ল্যাব, শ্রেণীকক্ষ ও পর্যাপ্ত শিক্ষকসংকটসহ ৯ দফা দাবিতে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ক্লাস পরীক্ষা বর্জন ও সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
২য় দিনের মত আজও আন্দোলন চলছে। শিক্ষার্থীরা বলছে, দাবিদাওয়া পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
দাবিগুলো হলো, ফার্মেসী কাউন্সিল অব বাংলাদেশ এর শর্তানুযায়ী ২২ জন শিক্ষকের বিপরীতে বিভাগে আছে মাত্র ১৩ জন শিক্ষক, যার মধ্যে ৮ জন শিক্ষা ছুটিতে। যতদ্রুত সম্ভব বিভাগে বাকি শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া, ফার্মেসি কাউন্সিলের নিষেধাজ্ঞায় উল্লেখিত কমপক্ষে ৪ টি শ্রেনীকক্ষের ব্যবস্থা করা, ৬টি নতুন ল্যাবের ব্যবস্থা করা, পুরোনো ল্যাব দ্রুত সময়ে সংস্করণ, ল্যাবের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও রাসায়নিক সরবরাহ করা যা বিগত ১ দশকেও প্রদান করা হয়নি। এনিমেল হাউজের জন্য জায়গায় বরাদ্দ ও অর্থ বরাদ্দ। ল্যাবের জন্য এটেন্ডেন্ট নিয়োগ। ফার্মা গার্ডেনের জায়গা বরাদ্দ (ওষুধি বাগান)।২০১৬ সালের বিভাগের যন্ত্রপাতি কেনার জন্য বরাদ্দকৃত ৩৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার অমিমাংসিত টেন্ডারের সমাধান করা।
জানা যায়, ফার্মেসী কাউন্সিল অব বাংলাদেশ কর্তৃক নির্ধারিত শর্ত না মানায় গত ৩১ শে জুলাই দেশের ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয়কে ফার্মেসি বিভাগের অনার্স কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ফার্মেসি কাউন্সিল অব বাংলাদেশ। যেখানে বশেমুরবিপ্রবির ফার্মেসী বিভাগ ও ছিল। শর্তগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো – শিক্ষক সংকট কাটানো, পাঁচটি ল্যাবরেটরি স্থাপন, প্রয়োজনীয় রাসায়নকি সামগ্রী পর্যাপ্ত পরিমাণে রাখা রাখা, সমৃদ্ধ লাইব্রেরি তৈরিসহ প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করতে হবে।ফার্মেসী কাউন্সিল কর্তৃক ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেধে দেয়।এসব নির্দেশ অমান্যকারী কোনো বিশ্ববিদ্যালয় যদি ফার্মেসি অনার্স কোর্সে (বি.ফার্স) শিক্ষার্থী ভর্তি করে তাহলে সেসব শিক্ষার্থীর রেজিষ্ট্রেশন দেবে না কাউন্সিল। এমনকি শিক্ষার্থী পাস করার পর ‘পেশাগত সনদ দেওয়া হবে না’ বলেও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে সংস্থাটি।
তবে, বশেমুরবিপ্রবির ফার্মেসী বিভাগে কোন অগ্রগতি দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগের সভাপতি ড. মোহাম্মদ আলি খান বলেন, অনির্দিষ্টকালের জন্য বিভাগ বন্ধ হয়ে গেল, এটা আসলে খুবই দুঃখজনক। করোনার জন্য যে সেশনজট হয়েছিল, আমরা সেই সেশনজট নিরশনের জন্য সেভাবে ক্লাস পরীক্ষা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। যাতে সেশনজট কমে আসে। গত ৩১ জুলাই ফার্মেসী কাউন্সিল একটি চিঠির মাধ্যমে আমাকে জানায় তারা রেজিষ্ট্রেশন স্থগিত করছে এবং ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ফ্যাসিলিটি বাড়াতে বলে। চেয়ারম্যান হিসেবে বলতে চায়, আমরা ২০১২ সাল থেকে সংকট নিরসনের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তৎকালীন প্রশাসন আমাদের সাহায্য করলেও পরবর্তীতে আমাদের চাহিদানুযায়ী কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় আজকের এই সংকট তৈরি হয়েছে। ফার্মেসী কাউন্সিল থেকে চিঠি আসার পরপরই আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে অবহিত করেছি, আমি নিজে উপাচার্য মহাদয়কে এ বিষয়ে জানিয়েছি, তিনি আমাকে আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু দুঃখজনক ভাবে আশ্বাসের দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি হয়নি। আমি আশা করব, এই সমস্যা দ্রুত কাটিয়ে আমার শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরবে।
এ বিষয়ে রেজিষ্ট্রার মোঃ দলিলুর রহমান বলেন, প্রশাসন এ ব্যাপারে অবগত আছে, প্রশাসন পদক্ষেপ নিচ্ছে।
খুলনা গেজেট/এনএম