি চার!

ইনিংসের ৪ ওভার ২ বলেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে দলীয় স্কোর ৫০ ছাড়ায় জিম্বাবুয়ে। পাওয়ার প্লের শেষ বলে বাংলাদেশকে খানিক স্বস্তি দিয়ে প্রথম উইকেট এনে দেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ২০ বলে ২৭ রানে ফেরেন মারুমানি। এরপর মেধেভেরের সঙ্গে যোগ দেন চাকাভা। বাংলাদেশি বোলারদের শাসন করে ইনিংসের ১০ ওভারেই দলীয় শতরানের কোটা ছুঁয়েছ ফেলে স্বাগতিকরা।

ইনিংসের ১১তম ওভারে একাদশে সুযোগ পাওয়া বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদকে হাওয়ায় ভাসিয়ে পরপর তিন বল সীমানার বাইরে পাঠিয়ে সে ওভার থেকে চাকাভা তুলে নিলেন ২১ রান। এরপর মাত্র ৩১ বলে ক্যারিয়ারের চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরির তুলে নেন মাধেভেরে। আগের ম্যাচেও ফিফটির স্বাদ পেয়েছিলেন তিনি। আজ অর্ধশতক হাঁকিয়ে সাজঘরে ফেরেন ৫৪ রান করে। ৩৬ বলের ইনিংসটি সাজান ৬টি চারের মারে।

তার আগেই অবশ্য ৪৮ রান করে আউট হন চাকাভা। ২২ বলের বিধ্বংসী ইনিংসটি সাজান ৬টি ছয়ের সাহায্যে। শেষদিকে ডিওন মেয়ার্সের ২৩ রানের সঙ্গে রায়ান বার্লের ১৫ বলে অপরাজিত ১৫ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসের কল্যাণে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৫ উইকেয় হারিয়ে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৯৩ রান। বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ১৯ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন সৌম্য সরকার।




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!