বন্ধ রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্প। সে কারণে ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে কৃষিজমির পানি সরবরাহও বন্ধ। ফলে চলতি আমন মৌসুমে জমিতে সেচ দেওয়া নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন প্রায় এক লাখ কৃষক।
কর্তৃপক্ষ বলছে, এই প্রকল্পের পাম্প নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বন্ধ রয়েছে পানি সরবরাহ। জিকে সেচ প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, এই প্রকল্পের আওতায় কুষ্টিয়া অঞ্চলের কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও চুয়াডাঙ্গা জেলায় এক লাখ ৯৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সেচ কার্যক্রম চলে। ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে হরিণাকুণ্ডু ও শৈলকূপা অঞ্চলে রয়েছে প্রায় ২০ হাজার হেক্টর কৃষিজমি। এ দুই উপজেলায় প্রায় দুই লাখ কৃষক ধান চাষ করেন। হরিণাকুণ্ডু উপজেলায় ১০ হাজার হেক্টরের উপরে কৃষিজমিতে চাষাবাদ করেন প্রায় এক লাখ কৃষক। কর্তৃপক্ষের মতে, পদ্মার পানির ওপর এই সেচ প্রকল্পটি নির্ভর করে।
জানা গেছে, চলতি মাসের ২০ জুলাই পর্যন্ত পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে রয়েছে ২৪ হাজার কিউসেক পানি। যদিও এ দুই উপজেলায় ২০ হাজার কৃষিজমিতে সেচ দিতে প্রয়োজন মাত্র এক থেকে দুই হাজার কিউসেক পানি। পদ্মায় পর্যাপ্ত পানি জমা থাকলেও শুধু পাম্প নষ্ট থাকার অজুহাতে বন্ধ রয়েছে এই সেচ প্রকল্পের পানি সরবরাহ। এতে চলতি আমন মৌসুমে উপজেলার ১০ হাজার হেক্টর ধানের জমিতে সেচ দেওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা।
তাহেরহুদা গ্রামের কৃষক আব্দুর রউফ জানান, প্রতি বছর জিকে প্রকল্পের পানি দিয়ে নামমাত্র খরচে এসব জমিতে সেচ দিয়ে ধানের আবাদ করেছেন। এবার কর্তৃপক্ষ তাদের পাম্প নষ্ট থাকার কথা বলে পানি দিচ্ছে না। পরে স্থানীয় শ্যালোচালিত পাম্প মালিকদের কাছ থেকে ১০ গুণ বেশি দামে জমিতে সেচের পানি দিয়েছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাফিজ হাসান বলেন, উপজেলায় ১০ হাজারেরও বেশি জমিতে এবার আমন চাষ হচ্ছে। তবে সময়মতো জিকে প্রকল্পের পানি না পাওয়ায় কৃষকরা একটু সমস্যায় পড়েছেন। আমি ইতোমধ্যে প্রকল্পের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। আশা করছি, অল্প ক’য়েক দিনের মধ্যেই পানি সরবরাহ শুরু হবে।
ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপপ্রধান সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালিব বলেন, পানি সরবরাহের জন্য এই প্রকল্পে আমাদের তিনটি পাম্পের মধ্যে দুটি নষ্ট। সচল একমাত্র পাম্প দিয়ে কুষ্টিয়া অঞ্চলে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে এই অঞ্চলের কৃষকরা সেচ থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। নষ্ট দুটি পাম্প সচলের জন্য চেষ্টা চলছে। জিকে সেচ প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান বলেন, নষ্ট পাম্প দ্রুত মেরামতের চেষ্টা চলছে।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি