বাংলাদেশের ক্ষুদে কন্টেন্ট ক্রিয়েটর শায়ান তুরাসের আজ প্রথম জন্মবার্ষিকী। ২০২২ সালের ১ আগস্ট জন্মগ্রহণ করে শায়ান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক বছর বয়সেই শায়ান দেশ ও দেশের বাইরে প্রচুর ভক্ত তৈরি করেছে। গত এক বছরে শায়ানের প্রায় দেড় হাজার ভিডিও ও রিলস আপলোড করা হয়েছে তার ফেসবুক (https://www.facebook.com/Shayanturas) পেজে। প্রতিদিনের কখনও খেলার, কখনও খাওয়ারসহ বিভিন্ন মুহূর্তের এক মিনিট বা তারও কম সময়েরও ভিডিও আপ করা হয় তার ফেসবুক পেজে।
এসব ভিডিও দেখে দেশ ও দেশের বাইরে প্রচুর ভক্ত তৈরি হয়েছে শায়ানের। ভক্তদের অনেকেই কমেন্ট করেন শায়ানের ভিডিওতে। কমেন্টসে অনেকেই লেখেন, শায়ানের হাসি দেখলে সারাদিন ভালো কাটে। কেউবা কমেন্টস করেন, শায়ানকে না দেখলে ভালো লাগে না।
শায়ানের অন্যতম একজন ভক্ত হলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সেনগুপ্তা শীতলক্ষ্যা। তিনি কলকাতায় একটি কল সেন্টারে চাকরি করেন। তিনি শায়ানের প্রতিটি ভিডিও দেখেন। শায়ান শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি কলকাতায় ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রেসক্রিপশনসহ নানা ধরনের সাপোর্ট দেন।
শায়ানের আরেকজন ভক্ত হলেন রাজু ত্রিপুরা। তিনি চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতালে হিসাবরক্ষক হিসেবে চাকরি করেন। সম্প্রতি তিনি ভিডিওকলে বাংলাদেশে শায়ানের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানান, প্রতিদিন অফিসে গিয়ে তিনি শায়ানের ফেসবুক পেজে আগে তার ভিডিও দেখেন। শায়ানের হাসি তার খুব পছন্দের। এজন্য সকালটা সুন্দর হাসি দেখেই শুরু করেন তিনি।
বাংলাদেশের আরেকজ ভক্ত হলেন অপর্ণা মজুমদার। তিনি রাজধানীর উত্তরা এলাকায় থাকেন। তিনি শায়ানের প্রতিটি ভিডিও দেখেন এবং কমেন্টস করেন। জ্বর অবস্থায় শায়ানের একটি ভিডিও ফেসবুকে আপ করা হলে তিনি সেখানে লেখেন, দাদু ভাই তোমার জ্বর কবে থেকে। এজন্য চুপচাপ বসে তাকিয়ে থাকো। দোয়া রইলো ভালো হয়ে যাবে। আমি হাসপাতাল থেকে ডায়ালাইসিস করে মাত্র বাসায় এসে মোবাইলে দেখলাম তুমি অসুস্থ।
ইতোমধ্যে শায়ানের বেশ কিছু ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এর মধ্যে একটি ভিডিও দেখেছেন সর্বোচ্চ ৫৫ লাখ বার। অন্যগুলোর মধ্যে কোনোটি ৪০ লাখ, কোনোটি ৩০ লাখ, কোনোটি আবার ২৫ লাখ বার।
শায়ানের বাবা একজন সংবাদকর্মী এবং মা গৃহিণী। শায়ানের বড় বোন জান্নাতুন সোহা। সে ঢাকার একটি কিন্ডারগার্টেনে পড়ে।
শায়ানের বাবা মি. আলম বলেন, চাকরির সুবাদে দিনের প্রায় ১২ থেকে ১৩ ঘণ্টা বাসার বাইরে থাকা হয়। এই সময়টাতে শায়ানের সব ধরনের অনুভূতি মিস করি। অনেক সময় শায়ানের মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা হলেও সন্তানের বিভিন্ন অনুভূতি দেখার সুযোগ হয় না। এই চিন্তা থেকেই প্রতিদিন শায়ানের বিভিন্ন মুহূর্ত ভিডিও করে তার মা ফেসবুকে আপ করে দেন। আর সেগুলো সময় পেলেই দেখি।
তিনি বলেন, শায়ানের এসব ভিডিও দেখে দেশ-বিদেশে প্রচুর ভক্ত তৈরি হয়েছে। কোনো ভিডিও আপ করতে দেরি হলেই ভক্তরা কমেন্টস করে জানান দেরি হলো কেন, আমরা অনেকক্ষণ ধরে শায়ানকে দেখার অপেক্ষায় আছি। অনেকেই স্ত্রী সন্তান দেশে রেখে প্রবাসে থাকেন। কাজের ফাঁকে কিছুক্ষণ তারা ফেসবুক চালানোর সুযোগ পেলেই শায়ানের ভিডিও দেখে মন্তব্য করেন, আমার ছেলেটাও শায়ানের মতো বড় হয়ে গেছে। শায়ানকে দেখলেই আমার ছেলেকে দেখা হয়ে যায়।
মি. আলম বলেন, ৬ মাস হলো শায়ানের ফেসবুক পেজ মনিটাইজেশন হয়েছে। তার ভিডিও থেকে ইতোমধ্যে খুবই অল্প পরিমাণ অর্থ পাওয়া গেছে। সেই অর্থ বিভিন্ন মানবিক কাজে ব্যবহার করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এমএম