ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় তৃণমূল কংগ্রেস ও ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নেতাদের মুখে ঘুরে ফিরে আসছে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ। গত মাসের শেষের দিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরে এসে সংখ্যালঘু মতুয়া সম্প্রদায়ের দু’টি মন্দির পরিদর্শনের পর নির্বাচনী প্রচারণায় বাংলাদেশ ইস্যু বেশ জোরেসোরে আলোচিত হয়।
এমনকি ঢাকা সফরে এসে পশ্চিমবঙ্গের ভোট নিয়ে মতুয়া সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলোচনা করায় মোদির ভিসা বাতিলের দাবি তুলেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গের আট দফার ভোটের মধ্যে চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে গত শনিবার।
রাজ্যের নির্বাচনী ডামাডোলের মাঝে মঙ্গলবার সেখানকার দৈনিক আনন্দবাজারকে বিশেষ স্বাক্ষাৎকার দিয়েছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপির নেতা অমিত শাহ। সেই সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ প্রসঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি।
আনন্দবাজারের সাংবাদিক অভীক সরকার বিজেপি নেতা অমিত শাহর কাছে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশ নিয়ে মন্তব্য জানতে চেয়েছিলেন। অভীকের প্রশ্ন ছিল, গত ১০-১৫ বছরে বাংলাদেশের তো আর্থিক উন্নয়ন হয়েছে। তারপরও কেন লোকে পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশ করছে? জবাবে অমিত শাহ বলেছেন, এর দুটি কারণ আছে। প্রথমত, বাংলাদেশের উন্নয়ন সীমান্ত এলাকায় প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছায়নি। যে কোনো পিছিয়ে-পড়া দেশে উন্নয়ন শুরু করলে সেটা প্রথম কেন্দ্রে হয়। আর তার সুফল প্রথমে বড়লোকদের কাছে পৌঁছায়, গরিবদের কাছে নয়। এখন বাংলাদেশে সেই প্রক্রিয়া চলছে। ফলে গরিব মানুষ এখনো খেতে পাচ্ছে না। সে কারণেই অনুপ্রবেশ চলছে।
বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশের পর ভারতজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিজেপির এই নেতা। তিনি বলেছেন, আর যারা অনুপ্রবেশকারী; তারা যে শুধু বাংলাতেই থাকছে, তা নয়। তারা তো ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। জম্মু-কাশ্মীর পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, আমি মনে করি এটা প্রশাসনিক সমস্যা। প্রশাসনিকভাবেই এর মোকাবিলা করতে হবে। সেটা পশ্চিমবঙ্গের সরকার করেনি। পরিশেষে বাংলার মানুষকে জোড়হাতে বলতে চাই, আপনারা বহুদিন কংগ্রেসকে শাসন করার সুযোগ দিয়েছেন। তিন দশক কমিউনিস্টদের শাসন করার সুযোগ দিয়েছেন। এক দশক মমতাদিকে শাসন করার সুযোগ দিয়েছেন। কিন্তু বাংলার অনুন্নয়নই হয়েছে। একবার আপনারা নরেন্দ্র মোদিকে সুযোগ দিন। বিজেপিকে সুযোগ দিন।