খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  অ্যান্টিগা টেস্ট: শেষ দিনে বাংলাদেশের দরকার ২২৫ রান, হাতে ৩ উইকেট
বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে

বর্তমান ও ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনার কথা বললেন কেসিসি মেয়র

নিজস্ব প্রতিবেদক 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক স্বাস্থ্যকর শহর গড়ে তুলতে বিশ্বের ৫টি শহরকে মনোনীত করা হয়েছে যার মধ্যে খুলনা একটি। ‘হেলদি সিটি’ প্রকল্পের মাধ্যমে খুলনাকে একটি আধুনিক, স্মার্ট, সবুজ, স্বাস্থ্যকর শহরে পরিণত করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।

বুধবার (১০ মে) দুপুরে নগর ভবনের শহীদ আলতাফ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। খুলনা মহানগীর সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রম নগরবাসীকে অবহিত করার লক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।

দ্বিতীয় মেয়াদের বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে তিনি বর্তমান ও ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনা তুলে ধরেন।

সিটি মেয়র বলেন, নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ১২ জুন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং মেয়র পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। আসন্ন নির্বাচনের পূর্বে বিগত ৫ বছরে আমাদের কর্মকান্ডের সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরেন।

আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করতে কেসিসি আরও কিছু কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। সেগুলো হলো :

১) সিটি রিজিয়ন ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প-২ (সিআরডিপি-২)-এর আওতায় শলুয়া ল্যান্ডফিলে কম্পোষ্ট সার, ব্যায়োগ্যাস থেকে বিদ্যুৎ এবং ডিজেল উৎপাদন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।

২) পরিবেশ অধিদপ্তরের সহায়তায় মাথাভাঙ্গা ল্যান্ডফিলে বর্জ্য থেকে কম্পোষ্ট সার ও পলিথিন থেকে ডিজেল উৎপাদন প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে প্রায় ৯০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া লবনচরা খালপাড় উন্নয়ন কাজ সমাপ্তির পথে এবং সোলার পার্কের উন্নয়ন সম্পন্ন হয়েছে।

৩) বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে সাংহাই এস.ইউ.এস. এনভায়রনমেন্ট কোম্পানী লিমিটেড ও গার্ডিয়ান নেটওয়ার্ক কর্তৃক দাখিলকৃত প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য প্রক্রিয়াধীন আছে।

৪) খুলনা সিটি কর্পোরেশনের রাজবাঁধ ট্রেন্সিং গ্রাউন্ড-০২ এ আধুনিক মানব বর্জ্য ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করা হয়। ঠিকাদারের মাধ্যমে ভ্যাকুট্যাগ দ্বারা মানব বর্জ্য অপসারণ ও ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে মানব বর্জ্য থেকে ব্রিকেটস তৈরী করা হচ্ছে যা বাজারজাতকরণের জন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে পরীক্ষামূলকভাবে কাজ করার অনুমতি প্রদান করা হয়েছে।

তিনি খুলনা শহর উন্নয়নে কেসিসির ভবিষ্যত পরিকল্পনা তুলে ধরেন। পরিকল্পনাগুলো হলো :

১। জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ নগরীর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও মাটির নিচের পানি সংরক্ষণে প্রাকৃতিক নদী, খাল ও জলাশয় সংরক্ষণ করা হবে।
২। নগরবাসীর চিত্তবিনোদন ও পরিবেশ রক্ষায় পার্ক এবং উম্মুক্ত স্থানে খেলার মাঠ নির্মাণ।
৩। নগরীতে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রতিটি ওয়ার্ডে ১টি করে সেকেন্ডারী ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) নির্মাণ। আশার কথা হচ্ছে ইতিমধ্যে কেসিসি ও কুয়েট কর্তৃক গৃহীত এসসিআইপি প্লাস্টিক প্রকল্পের মাধ্যমে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় একটি মাস্টারপ্লান প্রণয়নের কাজ চলমান আছে।
৪। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে পেশাগত দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রমসহ শিক্ষা, পুষ্টি ও ব্যবসা সহায়তা এবং স্যানিটেশন ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রম ভবিষ্যতেও চলমান রাখা।
৫। নগরীর প্রাণকেন্দ্রে সিটি সেন্টার, ওয়ার্ড অফিস কাম কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ, কলেজিয়েট স্কুল, বাজার নির্মাণসহ কেসিসি’র বিভিন্ন স্থাপনার ছাদে ও পুকুরে সোলার প্যানেল স্থাপন।
৬। দূষিত পানি রিসাইকিং-এর মাধ্যমে পুনব্যবহার ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বৃষ্টির পানির ব্যবহার বৃদ্ধিতে নগরভিত্তিক টেকসই পানিচক্র প্রকল্প বাস্তবায়ন।
৭। এডিবি’র অর্থায়নে নগরীর সকল স্টেকহোল্ডারদের সমন্বয়ে একটি সিটি ডেভেলপমেন্ট প্লান প্রস্তুত করা হবে। ফলে নগরীর সকল উন্নয়নমূলক কাজ সমন্বের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
৮। কোরিয়ান সরকারের আর্থিক সহায়তায় খুলনা স্মার্ট সিটি ব্যাসিক প্লান প্রস্তুত করা হবে যা স্মার্ট শহর বিনির্মাণে ভূমকা রাখবে।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সিটি কর্পোরেশনের সেবামূলক কাজের মধ্যে অন্যতম একটি কাজ যা সরাসরি জনস্বাস্থ্যের সাথে সম্পৃক্ত। বর্জ্য ব্যাবস্থাপনাকে আধুনিকায়ন ও প্রযুক্তি নির্ভর করার জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ৩৯৩ কোটি ৪০ লক্ষ টাকার ‘‘কেসিসি’র বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন’’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছেন এবং ইতোমধ্যে এ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১৩৮ কোটি টাকা ছাড় দেয়া হয়েছে। ছাড়কৃত অর্থ দ্বারা প্রয়োজনীয় ভূমি অধিগ্রহণ ও সেকেন্ডারী ট্রান্সফার স্টেশনের (এসটিএস) নির্মাণ কাজ চলমান আছে। এছাড়া প্রাথমিকভাবে কিছু আধুনিক যন্ত্রপাতি যেমন, রোড সুইপিং মেশিন, লংবুম স্কেভেটর, ১০ চাকার গার্বেজ ট্রাক, পে-লোডার ক্রয় করা হয়েছে। কম্পাক্টর ট্রাক ও ভাসমান এস্কেভেটর ক্রয়ের জন্য কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। যা দ্বারা শহরের ময়লা দ্রুত অপসারণ ও ময়ূর নদীর পানির প্রবাহ ঠিক রাখার জন্য ভাসমান এস্কেভেটর কাজে লাগানো হবে।

এছাড়া বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে সময়োপযোগী করার লক্ষ্যে দায়িত্ব গ্রহণের পর, দিনে ৮ ঘন্টার পরিবর্তে ২ শিফটে ২১ ঘন্টায় উন্নীত করা, দিনের পরিবর্তে রাতে রাস্তা ঝাড়ুর ব্যবস্থা করাসহ ওয়ার্ড পর্যায়ের বিভিন্ন এসটিএস হতে ট্রাক দ্বারা বর্জ্য রাজবাঁধ ট্রেন্সিং গ্রাউন্ডে অপসারণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলনা কলেজিয়েট গার্লস স্কুল ও কেসিসি উইমেন্স কলেজ, খালিশপুর কলেজিয়েট গার্লস স্কুল, ইসলামাবাদ কলেজিয়েট গার্লস স্কুল (ইংরেজি মাধ্যম), নয়াবাটী হাজী শরিয়তউল্লাহ বিদ্যাপীঠ, কেশব চন্দ্র সাংস্কৃতিক কলেজসহ ৫৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় মহানগরীর শিক্ষা বিস্তারে, বিশেষ করে নারী শিক্ষা বিস্তারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। ভারত সরকারের সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত খালিশপুর কলেজিয়েট গার্লস স্কুল’কে একটি আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তোলার চেষ্টা চলমান আছে।

কেসিসি মেয়র খালেক বলেন, ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার সাথে সাথে এমনকি মেয়র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বেই প্রধানমন্ত্রী খুলনা মহানগরীর উন্নয়নে প্রায় ১৫০০ কোটি টাকার ২টি প্রকল্পের অনুমোদন দেন। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের গুরুত্বপূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা উন্নয়ন ও পুনর্বাসন প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া হয় ৬০৭ কোটি ৫৬ লাখ ৭ হাজার টাকা। মহানগরীর ৫৭১টি সড়ক উন্নয়নের জন্য এ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ইতোমধ্যে ৪১৮টি সড়কের উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হয়েছে, চলমান আছে ১১৪টি এবং টেন্ডারের জন্য অপেমান আছে ৩৯টি সড়ক।

আর ‘‘খুলনা শহরের জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন’’ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮২৩ কোটি ৯৭ লাখ ৬ হাজার টাকা। মহানগরীর ২০৬টি ড্রেন উন্নয়নের জন্য এ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয় যার মধ্যে ৫২টির কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে এবং চলমান আছে ৮৫টি ড্রেনের কাজ। টেন্ডারের জন্য অপেমান আছে ৭২টি।

