অবশেষে সুন্দরবনের দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত সেই বন কর্মকর্তাকে বদলী করা হয়েছে। প্রধান বন সংরক্ষক আমির হোসেন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক আদেশে পূর্ব-সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক জয়নাল আবেদীনের এ বদলীর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
বন-বিভাগ সূত্র জানায়, প্রধান বন সংরক্ষক স্বাক্ষরিত ৭০৬ নং স্মারকের এক অফিস আদেশে জয়নালকে আগামী সাত কর্ম দিবসের মধ্যে (নবাগত) সহকারী বন-সংরক্ষক (এসিএফ) ৩৮বিসিএস (বন-ক্যাড়ার) সামছুল আরিফিনের নিকট দ্বায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে বলা হয়েছে। অপরদিকে, জয়নালের বদলীর খবর সুন্দরবন-সংলগ্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে নির্যাতিত পেশাজীবিসহ সাধারণ মানুষের মাঝে অনেকটা স্বস্তি ফিরে এসেছে।
স্থানীয় পেশাজীবিদের কয়েকজন বলেন, জয়নাল আবেদীন ২০১৮ সালে নন-ক্যাড়ার (এসিএফ) হিসেবে সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জে যোগদান করেন। তার কয়েক মাস পর থেকে বন সংলগ্ন সোনাতলা, বকুলতলা, শরণখোলা, বগী, তেরাবেকা, চালিতা বুনিয়া, গাবতলা সহ বিভিন্ন এলাকার বন্যপ্রানী এবং বনজ সম্পদ পাচারকারী চক্রের সদস্যদের সাথে গোপনে গভীর সখ্যতা গড়ে তুলে নানা অপকর্মে জড়িয়ে অর্থ-বানিজ্যে মেতে ওঠেন। যার ফলে তার সময়ে ব্যাপকভাবে বাঘ, হরিণসহ বিভিন্ন বন্য প্রাণী নিধনের পাশাপাশি বিশ প্রয়োগে সুন্দরবনের নিষিদ্ধ এলাকায় অবাধে মাছ শিকারের মহোৎসব শুরু হয়।
শরনখোলা বাজারের মৎস্য ব্যবসায়ী এস এম মাহাবুব সেলু, পলাশ মাহমুদ ও ফেরদৌস হোসেন সহ কয়েক জন বলেন, (এসিএফ) জয়নালের দ্বায়িত্বকালে আমরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়েছি। তিনি অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অংকের অনৈতিক সুবিধা নিয়ে তাদেরকে বনের নিষিদ্ধ এলাকায়ও মাছ ধরার সুযোগ দিয়েছেন। আর আমরা বৈধভাবে নদী ও সমুদ্র হতে মাছ আহরণ করতে গেলেও অনেক সময় অনুমতি পাইনি।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা হাসানুজ্জামান পারভেজ বলেন, সুন্দরবনের ইতিহাসে শরণখোলা রেঞ্জে জয়নাল আবেদীনের মতো এতো বড় দুর্নীতি পরায়ণ কর্মকর্তা আর কেউ আসেনি।
এদিকে জয়নাল আবেদীন বদলীর বিষয়টি স্বীকার করলেও তার বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ কাল্পনিক বলে দাবি তার। পূর্ব সুন্দরবণ বন-বিভাগের (ডিএফও) মুহম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন-সংরক্ষক (এসিএফ) হিসেবে (নবাগত) সামছুল আরিফিনকে পাঠানো হয়েছে এবং জয়নাল আবেদীনকে বাগেরহাট জেলা অফিসে পদায়ন করা হবে।
খুলনা গেজেট/ এস আই