দেশে চালের বাজার দরের ঊর্ধ্বগতি রোধ ও আমদানি নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার চলতি বছরে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়। এতে গত ২৫ আগস্ট ৪০০ জন আমদানি কারককে সাড়ে ১৬ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির অনুমতি দেয়। এর মধ্যে ১৪ লাখ ৫৩ হাজার মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল ও এক লাখ ৯৭ হাজার মেট্রিক টন আতব চাল। মোটা চাল প্রতি মেট্রিক টন ৩৭০ থেকে ৩৮০ ডলার এবং চিকন চাল প্রতি মেট্রিক টন ৪২৫ থেকে ৪৭০ ডলার মূল্যে আমদানি হচ্ছে।
তবে শর্ত ছিল ৩০ অক্টোবরের মধ্যে এসব চাল ভারত থেকে আমদানি শেষ করতে হবে। চুক্তি অনুযায়ী শনিবার ছিল শেষ দিন। ৩১ অক্টোবর থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ব্যবসায়ীরা চাল আমদানি করতে পারবেন না।
এদিকে এমন নির্দেশনায় শেষ দিনে শনিবার বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি সম্পূর্ণ করতে ব্যস্ত সময় পার করে আমদানিকারকরা। তবে এখনো প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতে অনেক চালের ট্রাক সিরিয়ালে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়, দেশে প্রতিবছর চালের চাহিদা রয়েছে ২ কোটি ৩১ লাখ ৮২ হাজার মেট্রিক টন। আর দেশে চাল উৎপাদন হয় বছরে গড়ে সাড়ে তিন কোটি মেট্রিক টন। চাল উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় অবস্থানে। সূত্র মতে ২০১৯ সালে দেশে চাল উৎপাদন হয় ৩ কোটি ৬৫ লাখ মেট্রিক টন। ২০২০ সালে ৩ কোটি ৭৪ লাখ মেট্রিক টন এবং ২০২১ সালে ৩ কোটি ৭৮ লাখ মেট্রিক টন। তবে বৈরী আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক দূর্যোগে মাঝে মধ্যে দেশে চাল আমদানির প্রয়োজন হয়। কিন্তু কিছু আমদানি কারক সারা বছর চাল আমদানি করে। এতে ভরা মৌসুমে চাল আমদানির কারণে চাষিরা নায্য মূল্য না পেয়ে আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়। এতে সরকার চাষিদের বাঁচাতে চাহিদা মতো চাল আমদানিতে আমদানিকারকদের তালিকা ও চাল আমদানির পরিমাণ নির্ধারনের সিদ্ধান্ত নেয়।
চাল আমদানিকারক ময়াজ্জেন হোসেন লিপু জানান, সরকারি চুক্তি অনুযায়ী ৩০ অক্টোবর চাল আমদানির সময় শেষ হচ্ছে। ৩১ অক্টোবর থেকে আর আমদানি করা যাবে না। তবে এখনো প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতে চালের ট্রাক সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
চাল আমদানিকারক আব্দুস সামাদ জানান, বেনাপোল বন্দর থেকে আমদানিকৃত মোটা চাল প্রতি কেজি ৪০ টাকা এবং চিকন চাল ৫২ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করা হচ্ছে। বন্দর থেকে ব্যবসায়ীরা চাল কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন।
বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (টাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, খাদ্য মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ব্যবসায়ীরা চাল আমদানি করতে পারবেন। পরবর্তী নির্দেশ না এলে ৩১ অক্টোবর থেকে কোনো চালের ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করবে না। ওপারে এখন কয়েকজন ব্যবসায়ীর চালের ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে বলে জানতে পেরেছেন।
খুলনা গেজেট/ এস আই