এছাড়া ২০১৮-১৯ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় থোক বরাদ্দ হিসেবে পাওয়া যায় ৪৯ কোটি ৮২ ল টাকা। উক্ত টাকায় ইতোমধ্যে ৬৪৭টি প্রকল্পের উন্নয়ন করা হয়েছে এবং অপোয় আছে আরো ১২৪টি প্রকল্প।

বাংলাদেশ সরকার, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) ও কমনওয়েলথ এন্ড ডেভেলপমেন্ট (ডিএফআইডি)’র অর্থায়ন ও কারিগরি সহযোগিতায় খুলনা সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন’’ প্রকল্পের আওতায় বিগত ৫ বছরে ৩৭ কোটি ৭৪ লক্ষ ৭২ হাজার টাকা ব্যয়ে ৪০ হাজার ৫৮৭টি পরিবারের জীবনমান উন্নয়নে স্বস্থ্য ও পুষ্টি, শিক্ষা ও ক্ষুদ্র ব্যবসা পরিচালনায় সহায়তা প্রদানসহ দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এছাড়া নিম্নআয়ের বসতি এলাকায় ৪৯.১৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের (৮ ফুটের কম প্রশস্তের) প্রায় ১ হাজার ৩০০টি সড়কসহ ড্রেন ও ১২টি কমিউনিটি ল্যাট্রিন এবং ১ হাজার ৫০৪টি পারিবারিক ল্যাট্রিন নির্মাণ করা হয়েছে।

ব্রাক-আরবান ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের আওতায় জলবায়ু উদ্বাস্তুদের মধ্য থেকে ৬৮টি পরিবারের জন্য আবাসন ব্যবস্থাসহ শহিদ হাদিস পার্কে আধুনিক পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে।

জার্মান কোঅপারেশনের (জিআইজেড) অর্থায়নে ১১৪টি জলবায়ু উদ্বাস্তু পরিবারের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে ৬৪৩ টি ছাগল বিতরণসহ ছাগল পালনের অবকাঠামোগত সুবিধাও প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকার ও জার্মান সরকারের (কেএফডব্লিউ) যৌথ অর্থায়নে ‘‘জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতি মোকাবেলায় খুলনা শহরের উন্নয়ন (ফেজ-২)’’ শীর্ষক ৪৯১ কোটি ২৮ লক্ষ ৬১ হাজার টাকার একটি প্রকল্প চলতি ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে একনেক সভায় অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় নগরীর দৌলতপুর ও মহেশ্বরপাশায় শহর রক্ষা বাঁধ; রূপসায় রিভার ফ্রন্ট পার্ক; দেয়ানা চৌধুরী খাল খনন ও পাড় বাধাইসহ নবীনগর, বাস্তুহারা ও সোনাডাঙ্গা এলাকার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ড্রেন উন্নয়ন, আলুতলা স্লুইচ গেট আধুনিকায়ন, নিরালা খাল খনন, পাড় বাধাই ও উভয় পার্শ্বে ওয়াকওয়ে নির্মাণসহ নগরীর জনগুরুত্বপূর্ণ ২৩টি পুকুরের উন্নয়ন করা হবে।

এছাড়া নেদারল্যান্ডস সরকারের সহযোগিতায় ‘‘ওয়াটার এজ লেভারেজ, ন্যাচারাল ড্রেনেজ সলুশন ফর খুলনা সিটি’’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় জলাবদ্ধতা নিরসনে ময়ূর, খুদে ও শোলমারী নদীসহ সংযুক্ত খালসমূহ সংরক্ষণ, স্লুইচ গেট ও পাম্প হাউজ নির্মাণের লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা যাচাই; জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) অর্থায়নে নগর বনায়ন কর্মসূচি; ইউএস-এইড এর অর্থায়নে ‘‘এশিয়া রিজিলিয়েন্ট সিটিস’’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় টেকসই নগর উন্নয়নে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, যাতায়াত ইত্যাদি খাতে অর্থায়ন এবং জার্মান সরকারের অর্থায়নে বেসরকারি সংস্থা কারিতাস-এর মাধ্যমে নগরীতে ‘‘স্ট্রেনদেনিং রিজিলাইন্ট লাইফ এন্ড লাইভলিহুড ফর কাইমেট মাইগ্রেন্টস ইন আরবান স্লামস অব কেসিসি’’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় লিংক রোড নির্মাণ, পানির উৎস মেরামত, স্যানিটেশন ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং জলবায়ু উদ্বাস্তুরের আবাসন সংস্কারসহ বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও ব্যবহারের কার্যক্রম চলমান আছে।

