নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আগের সর্বোচ্চ ইনিংসটি ছিল ৭৮ রানের। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের দারুণ সেই ইনিংসটি আজ সিলেটের মাটিতে ছাড়িয়ে গেলেন মাহমুদুল হাসান জয়। সাবধানী ব্যাটিংয়ে ছিলেন নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরির মাইলফলকের দ্বারপ্রান্তে।
তবে ইশ সোধির বলে কটবিহাইন্ড হয়ে ফিরতে হলো ব্যক্তিগত ৮৬ রানের মাথায়। ১৬৬ বল খেলে ১১ চারের মারে এই রান করেন তিনি। আগের ওভারেই ফিরে গেছেন আরেক অভিজ্ঞ ব্যাটার মুমিনুল হক। পরপর দুই ওভারে দুই ব্যাটারকে হারিয়ে দারুণ খেলতে থাকা বাংলাদেশ আবারও ব্যাকফুটে চলে গেছে।
প্রথম সেশনে দুই উইকেট পতনের পর দ্বিতীয় সেশনেও একই সংখ্যক উইকেট হারালো বাংলাদেশ। কিছুটা নড়বড়ে অবস্থানে থেকেই চা বিরতিতে গেল স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয় উইকেটে শান্তর সঙ্গে পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের জুটি গড়েছিলেন জয়। অধিনায়কের বিদায়ের পর রানের গতি কিছুটা কমলেও মুমিনুলকে নিয়ে ধীরে ধীরে এগোচ্ছিলেন জয়। মুমিনুলের আউটে ভাঙে তাদের ১৭১ বলে ৮৮ রানের জুটি।
শান্তর উইকেটের পর আবারও ব্রেকথ্রু এনে দেন গ্লেন ফিলিপস। এবার শিকার বানালেন মুমিনুলকে। প্রিয় কাট শট খেলতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লেগে বল আশ্রয় নেয় কিপারের গ্লাভসে। শান্তর মতো মুমিুনলও থামলেন ব্যক্তিগত ৩৭ রানে। মুমিনুলের আউটের রেশ কাটতে না কাটতেই বিদায় নিলেন মাহমুদুল হাসান জয়।
সিলেটের উইকেটে স্পিন ধরবে এমন আভাস মিলছিল শুরু থেকেই। যত সময় গড়াচ্ছে, সেটিই যেন সত্যি হচ্ছে। চা বিরতির আগের কয়েক ওভারে বাংলাদেশকে বেশ অস্বস্তিতে ফেলছিলেন ইশ সোধি। তার টার্ন করা বল জয়ের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে চলে যায় স্লিপ ফিল্ডারের হাতে। মাটিতে পড়ার ঠিক আগমুহূর্তে মুঠোয় বল জমান ড্যারিল মিচেল।
দারুণ খেলেও শেষ পর্যন্ত শতরানের দেখা পেলেন না জয়। ১৬৬ বলে ৮৬ রান করে ফিরলেন সাজঘরে। চা বিরতির আগে ৪ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৮৫ রান।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে সিলেটে নিজেদের প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা খারাপ করেনি নাজমুল হোসেন শান্তর দল। যদিও ইনিংসের শুরু থেকেই নড়বড়ে ছিলেন ওপেনার জাকির। শেষমেশ টাইগার ওপেনারকে মুক্তি দেন এজাজ প্যাটেল।
ইনিংসের ১৩ তম ওভারে প্যাটেলের অফ স্ট্যাম্পে পিচ করা ডেলিভারি পেছনের পায়ে ভর করে খেলতে চেয়েছিলেন জাকির। কিন্তু টার্ন করা বলটি সরাসরি আঘাত করে অফ স্টাম্পে। সমাপ্তি ঘটে জাকির হাসানের অস্বস্তিকর ইনিংসের। ১ চারে ৪১ বলে ১২ রান করেন বাঁহাতি ওপেনার। তার বিদায়ে ভাঙে ৩৯ রানের উদ্বোধনী জুটি। এরপর আরেক ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়কে নিয়ে লড়তে থাকেন শান্ত। দুজনের ওয়ানডে মেজাজের ব্যাটিংয়ে রানটাও বাড়ছিল বাংলাদেশের। ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে জুটির রান ছাড়ায়। তবে লাঞ্চ বিরতিতে যাওয়ার কিছুক্ষণ আগেই বাজে শট খেলতে গিয়ে ফেরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
গ্লেন ফিলিপসের ফুল টস ডেলিভারি ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে মারতে চেয়েছিলেন শান্ত। কিন্তু ঠিকঠাক খেলতে পারেননি। মিড-অনে ক্যাচ তালুবন্দী করেন কেন উইলিয়ামসন। ফেরার আগে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৫ বলে ৩৭ রান করেন শান্ত। তার বিদায়ে ভাঙে ৫৩ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি। এরপর তৃতীয় উইকেট জুটিতে হাল ধরেছিলেন জয় ও মুমিনুল। চা বিরতির আগমুহূর্তে দুজনই বিদায় নিলেন।
খুলনা গেজেট/ বি এম শহিদুল