কিছুদিন পরেই দুয়ারে কড়া নাড়ছে অমর একুশে বইমেলা। বইমেলাকে ঘিরে সাহিত্য অনুরাগীদের মনে জন্ম নেয় বাড়তি উন্মাদনা। অমর একুশে বইমেলা ২০২১ উপলক্ষে আসছে তরুণ কবি জুবায়েদ মোস্তফার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ আলো-আঁধারের সন্ধিক্ষণ। কাব্য গ্রন্থটি প্রকৃতি, দেশ প্রেম, ভালোবাসা এবং বাস্তবতার আঙ্গিকে সাজানো।
কবি তার প্রত্যেকটি কবিতায় নতুনত্ব দিয়েছেন। গভীর বিচক্ষণতার সাথে মনের মাধুরী মিশিয়ে, ভাবনার সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে লেখার চেষ্টা করেছেন। প্রত্যেকটি কবিতায় বাস্তবতার ছোঁয়া যোগ করেছে নতুন মাত্রা। একটি কবিতা পাঠ করলে পরবর্তী কবিতা পাঠ করার জন্য পাঠকের মনে তৈরি হবে বাড়তি উন্মাদনা।
জুবায়েদ মোস্তফা গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির পর থেকেই তিনি নিয়মিতভাবে সাহিত্য সাধনায় মনোনিবেশ করেন। দিন দিন তিনি নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার জন্য নিরলস ভাবে সাহিত্য চর্চায় আত্মনিয়োগ করেছেন।
কবি রসস্বাদন বিহীন প্রণয়, চাকরি এখন সোনার হরিণ, অবেলায় উপলব্ধি করবে, কবিতা লিখে যথাক্রমে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার কমিউনিটি অফ বাংলাদেশ, কবিতা, কবি ও কবিতা গ্রুপ কর্তৃক আয়োজিত প্রতিযোগিতায় সেরা কবির সম্মাননা সনদ এবং পুরস্কার অর্জন করেন।
এছাড়া অল্পকিছুদিন পেরোতে না পেরোতেই তার সুনাম দেশের গন্ডি পেরিয়ে কলকাতায় পৌঁছে যায়। সম্প্রতি তিনি কলকাতা মহানগরী সাহিত্য পরিষদ থেকে ভোরের পাখি ও বাংলার প্রকৃতি কবিতার জন্য সেরা কবির পুরস্কার অর্জন করেছেন।
আলো-আঁধারের সন্ধিক্ষণ বইটি সম্পর্কে কবি জুবায়েদ মোস্তফার বলেন, “বইমেলায় বই প্রকাশ হওয়া প্রত্যেক কবিরই স্বপ্ন থাকে। আমি আমার কাব্য গ্রন্থটি সুচারুরূপে সাজানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি কাব্য গ্রন্থটি পড়লে পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। একটা কবিতা পড়লে পরবর্তী কবিতা পড়ার জন্য যেন আবেগ জন্মায় সেভাবে লেখার চেষ্টা করেছি। পাঠকদের কাছে সমাদর পেলেই আমার সার্থকতা।”
কাব্যগ্রন্থ আলো-আঁধারের সন্ধিক্ষণে মোট ৩৫ টি কবিতা আছে। সেখান থেকে বাবা ও অভিমান কবিতার অংশবিশেষ পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলঃ
বাবরের ন্যায় পিতৃস্নেহে অনিদ্রায় যাপন করেছেন কত রাত
আমার মঙ্গলের জন্য বিধাতার পানে তুলেছেন ইস্পাতের ন্যায় দুটি হাত।
সর্বদা খুঁজে পেয়েছি আপনার কাছে শীতল আশ্রয়
বট বৃক্ষের ন্যায় ছাঁয়াও পেয়েছি সুখে দুঃখে নিশ্চয়।
সন্তানের তরে অকাতরে বিলিয়ে দিয়েছেন আপনার কোমল মন
অগোচরে তার মিলেছে দেখা, মাধবীলতার স্নেহের ক্ষণ।
বাবা সত্য প্রতিষ্ঠায় সর্বদা অটল, বজ্রের ন্যায় কঠিন
প্রয়োজনের তাগিদে করেছেন কঠোর ভাবে আমায় শাসন।
(“বাবা” কবিতা থেকে চয়ন করা)
আবার তর্জন গর্জন করে সাহসী প্রেমিকের ন্যায় হবে আমার প্রত্যাবর্তন,
সেবার না হয় ভাঙ্গিয়ে নেবো, আমার প্রতি জমে থাকা তোমার বিন্দু বিন্দু রাগ অভিমান।
আমি বাধ্যগত প্রেমিকের মতো দেব তোমার শাড়ির আঁচল ঠিক করে,
তুমিও আগলে নিও আমাকে তোমার শাড়ির আঁচলে মুড়ে।
দিগন্তের সীমানা ছাড়িয়ে মিশে যাবো নীলিমায়,
সীমান্তের সমস্ত কাঁটাতার ভেদ করে অজস্র প্রহরীর চোঁখ ফাঁকি দিয়ে হারাবো দূর অজানায়।
বহু চড়াই উতরাই শেষে ক্লান্ত বেশে হয়তো আমায় খুঁজে পাবে ভালবাসার কাব্য কিংবা কবিতায়।
(“অভিমান” কবিতা থেকে চয়ন করা)
বইঃ আলো আঁধারের সন্ধিক্ষণ
লেখকঃ জুবায়েদ মোস্তফা
ধরনঃ কাব্যগ্রন্থ
প্রকাশনীঃ বিসর্গ
প্রচ্ছদঃ পরাগ ওয়াহিদ
প্রকাশকালঃ অমর একুশে বইমেলা ২০২১।