তিনি বলেন, বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ সংক্রমণের কারণে সমগ্র বিশ্বের ন্যায় দেশের সকল কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে যা প্রায় ৩ বছর স্থায়ী ছিল। সে কারণে ইচ্ছা থাকা স্বত্বেও যথাসময়ে বিশাল এ কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। ফলে নগরবাসীকে হয়তো কিছুটা কিছু দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। অনিচ্ছাকৃত এবং অনাকাঙ্খিত এ বিলম্বের জন্য আপনাদের মাধ্যমে নগরবাসীর নিকট দু:খ প্রকাশ করছি। তবে চলমান উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত হলে খুলনা আধুনিক সুযোগ সুবিধা সংবলিত একটি স্বাস্থ্যকর নগরীতে পরিণত হবে ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, খুলনা আমাদের প্রিয় নগরী। ম্যানগ্রোভ খ্যাত সুন্দরবনসহ মোংলা সমুদ্র বন্দর ও ইপিজেড এবং ভোমরা ও বেনাপোল স্থল বন্দর পরিবেষ্টিত এ বিভাগীয় শহরের গুরুত্ব এখন অনেক। সর্বোপরী পদ্মা সেতু এ অঞ্চলের গুরুত্ব অনেকখানি বাড়িয়ে দিয়েছে। এ সকল বিষয়কে সামনে রেখে পরিকল্পিত উন্নয়ন করা সম্ভব হলে এই অঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটবে।

সিটি মেয়র আরও বলেন, এক সময়ের শিল্প নগরী খ্যাত খুলনার উন্নয়নই আমার মূল লক্ষ্য। এ লক্ষ্য পূরণে ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নগরবাসীর নিরঙ্কুশ সমর্থনে আমি মেয়র নির্বাচিত হই। সে সময়েও প্রধানমন্ত্রী খুলনার উন্নয়নে ইতিহাসের সর্বোচ্চ অর্থ বরাদ্দ দেন। কিন্তু ২০১৩ সালের নির্বাচনে আমি মেয়র নির্বাচিত না হওয়ায় নগরবাসী সেই অর্থের সুফল পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়। এবারও চলমান উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে প্রধানমন্ত্রী পুণরায় আমাকে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য মনোনয়ন প্রদান করেছেন। বিদ্যমান প্রকল্পের পাশাপাশি আরো ১৫০০ কোটি টাকার একটি উন্নয়ন প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। চলমান কাজের সুষ্ঠু ও সুন্দর সমাপ্তিসহ প্রেরণকৃত প্রকল্পটির অনুমোদন সাপেে সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য আসন্ন মেয়র নির্বাচনে নগরবাসীর সার্বিক সহযোগিতা ও সমর্থন আশা করছি।

তিনি বলেন, পৌরকর পরিশোধের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও নগরবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে ২০০৮-২০১৩ মেয়াদে ব্যাংকের মাধ্যমে পৌরকর পরিশোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করি এবং চলতি মেয়াদে তা সময়ের প্রয়োজনে অনলাইনে পরিশোধের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বর্তমানে আমাদের ওয়েবসাইট থেকে বাংলাদেশে প্রচলিত সকল ধরণের অনলাইন পেমেন্টের মাধ্যমে হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করা যাচ্ছে। অচিরেই ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ ও নবায়নসহ জনসম্পৃক্ত অন্যান্য বিষয়গুলিও অনলাইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলমান আছে। মোবাইল ফোন থেকে সকল লেনদেন করার সুবিধার্থে একটি অ্যাপস তৈরীর কাজও চলমান আছে।

সিটি মেয়র বলেন, খুলনা শহরের সৌন্দর্য বর্ধণের জন্য নগরীর গুরুত্বপুর্ণ ২২ টি মোড় চিহ্নিত করা হয়েছে, যার কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। শহরের মধ্যে সকল জলাধার/পুকুরকে সংরক্ষণের জন্য প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে এবং চলতি অর্থবছরেই এর কাজ শুরু হবে। হাইটেক পার্কের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। পার্কটি উম্মুক্ত হলে দক্ষ জনশক্তি গড়ে ওঠার পাশাপাশি বেকার সমস্যারও সমাধান হবে। নগরবাসীর মাঝে স্বাস্থ্যকর মাংস সরবরাহের লক্ষ্যে একটি আধুনিক কসাইখানা নির্মাণের জন্য রাজবাঁধে ইতোমধ্যে জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক ৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে কসাইখানাটি নির্মাণের লক্ষ্যে শীঘ্রই টেন্ডার আহবান করা হবে।

খুলনা গেজেট/এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!