খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  মার্কিন শ্রম প্রতিনিধি দল ঢাকা আসছে আজ
লেবাননের বৈরুতে বিস্ফোরণ

বাংলাদেশের গুদামে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট নিয়ে উদ্বেগ, জেলায় জেলায় চিঠি

গেজেট ডেস্ক

ফ্রান্সের একটি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট কারখানা।
ফ্রান্সের একটি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট কারখানা।

বাংলাদেশে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মতো বিপজ্জনক রাসায়নিক নিরাপদভাবে আমদানি ও গুদামজাত করা হচ্ছে কীনা তা তদারকি করার জন্য কর্মকর্তা রয়েছেন মাত্র পাঁচ জন। আর আমদানি করা এই রাসায়নিক গুদামজাত করার জন্য দেশের বন্দরগুলোতে কোন নিরাপদ ব্যবস্থা নেই বলে কর্মকর্তারা বলছেন।

বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন বিস্ফোরক পরিদপ্তরের দায়িত্বই হচ্ছে এধরনের দাহ্য পদার্থের আমদানির অনুমতি দেয়া এবং নিরাপদভাবে এগুলো সংরক্ষিত হচ্ছে কিনা তা দেখাশোনা করা। কিন্তু অপ্রতুল জনবলের কারণে এরা দায়িত্বপালন করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন বলে স্বীকার করেছে মন্ত্রণালয়ে সূত্র।

ছাড়পত্র পাওয়া আমদানির বাইরে স্থানীয়ভাবে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট উৎপাদন করা হচ্ছে কীনা, কিংবা সেগুলো নিরাপদভাবে বিক্রি, পরিবহণ কিংবা গুদামজাত করা হচ্ছে কীনা, সে সম্পর্কে কর্মকর্তারা কোন তথ্য দিতে পারেনি।

বিস্ফোরক পরিদপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে জানা যাচ্ছে, ঢাকায় দুজন এবং চট্টগ্রাম, খুলনা এবং রাজশাহীতে একজন করে বিস্ফোরক পরিদর্শক কাজ করছেন। এসব জায়গায় দু-একজন করে সহকারী পরিদর্শকও রয়েছেন।

বিস্ফোরণের পর বৈরুত বন্দরের হাল।

লেবাননের রাজধানী বৈরুতের নৌ-বন্দরের কাছে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট গুদামে ভয়ানক বিস্ফোরণের পর বিশ্বজুড়ে এই দাহ্য পদার্থের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

এই ঘটনায় ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। বিস্ফোরণে নিহতদের মধ্যে অন্তত চারজন ছিলেন বাংলাদেশি। পাশাপাশি এই ঘটনায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অন্তত ২১ জন সদস্য আহত হন এবং নৌবাহিনীর একটি জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নৌবাহিনীর জাহাজটি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের অংশ হিসেবে সেখানে দায়িত্ব পালন করছিল।

বৈরুতের বিস্ফোরণের পরপরই বাংলাদেশে এর ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করেছে বিস্ফোরক পরিদপ্তর। এর প্রধান মো. মঞ্জুরুল হাফিজ জানান, বৈরুতের ঘটনার পর সারা দেশে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, স্থল, নৌ ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে পরামর্শ দেয়া হয়েছে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মতো নিয়ন্ত্রিত পদার্থ আমদানি হলে তা যেন অতিদ্রুত বন্দর এলাকা থেকে সরিয়ে ফেলা হয়।

তিনি বলেন, “বিস্ফোরকদ্রব্য গুদামজাত করার জন্য বন্দরগুলোতে যেমন বিশেষ ধরনের ‘ম্যাগাজিন’ বা অস্ত্র-গুদাম থাকে, সেটা বন্দরগুলোতে নেই বলেই ঝুঁকি কমানোর জন্য আমরা এই পরামর্শ দিয়েছি।”

“আমদানি করা অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট সাধারণত বন্দরের নিরাপত্তা প্রহরীদের পাহারায় থাকে, এবং পরে বন্দর থেকে বের করে পুলিশের পাহারায় এগুলো গুদামে তোলা হয়।

মি. হাফিজ জানান, এ ধরনের রাসায়নিক আমদানির জন্য এই মুহূর্তে তিনটি বেসরকারি কোম্পানিকে লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। এরা মূলতঃ মেডিকেল চিকিৎসায় ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন উপাদান তৈরি করে, যার মধ্যে রয়েছে নাইট্রাস অক্সাইড বা ‘লাফিং গ্যাস’ যেটি দাঁতের ডাক্তাররা ব্যবহার করেন।

সরকারি পর্যায়ে শুধুমাত্র মধ্যপাড়া গ্র্যানাইট মাইনিং কোম্পানির অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট আমদানির অনুমতি রয়েছে বলে তিনি বলেন। এই কোম্পানি খনি-গর্ভে বিস্ফোরণের বারুদ হিসেবে এগুলো ব্যবহার করে থাকে।

সার এবং খনিতে বিস্ফোরক হিসেবে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের ব্যবহার বহুদিন ধরেই চলছে। কিন্তু এটা কীভাবে নিরাপদ রাখা হবে, কতদিন ধরে রাখা যাবে তা নিয়ে কঠোর নিয়মনীতি রয়েছে।

অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট গুদামের স্থানও অনেক সময় গোপন রাখা হয়, কারণ ১৯৭০-এর দশক থেকে ঘরে তৈরি বোমা বা হাতবোমা তৈরির উপাদান হিসেবে এটা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সন্ত্রাসবাদীদের মধ্যে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট তাই বেশ জনপ্রিয়। সূত্র : বিবিসি বাংলা।

 

খুলনা গেজেট / এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!