গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে ৪৯টি কম্পিউটার চুরি হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কোনো সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ ঘটনায় সোমবার (১০ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আইন অনুষদের ডিন মো. আবদুল কুদ্দুস মিয়াকে সভাপতি ও রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. নূরউদ্দিন আহমেদকে সদস্য সচিব করে ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া কম্পিউটার চুরির ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী নিরাপত্তা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত ২০ জুলাই কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার খোলা হয়। তখন সেখানে কম্পিউটার গুলো ছিলো। গত রোববার ৯ আগষ্ট কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার খুলে দেখাযায় ৪৯টি কম্পিউটার চুরি হয়েছে। আমরা তখনই সিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করার চেষ্টা করি। কিন্তু ২৭ জুলাইয়ের আগের সব ফুটেজ সিসিটিভি থেকে ডিলিট হয়ে গেছে। প্রতি ১৪ দিন পরপর সিসি টিভির ফুটেজ অটো মুছে যায়।’
তিনি বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে- ২৭ জুলাই ১৪ দিন হওয়ার পর হয়তো সিসিটিভি ফুটেজ মুছে গেছে। তারপরও ২৭ জুলাইয়ের পরের সব ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ জন গার্ডের মধ্যে ২০ জন গার্ড জুলাই মাসের ২৩ তারিখ থেকে কোনো নির্দিষ্ট কারণ না জানিয়েই অনুপস্থিত ছিলেন। তাই নিরাপত্তা নিয়ে কিছুটা সমস্যা ছিলো। জুলাই মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত সবকিছু ঠিক ছিলো। ২০ থেকে ২৭ তারিখের মধ্যবর্তী সময়ে এই চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোরচক্র হয়তো পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। যে কারণে সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া যাচ্ছে না। তারপরও আমরা ওই ফুটেজ মেমোরি থেকে উদ্ধার করার চেষ্টা করছি। এটি উদ্ধার করতে পারলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা সম্ভব হতে পারে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও তদন্ত দলের সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মো. নূরউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ঈদের ছুটি শেষে রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পরে কম্পিউটার চুরির বিষয়টি সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ অবগত হয়। এ ঘটনায় মামলা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনার তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা এটি তদন্ত করে দেখবো।’
গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, চুরির ঘটনা জানতে পেরে আমরা ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে মামলা দায়ের করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি চুরির ঘটনায় মামলা হয়েছে। কিন্ত চুরির রহস্য উদঘাটন করা হয়নি। এমনকি কেউ গ্রেফতারও হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন ঘটনার পরে অধিকাংশ ফুটেজ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলে তারা অভিযোগ করেন। এ কারণে একটি সংঘবদ্ধ চোর চক্র এ ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে। এ চক্রকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনলে চুরি বন্ধ হতে পারে বলে জানান তারা।
খুলনা গেজেট / এমএম