বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংস্কার ও অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে জোরালো সহযোগিতার আশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি দেশটি দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে ঢাকা-ওয়াশিংটন সহযোগিতার বিষয়টি যে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, সে বিষয়ে জোর দিয়েছে।
ওয়াশিংটন সফররত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের বিভিন্ন পর্যায়ের বৈঠকে এ বিষয়গুলো আলোচনায় এসেছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের এক্স হ্যান্ডলে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় এ কথা জানা গেছে। যুক্তরাষ্ট্র সফররত পররাষ্ট্রসচিব জসীম উদ্দিন বুধবার রাতে ওয়াশিংটনে পৌঁছান। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিবের মূল বৈঠক হয় যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিষয়ক ভারপ্রাপ্ত আন্ডার সেক্রেটারি জন বাসের সঙ্গে।
এ ছাড়া তার খসড়া সূচিতে ওই দিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক লিন্ডসে ফোর্ড, উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী রিচার্ড ভার্মা, সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা।
এসব বৈঠকের মাঝে তিনি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন। সেখানে অন্যদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।
রাজনীতিবিষয়ক ভারপ্রাপ্ত আন্ডার সেক্রেটারি জন বাস এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘পররাষ্ট্রসচিব জসীম উদ্দিনের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও সন্ত্রাসবাদ দমনের বিষয়ে আমাদের অভিন্ন লক্ষ্যের বিষয়ে আলোচনার প্রশংসা করি। আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সহযোগিতার বিশেষ গুরুত্বের বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি।’
মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী রিচার্ড ভার্মা আলোচনার পর এক্সে লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব জসীম উদ্দিনের সঙ্গে দেখা হওয়াটা আমার জন্য আনন্দের। তাঁর কাছে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংস্কার, স্থিতিশীলতা ও অর্থনীতি জোরদারের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছি।’
এদিকে জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসনবিষয়ক ভারপ্রাপ্ত সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্থা কস্টানজো ইয়ুথ বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিবের সম্মানে ওয়াশিংটনে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ডি এম সালাহউদ্দিন মাহমুদের দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন।
ওই মধ্যাহ্নভোজের পর মার্থা কস্টানজো তার এক্সে লিখেছেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে চমৎকার আলোচনা হয়েছে। রোহিঙ্গা সংকটের শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ অংশীদার হিসেবে কাজ করছে।
রোহিঙ্গা সংকটে সাড়াদান এবং অন্য দাতারা যাতে আরও বেশি ভূমিকা রাখেন, সে ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র অঙ্গীকারবদ্ধ।
প্রসঙ্গত, গত মাসে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিরল বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ওই বৈঠকে তিনি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংস্কার ও অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে জোরালো সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এরপর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের সঙ্গে দেখা করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। সেখানে দুই দেশের সহযোগিতার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সফর করে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল। এসব সফর ও বৈঠকের ধারাবাহিকতায় পররাষ্ট্রসচিব এখন ওয়াশিংটন সফর করছেন।
খুলনা গেজেট/কেডি