খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৩৪
  যাত্রাবাড়িতে ব্যাটারিচালিত অটো রিকশাচালকদের সড়ক অবরোধ, সংঘর্ষে দুই পুলিশ আহত

বঙ্গবন্ধু ছিলেন প্রকৃত এক অসাম্প্রদায়িক মানুষ : স্মারক বক্তৃতায় অধ্যাপক আবুল কাশেম  

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন প্রকৃত অসাম্প্রদায়িক মানুষ। তাঁর  উর্ধতন অষ্টম পুরুষ এদেশে ইরাক হতে ধর্ম প্রচারের জন্য এসেছিলেন। ধর্ম প্রচারক ওই মহাত্মা ছিলেন সুফী সাধক। ইসলাম ধর্ম প্রচার করলেও তিনি অন্য ধর্মের অনুসারীদের খাটো বা অবজ্ঞা করেননি। সুফী সাধকদের দর্শণও তাই, তাঁরা স্থানীয় সকল রীতি-নীতি-অভ্যাসের সাথে সমন্বয় করে সমাজকে এগিয়ে নিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর মধ্যেও এই গুণটি ছিল। তিনি ধর্মের দিক দিয়ে ইসলামের অনুসারী, একজন মুসলিম, জাতিগতভাবে বাঙালি, তেমনি একজন মানবিক মানুষ। অন্য ধর্মের মানুষের প্রতিও তিনি ছিলেন সহানুভূতিশীল। তাঁর রাজনৈতিক জীবনের প্রতিটি বাঁকে এর প্রতিফলন ঘটেছে।

‘বঙ্গবন্ধুর রাজনীতিতে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিকাশ’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। বৃহষ্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে খুলনা শিল্পকলা একাডেমির সেমিনার কক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘প্রতিনিধি’ ছিল এর আয়োজক। সংগঠনের চার দশক পূর্তি উপলক্ষে বছরব্যাপী অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে বিদ্যুত সরকার স্মারক বক্তৃতা-৩ আয়োজিত হয়।

সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন কবির ববির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন স্মারক বক্তৃতা উপ-কমিটির আহবায়ক শিক্ষক-লেখক আবুল ফজল। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির।

স্মারক বক্তৃতায় অধ্যাপক আবুল কাশেম আরো বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান গ্রহণকালে দেওয়া ভাষণে ধর্মনিরপেক্ষতার ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি সকল ধর্ম ও ধর্মানুসারীদের সুরক্ষার বিষয়টি উল্লেখ করেন। প্রকৃতই তিনি একজন অসাম্প্রদায়িক মানুষ। কেউ কেউ বলে থাকেন, ভারতের চাপে তিনি ধর্মনিরপেক্ষতা সংবিধানে সন্নিবেশিত করেছিলেন; তারা জানে না, বা ইচ্ছা করেই অস্বীকার করে যে, আমাদের সংবিধান গৃহীত হয়েছে ১৯৭২ সালে, আর ভারতের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা সংযোজিত হয়েছে ১৯৭৭ সালে।

স্মারক বক্তা তাঁর বক্তৃতায় বলেন, বঙ্গবন্ধুর মধ্যে ছোটবেলা থেকেই নেতৃত্ব দেওয়ার গুণ ছিল। স্কুল জীবন থেকেই যা প্রকাশিত হয়েছিল। কলেজ জীবনে তিনিতো দায়িত্বশীল ছাত্রনেতা। মুসলিম ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন, কিন্তু ছিলেন উদারপন্থী সোহরাওয়ার্দী-হাশিম গ্রুপে। কলকাতার দাঙ্গায় তিনি ছবি বিশ^াসসহ অনেক পরিবারকে ঝুঁকি নিয়ে রক্ষা করেছিলেন। পাকিস্তান পর্বে দাঙ্গা বিরোধী শক্ত অবস্থান ছিল। আওয়ামী মুসলিম লীগ হতে আওয়ামী লীগে উত্তরণে তাঁর ছিল যথার্থ সময়োচিত পদক্ষেপ। বাংলাদেশকেও তিনি চেয়েছিলেন অসাম্প্রদায়িক মানবিক বাংলাদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে। পাকিস্তান থেকে ফেরার পথে হিথ্রো বিমানবন্দরে যে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন, সেখানেও তিনি অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার আকাক্সক্ষা ব্যক্ত করেছিলেন। তার প্রতিফলন দেখি, বাংলাদেশের সংবিধানে। তিনি ইসলামিক ফাউ-েশন যেমন গড়েছেন, তেমনি ইজতেমার জন্য জমি দিয়েছেন, আবার অন্যান্য ধর্মের অনুসারীরা যাতে স্বাধীনভাবে তাদের ধর্ম পালন করতে পারে তারও সাংবিধানিক সুরক্ষা দিয়েছেন।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!