খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ৪০তম ব্যাচের ক্যাডেট এসআইদের সমাপনী কুচকাওয়াজ স্থগিত
  সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
  টাঙ্গাইলে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে ৪ জন নিহত

বাংলাদেশকে সাশ্রয়ী মূল্যে সমরাস্ত্র দিবে যুক্তরাষ্ট্র

গে‌জেট ডেস্ক

বাংলাদেশের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে নিরাপত্তা সরঞ্জাম বিক্রি এবং প্রয়োজনে এ সংক্রান্ত ঋণ সহায়তার নতুন প্রস্তাব দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অনেকদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ভারি সমরাস্ত্রসহ নিরাপত্তা সরঞ্জামাদি ক্রয়-বিক্রয়ের কথাবার্তা চললেও দাম বেশি হওয়ায় ঢাকা আগ্রহ পাচ্ছিল না। এ অবস্থায় ৫০ বছরের বন্ধুত্ব এবং প্রায় এক যুগের অংশীদারিত্বমূলক সম্পর্কের খাতিরে বাংলাদেশকে এই বিশেষ সুবিধা দেয়ার প্রস্তাব করেছে দূর পশ্চিমের দেশটি।

বুধবার ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত ৮ম নিরাপত্তা সংলাপে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠক সূত্র বলছে, গত ২০শে মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় আলোচনার সর্বোচ্চ প্রাতিষ্ঠানিক ফোরাম ‘পার্টনারশিপ ডায়ালগ’-এ মার্কিন নিরাপত্তা সরঞ্জাম সাশ্রয়ী মূল্যে বাংলাদেশ পেতে পারে এমন ইঙ্গিত মিলেছিল। ৬ই এপ্রিলের নিরাপত্তা সংলাপে এ সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব এবং মার্কিন সহায়তার নিশ্চয়তা পেলো ঢাকা। নিরাপত্তা সংলাপে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। আর মার্কিন প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাবিষয়ক দেশটির আন্ডার সেক্রেটারি বনি জেনকিন্স। পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে এবারই প্রথম নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হলো।

এর আগে (২০১২ সাল থেকে) মোট ৭ দফা সংলাপ হয়েছে, তবে তা ছিল মহাপরিচালক পর্যায়ের। ওয়াশিংটনের একাধিক কূটনৈতিক সূত্র সাশ্রয়ী মূল্যে মার্কিন সমরাস্ত্র বিক্রির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার বিষয়টি রাতে মানবজমিন প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপে স্বীকার করেছে।

তাদের দাবি, বাংলাদেশ প্রস্তাবটি ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে, তবে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়নি। মার্কিন প্রস্তাবটি আকর্ষণীয় হলেও তাতে তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশ সারা দেয়নি বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। সূত্র বলছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনসহ নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে অনেক কর্মকর্তা ফুল-ম্যান্ডেট নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে নেগোসিয়েশনে থাকার পরও ভারি সমরাস্ত্র কেনা বিষয়ক স্পর্শকাতর ওই প্রস্তাব বিষয়ে বাংলাদেশ খোলাখুলিভাবে তার অবস্থান জানায়নি।

নিরাপত্তা সংলাপে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের দলনেতা পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন প্রস্তাবটি হাসিমুখে গ্রহণ করলেও তা নিয়ে ঢাকায় বিস্তৃত আলোচনার সুযোগ রেখেছেন। ওয়াশিংটনে থাকা বাংলাদেশের একজন কর্মকর্তা বলেন, সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিকায়নের লক্ষ্যে গৃহীত ফোর্সেস গোল অনুযায়ী উন্নত সমরাস্ত্র সংগ্রহে বিভিন্ন উৎসে মনোযোগ দিচ্ছে বাংলাদেশ। এরই অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আধুনিক প্রযুক্তির সমরাস্ত্র কিনতে দেশটির সঙ্গে দুটি বিশেষায়িত প্রতিরক্ষা চুক্তি—জিসোমিয়া (জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন অ্যাগ্রিমেন্ট) এবং আকসা (অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড ক্রস-সার্ভিসিং অ্যাগ্রিমেন্ট) নিয়ে আলোচনা চলছে। ঢাকায় অংশীদারিত্ব সংলাপে জিসোমিয়ার খসড়া হালনাগাদ হয়েছে। মার্কিন সমরাস্ত্র কেনার পূর্বশর্ত হচ্ছে প্রতিরক্ষা চুক্তি জিসোমিয়া স্বাক্ষর। নিরাপত্তা সংলাপে জিসোমিয়ার সবশেষ খসড়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এটি দ্রুত চূড়ান্ত করার তাগিদ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

ইন্দো-প্যাসিফিকে সম্পৃক্ততায় ঢাকার জন্য আসছে নতুন প্যাকেজ

নিরাপত্তা সংলাপে সমরাস্ত্র ছাড়াও মার্কিন অগ্রাধিকার প্রকল্প ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি (আইপিএস)-এ বাংলাদেশের অংশগ্রহণ বিষয়ে তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। আইপিএস বিষয়েও নতুন প্রস্তাব পেয়েছে ঢাকা। আসছে নতুন অর্থনৈতিক বিশেষ প্যাকেজও।

স্মরণ করা যায়, মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড ঢাকায় ২০ মার্চের অংশীদারিত্ব সংলাপ শেষে বলেছিলেন, আইপিএসে অর্থনৈতিক, নিরাপত্তা এবং প্রযুক্তিগত উপাদান রয়েছে। এই উদ্যোগের বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যুক্ত হলে যুক্তরাষ্ট্র খুশি হবে। আইপিএসের মাধ্যমে সমুদ্রপথে অবাধে ও নিরাপদে পণ্যের সরবরাহের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ মনে করে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে পররাষ্ট্রসচিব বলেছিলেন, আইপিএস এর অর্থনৈতিক উপাদানে বেশি জোর দিচ্ছে বাংলাদেশ। আইপিএস যেন কোনো পক্ষকে প্রতিহত করার জন্য না হয়, সেই নিশ্চয়তা চাইছে ঢাকা।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!