দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধির প্রতিবাদে ৭ জানুয়ারি সারা দেশে থানা পর্যায়ে মানববন্ধন এবং আগামী ১০ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবিতে পৌরসভা এবং মহানগরে মানববন্ধন। শনিবার অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নেওয়া এই কর্মসূচির সিদ্ধান্ত আজ রোববার সকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি। চালের দাম বেড়েছে, ডালের দাম বেড়েছে, তেলের দাম বেড়েছে, শাক-সবজির দাম বেড়েছে। এটা এখন সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। এ কারণে দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামী ৭ জানুয়ারি সারা দেশে থানা পর্যায়ে মানববন্ধন করবে বিএনপি।’
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘আমরা এও মনে করি, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দায়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত। এই দাবিটিও আমাদের কর্মসূচিতে থাকবে।’
পৌরসভা নির্বাচনের ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পৌর নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের যে ব্যর্থতা, তাদের যে উদাসীনতা, তাদের যে দুর্নীতি এবং পুরোপুরিভাবে বলা যেতে পারে একটা পক্ষপাতিত্বের নির্বাচন করার যে উদ্দেশ্য, সেগুলোর বিরুদ্ধে আমরা বারবার বক্তব্য রেখে আসছি। এই নির্বাচন কমিশন তারা ব্যালট বলুন আর ইভিএম বলুন কোনোটাতেই সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করার যোগ্য নয়। আমরা মনে করি, এই কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করতে পুরোপুরিভাবে ব্যর্থ হয়েছে। অবিলম্বে সব কমিশনারের পদত্যাগ করা উচিত একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্যে। নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে আগামী ১০ জানুয়ারি পৌরসভা ও মহানগরীতে মানববন্ধন করবে বিএনপি।’
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘চালের দাম কমছে না, বেড়েই চলেছে। যেটা আশঙ্কাজনক এবার চালের উৎপাদন কম হয়েছে। যার ফলে মূল্য বৃদ্ধির আশঙ্কা আছে। সরকার যখন ২০০৮ সালে নির্বাচন করে তখন জনগণের কাছে অনেক সুন্দর সুন্দর কথা বলেছিল। তারা বলেছিল ১০ টাকা কেজি চাল দেবে, বিনা পয়সায় সার দেবে এবং ঘরে ঘরে চাকরি দেবে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘গতকাল পত্রিকায় বেরিয়েছে, ১০ টাকা কেজি চালের সাত লাখ কার্ড ভুয়া। এটা সরকারের খাদ্য অধিদপ্তর বলছে। তাহলে বুঝতে পারেন যে, এটা নিয়ে কী ধরনের দুর্নীতি চলছে। ১০ টাকা কেজি চাল কিনে তা ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হচ্ছে বাজারে। সেটা সরকারি দলের মদদপুষ্ট লোকেরা করছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন ভাতা ও বিভিন্ন খাদ্য সাহায্য ওএমএস, কাবিখা, টিআর-এর দুর্নীতি চরমভাবে চলছে। এখানে পুরোটাই দলীয়করণ করা হয়েছে।’
শনিবার বিকেলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা গেজেট/এনএম