বছরজুড়ে ডেঙ্গুর ব্যাপক প্রকোপ ছিলো খুলনায়। দেড় হাজার আক্রান্ত ও ১৭ মৃত্যু নিয়ে বছর পার করলো খুলনা। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে শুরু করে বেসরকারি হাসপাতালেও চলেছে চিকিৎসা। স্যালাইনসহ ওষুধ সামগ্রীর তিব্র সংকটের মধ্যদিয়ে সেবা নিয়ে বছরজুড়ে ছিলো রোগী অসন্তোষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া যায়, সাধারণত বর্ষার শেষে ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হলেও এবার পুরো বছর জুড়েই ডেঙ্গুর প্রকোপ ছিলো। চলতি বছরের ১৭ আগষ্ট পর্যন্ত খুলনায় মাত্র ১৮৩ জন এবং মৃত্যু হয়েছিলো ৪ জন। আগষ্ট এর পর থেকেই মুলত ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হয়। পরের চার মাসে খুলনায় প্রায় ১২শ রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়। ৩১ ডিসেম্বর পাওয়া তথ্য মতে খুলনায় এ বছর মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার তিনশ ৩৩জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৮ জন রোগী।
স্যালাইন সংকট ছিলো প্রকট: খুলনায় ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত চাহিদায় ফার্মেসিগুলোয় আইভি স্যালাইনের (শিরায় দেওয়া) সংকট ছিলো আগষ্টও সেপ্টম্বর মাসে। ঐ সময় সরকারী হাসপাতালগুলোতে স্যালাইনের সাপ্লাইও ছিলো খুবই কম। ফলে বাড়তি দাম দিয়ে বাইরে থেকে স্যালাইন কিনতে হয়েছে রোগীদের। ৮৭ টাকার স্যালাইন ২০০-২৫০ টাকায় পর্যৗল্প বিক্রি হয়েছে।
১৪ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে ৩ হাজার লিটার স্যালাইন আসলেও চিকিৎসাধীন থাকা বিপুল সংখ্যক রোগীর তুলনায় তা খুবই সামান্য ছিলো। মশক নিধনে তেম কোন ভুমিকা দেখাতে পারেনি খুলনা সিটি কর্পোারেশন। ফলে খুলনা মহানগরীর দোলখোলা এবং রায়পাড়া এলাকাকে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুর হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। দুটি এলাকাসহ খুলনা সিটি করপোরেশনের অন্যান্য জনবহুল স্থানে জনসচেতনতায় কয়েকদিন মাইকিং করলেও ফগার মেশিন বা অন্যান্য মাধ্যমে মশক নিধনে তেমন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি।
এদিকে জুলাই আন্দোলনের পর পর সিটি কর্পোরেশন এর মেয়র ও নগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও কাউন্সিলরদের প্রায় সবাই পালিয়ে গেলে নাগরিক সেবায় অভিভাবকশুন্য হয়ে পড়ে খুলনা। চারিদিকে ময়লার ভাগার এবং জলাবদ্ধতা তৈরী হওয়ায় ডেঙ্গু চলে যায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে ফলে অন্যান্য বছরের তুলনায় সারা বছরই খুলনাবাসীকে ভুগিয়েছে এডিস মশা।
খুলনা গেজেট/ টিএ/এমএম